মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা ও দাদাকে নিয়ে সুকান্ত। ছবি: বিকাশ সাহা
কালিয়াগঞ্জ ও দাড়িভিট কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। এ দিন সকালে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুর পঞ্চায়েতের চাঁদগাঁওয়ে মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের (৩৩) বাড়িতে যান সুকান্ত। পুলিশের গুলিতে মৃত্যুঞ্জয় নিহত হন বলে অভিযোগ। এ দিন মালদহ থেকে মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা রবীন্দ্রনাথ ও দাদা মৃণালকান্তিকে নিয়ে সুকান্ত তাঁদের বাড়িতে যান। মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারের লোকেরা কিছু দিন আগে অভিযোগ করেন, পুলিশ ও তৃণমূল মামলা তুলে নেওয়ার চাপ সৃষ্টির করায়, আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে তাঁরা অন্যত্র রয়েছেন।
সুকান্ত বলেন, ‘‘মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা ও দাদাকে বাড়িতে থাকার ব্যাপারে আমরা আশ্বস্ত করেছি। মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবার যাতে বাড়িতে থাকতে পারে পুলিশ-প্রশাসনকে সে ব্যবস্থা করতে হবে। যদি এর পরে, ওই পরিবারের কিছু হয়, তার দায় পুলিশ-প্রশাসনকে নিতে হবে। কোনও অঘটন ঘটলে, পুলিশ-প্রশাসনকে কী ভাবে শায়েস্তা করতে হয়, আমরা তা দেখাব। প্রয়োজনে, উত্তর দিনাজপুর জেলা অচল করা হবে।’’ মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারের মহিলা সদস্যেরা সকলে মালদহেই রয়েছেন বলে পরিবার সূত্রের দাবি।
রায়গঞ্জ পুলিশ-জেলার অতিরিক্ত সুপার তন্ময় সরকার অবশ্য আগেই দাবি করেছেন, ওই গ্রামে পর্যাপ্ত পুলিশ পিকেট ও নিরাপত্তা রয়েছে।
সুকান্ত এ দিন মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। পরে, মৃত্যুঞ্জয়ের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। পাশাপাশি, কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য বিষ্ণু বর্মণের বাড়িতেও যান সুকান্ত। কালিয়াগঞ্জ থানায় হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত এই বিষ্ণুকে গ্রেফতার করতে গিয়ে ২৬ এপ্রিল রাতে পুলিশ তাঁর ‘খুড়তুতো’ ভাই মৃত্যুঞ্জয়কে গুলি করে খুন করে বলে অভিযোগ। এ দিন সুকান্ত মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে দাঁড়িয়ে বলেন, “মৃত্যুঞ্জয়কে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে। মানুষ সঠিক জায়গায়, সঠিক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উত্তর দেবেন।”
ইসলামপুরের দাড়িভিটে এ দিন দুপুরে যান বিজেপি সাংসদ। দাড়িভিটে পাঁচ বছর আগে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাপস বর্মণ ও রাজেশ সরকারের মৃত্যুর এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিন কয়েক আগে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। এ দিন সুকান্ত তাপসের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তার পরে, তিনি দলেঞ্চা নদীর ধারে তাপস ও রাজেশের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান। বিকেলে ওই এলাকায় একটি প্রতিবাদসভায় যোগ দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। সেখানেও তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধে দাবি করেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ তাপস ও রাজেশকে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে। আদালত উপযুক্ত নির্দেশ দিয়েছে। চোরেদের মতো খুনিরাও ধরা পড়বে।”
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, “মৃত্যু ও মৃতদেহ নিয়ে বিজেপি রাজ্য জুড়ে তৃণমূল ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচারের রাজনীতি করছে। উন্নয়ন ও সম্প্রীতির স্বার্থে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলার মানুষ সুকান্তবাবুদের যোগ্য জবাব দেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy