চাহিদা: আড় মাছ নিয়ে যাচ্ছেন এক ব্যবসায়ী। নিজস্ব চিত্র
ছুটির দিনের স্পেশাল মেনু হোক বা অনুষ্ঠান বাড়িতে অতিথি আপ্যায়ন—আড় মাছের কদর বাড়ছে। আড় কালিয়া, ঝাল, তেল ঝাল, সর্ষে, দম, টোম্যাটো আড়ের মতো নানা রেসিপিতে সাজানো মেনুর রসনাতৃপ্তির টান মৎস্যপ্রেমীদের অনেকেই এড়াতে পারেন না। তাই শীতের মরসুম শুরু হতে না হতেই বাজারে গিয়ে আড়ের খোঁজ করছেন অনেকে। রবিবার কোচবিহারের ভবানীগঞ্জ, তুফানগঞ্জ, দিনহাটা সহ একাধিক বাজারেও ছিল ওই ছবি। কিন্তু জোগান কম বলে দাম বেড়েছে। তাতেও ভাল বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র কোচবিহার শহরের ভবানীগঞ্জ বাজারে দৈনিক গড়ে প্রায় দুই কুইন্টাল আড় মাছের চাহিদা রয়েছে। বিয়ে, বৌভাত, মুখে ভাতের মতো নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের দিনগুলিতে ওই চাহিদা বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়ে যায়। কিন্তু বাজারে চাহিদা মতো জোগান নেই। মাছ ব্যবসায়ী নুর ইসলাম বলেন, “মূলত বিহারের আড় মাছের ওপরেই এখানকার ব্যবসায়ীরা নির্ভরশীল। যা প্রয়োজন সেই তুলনায় মাছের আমদানি নেই। ভিন রাজ্যে উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে ওই মাছের চাহিদা বেড়ে যাওয়াতে এমন সমস্যা হচ্ছে।’’ উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ী সংগঠন ফোসিনের সদস্য রাণা গোস্বামী বলেন, “আমি নিজেও এ দিন আড় নিয়েছি। ভাল কাতলা, পাবদা, রুই, বড় কাতলা মাছের সঙ্গে দামের ফারাকও খুব বেশি নয়।”
ক্রেতাদের একাংশ জানিয়েছেন, গত বছরেও কোচবিহারের বিভিন্ন বাজারে মাঝারি আকারের দু’আড়াই কেজি ওজনের আড় মাছ ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ বার সেটাও দাঁড়িয়েছে ৫০০ টাকায়। বড় আকারের মাছের দাম আরও বেশি। ৬০০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ দিন ভবানীগঞ্জ বাজারে ১০ কেজির বড় আড় মাছ ওঠে। সেটি অবশ্য কেটে বিক্রি হয় ৮০০ টাকা কেজি দরে। এক আইনজীবী আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “আড় মাছ বাড়িতে অনুষ্ঠানের মেনুতে আমারও পছন্দ। ছোট, বড় সবাই খেতে পারে।” তিনি জানান, কালজানির আড় মাছের স্বাদের খ্যাতি রয়েছে। কিন্তু এখন তা বেশি মেলে না।
যদিও মৎস্য দফতর সূত্রের দাবি, পুকুর, বিলে আড়ের উৎপাদন বাড়াতে চাষের প্রবণতা কম। জেলা মৎস্য আধিকারিক অলোকনাথ প্রহরাজ বলেন, “আড় অন্য মাছের পোনা তো বটেই নিজের চারাপোনাও খেয়ে নেয়। জল না সেচে ওই মাছ ধরাও কঠিন। এ সব কারণেই ওই মাছ চাষে উৎসাহ তেমন নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy