মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের আগে যুব-তৃণমূল দ্বন্দ্ব থামাতে তৎপর দল।
খোদ দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী কোচবিহারে এসে দলের দুই গোষ্ঠীর প্রধান সারির নেতাদের নিয়ে দফায় দফায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। দুই পক্ষকেই এই ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। তাতেও অবশ্য দাঁড়ি পড়েনি দুই পক্ষের সম্পর্কে। বৃহস্পতিবার জেলায় সুব্রতবাবুর উপস্থিতিতেই দিনহাটার কালমাটিতে যুব-তৃণমূল সংঘর্ষ হয়। তাতে এক যুব তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ ওঠে। আগামী ১০ জুলাই জেলার চ্যাংড়াবান্ধায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগে এমন ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। সুব্রতবাবু বার বার কোচবিহারে এসে সতর্ক করার পরেও কেন পরিস্থতিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরেই।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “কিছু লোক নিজের স্বার্থে নানা জায়গায় গণ্ডগোল তৈরির চেষ্টা করছে। যুব-তৃণমূল বা অন্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। এই লোকদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা করলেই সমস্যা কিছু থাকবে না।” যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিশীথ প্রামাণিক বলেন, “কিছু লোক উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করে যুব ও তৃণমূলের নাম দিচ্ছে। আমরা যুব সংগঠন দলকে শক্তিশালী করতেই সবসময় কাজ করছি।”
গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়কাল থেকে কোচবিহার যুব-তৃণমূল সংঘর্ষে বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তৃণমূল কর্মী খুনের অভিযোগ পর্য়ন্ত দায়ের হয়েছে। গুলি-বোমা চলেছে। নির্বাচনের পরেও একইরকম ভাবে তেতে রয়েছে গোটা এলাকা। দিন কয়েক আগে দেওয়ানহাটে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ ওঠে যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই অবস্থায়, বৃহস্পতিবার ২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানের সমর্থনে আয়োজিত সভায় যোগ দিতে কোচবিহার পৌঁছন সুব্রতবাবু। তিনি দলীয় স্তরে কোচবিহার জেলার পর্যবেক্ষক। দলীয় সূত্রের খবর, সুব্রতবাবুর কাছে আগে থেকেই জেলার এই দ্বন্দ্ব নিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেন। অভিযোগ পৌঁছয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও।
এই অবস্থায়, সফরের সময় ওই দ্বন্দ্ব যাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অস্বস্তির বিষয় না হয় তা নিয়ে আসরে নামেন সুব্রতবাবু। রবীন্দ্রনাথবাবু মন্ত্রিসভার মিটিংয়ে ওই দিন কলকাতায় ছিলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দলের কোচবিহার জেলা সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ, দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ ওই বৈঠকে ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে আলাদা ভাবে বৈঠক করেন সুব্রতবাবু। যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক নিশীথবাবুকে সভাস্থল থেকে গাড়িতে তুলে হোটেলে নিয়ে গিয়ে আলাদা করে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন সুব্রতবাবু। দুই পক্ষকেই তিনি সতর্ক করে দেন। কেউই অবশ্য ওই বৈঠকের বিষয় নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নয়। দলের এক জেলা নেতার আশঙ্কা, “মুখ্যমন্ত্রীর জন্য হয়তো বচসায় সাময়িক ছেদ পড়বে। মুখ্যমন্ত্রী ফিরলে আবার পরিস্থিতি এক হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy