Advertisement
E-Paper

অন্তর্বর্তী মজুরি ঘোষণায় ক্ষোভ

যৌথমঞ্চের দাবি এটা ‘কালা প্রস্তাব’, ‘কালা নির্দেশ’। খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে সরকারই রেশন দিচ্ছে। রেশনের সেই টাকা মজুরির সঙ্গে যোগ করা এবং ন্যুনতম মজুরি নির্ধারণের জন্য এ দিন বারবার দাবি জানান তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪০
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

ন্যূনতম মজুরি নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হল না। বরং অন্তর্বর্তীকালীন পরিস্থিতিতে চা শ্রমিকদের মজুরি ১৩২.৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকা করা হল। শুক্রবার উত্তরকন্যায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পর শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক এই ঘোষণা করার পরেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ।

যৌথমঞ্চের দাবি এটা ‘কালা প্রস্তাব’, ‘কালা নির্দেশ’। খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে সরকারই রেশন দিচ্ছে। রেশনের সেই টাকা মজুরির সঙ্গে যোগ করা এবং ন্যুনতম মজুরি নির্ধারণের জন্য এ দিন বারবার দাবি জানান তাঁরা। ২৪ জানুয়ারির মধ্যে তা ঠিক না হলে গোটা উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিকদের নিয়ে উত্তরকন্যা অভিযান করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ দিনের প্রস্তাবের বিরোধিতায় ২৯ জানুয়ারি তরাই ডুয়ার্স-সহ সমস্ত বাগানে কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখাবেন শ্রমিকরা।

শ্রমমন্ত্রী বলেন, ‘‘ন্যূনতম মজুরি ঠিক না-হওয়ায় মালিকদের অন্তর্বর্তী পরিস্থিতিতে মজুরি বাড়াতে বলা হয়। তারা ১০ টাকা বাড়ানোর পক্ষে ছিল। সরকারের তরফে বলা হয়েছে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তা ১৫০ টাকা করতে হবে। ১ জানুয়ারি থেকে ওই হারে মজুরি দিতে হবে।’’ তিনি জানান, যখন ন্যূনতম মজুরি চূড়ান্ত হবে তখন বকেযা পাওনা শ্রমিকরা পাবেন। রেশনের টাকাও যোগ হবে। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘যে সমস্ত শ্রমিক সংগঠন এটা মানতে চাইছে না তাদের জমানায় মজুরি দেড় টাকা, দুই টাকা বাড়ত। কখনই চার টাকার বেশি বাড়েনি। ন্যূনতম মজুরিও হয়নি।’’ মালিকপক্ষের তরফে অবশ্য মন্ত্রীর প্রস্তাবের বিষয়টি ভেবে দেখতে সাতদিন সময় চাওয়া হয়েছে।

শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চের সম্পাদক জিয়ায়ুল আলম বলেন, ‘‘আজ যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তা কালা নির্দেশ। আমরা তা চাইনি। এটা শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী। চা শিল্প বিরোধী। এটা তরাই, ডুয়ার্সের চা বাগানগুলোকে বিধ্বস্ত করবে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে মালিকদের খুশি করতে চাইছে সরকার।’’ যৌথ মঞ্চের মণিকুমার ডারনাল, অলক চক্রবর্তীরাও জানান, শ্রমিকদের রেশনের টাকা মালিকেরা ছিনিয়ে নিয়েছে। সরকারও সেই অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন পরিস্থিতিতে ১৭.৫০ টাকা মজুরি বাড়ানো হচ্ছে। সরকার ন্যুনতম মজুরির দাবিও গুরুত্বহীন করে দিতে চাইছে।

শ্রমিক সংগঠনের মধ্যেও অবশ্য সরকারি ঘোষণা নিয়ে বিভাজন তৈরি হয়েছে। চা বাগান তৃণমূল মজদুর ইউনিয়ন, তরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সম্পাদক আর এ শর্মা বলেন, ‘‘আমরা ১০ টাকা বাড়ানোর জন্য বলেছিলাম। মন্ত্রী একটা প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা সাত দিন সময় চেয়েছি।’’

যৌথ মঞ্চের নেতাদের একাংশ জানান, বাগানগুলো থেকে শ্রমিকেরা কেরল, তামিলনাড়ু, কর্নাটকে চলে যাচ্ছে। সেখানে চা, কফি বাগানে ৩৩২ টাকা মজুরি মিলছে। সরকারের অধিকার, ক্ষমতা রয়েছে। তার পরেও ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করতে যত দেরি করে ততই উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের ভবিষ্যত অন্ধকারের দিকে এগোবে।

আগামী ৪ জানুয়ারি ওয়েজ কমিটির এবং ১১ জানুয়ারি ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছে।

ন্যূনতম মজুরি Minimum Wage Tea Garden Labourer চা শ্রমিক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy