শিলিগুড়ি: ‘হুমকি-প্রথা’য় (থ্রেট কালচার) নাম জড়ানো ডাক্তার এবং ডাক্তারি পড়ুয়াদের একাংশ ফের সক্রিয় হচ্ছেন কলেজ চত্বরে—এমনই অভিযোগে বৃহস্পতিবার তেতে উঠল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য-প্রশাসনে প্রভাবশালী চিকিৎসক গোষ্ঠী ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র ঘনিষ্ঠেরা কলেজে সক্রিয় হতে চাইছেন বলে অভিযোগ এবং প্রতিবাদের জেরে দিনভর উত্তেজনা থাকল ক্যাম্পাসে।
মেডিক্যাল কলেজের রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্য তথা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব জানান, ঘটনা শুনে তাঁকে ফোন করেছিলেন রাজ্য ‘প্রোগ্রেসিভ হেল্থ অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভানেত্রী শশী পাঁজা। মেয়র বলেন, ‘‘শশী পাঁজা ফোন করেছিলেন। এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত। তা বরদাস্ত করা হবে না। ছাত্রদের মধ্যে সমস্যা থাকে। তা নিয়ে কলেজের পরিবেশ নষ্ট করা ঠিক নয়।’’
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার। লেকচার থিয়েটারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির খেলা দেখা নিয়ে এক ছাত্রকে শো-কজ় করায় সে দিন ঘেরাও করা হয় মেডিক্যাল কলেজের ডিন (স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্স) অনুপম নাথ গুপ্তকে। পড়ুয়াদের একাংশ তাঁর গাড়ির সামনে বসে পড়েন এবং পড়ুয়াদের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। সে ঘটনার সুবাদে এ দিন ‘হুমকি-প্রথা’য় নাম জড়ানো এক চিকিৎসকের গোষ্ঠী ফের সক্রিয় হতে সচেষ্ট হয়েছে অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়াদের একাংশ। পাল্টা বিক্ষোভ দেখায় অন্য পক্ষও।
সুপার সঞ্জয় মল্লিকের দফতরে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়ে বুধবারের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের তরফে শাহাদাত ইসলাম বলেন, ‘‘ছোট বিষয়কে কেন্দ্র করে কলেজের পরিবেশ নষ্ট, অশান্তির চেষ্টা করছে হুমকি-প্রথায় নাম জড়ানো এক চিকিৎসকের গোষ্ঠীর ওই পড়ুয়ারা।’’ অভিযোগ উড়িয়ে অন্য পক্ষের তরফে রণিত সাঁই বলেন, ‘‘ডিন যে ভাবে আমাদের সঙ্গে ব্যবহার করেছেন, তাঁকে ঘেরাও থেকে বার করতে অন্য পক্ষের কয়েক জন এসে মেয়েদের যে ভাবে মারধর করেছে তাতে আমরা ব্যথিত। তাই তাঁর পদত্যাগ চাইছি।’’
কলেজে না গেলেও ডিন এ দিন মাটিগাড়া থানায় যান। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ জানাতে নয়, অসুস্থ এক পুলিশ আধিকারিকের খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম।’’ তবে ছাত্রদের অভিযোগ নিয়ে তিনি মন্তব্য করেননি। সুপার বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ ছুটিতে। সোমবার ফিরলে, তাঁর সঙ্গে কথা বলব।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)