Advertisement
E-Paper

‘নির্মল’ মালদহেও রোজ মাঠে যান বহু বাসিন্দা

গাজোল ১ পঞ্চায়েতের দক্ষিণ কলেজপাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ বালা। তিনি জানান, এখনও মাঠেই প্রাতঃকৃত্য সারেন তাঁরা। দু’বছর আগে পঞ্চায়েত থেকে বলা হয়েছিল যে আট হাজার টাকার শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৪
অপব্যবহার: শৌচালয়ের দেওয়ালে ঘুঁটে। নিজস্ব চিত্র

অপব্যবহার: শৌচালয়ের দেওয়ালে ঘুঁটে। নিজস্ব চিত্র

মাস সাতেক আগের কথা। নিত্য দিনের মতো ভোরের আলো ফোটার আগে ঘটি হাতে মাঠের দিকে পা বাড়িয়েছিলেন বছর ষাটের মঙ্গলি মুর্মু। হঠাৎ পিছন থেকে পঞ্চায়েতের কয়েকজন এসে মাঠে যেতে বারণ করে বাড়িতে শৌচাগার তৈরির পরামর্শ দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েতের লোকজন চলে গেলে অবশ্য মাঠেই গিয়েছিলেন তিনি। সোমবার দুপুরে বাড়ির দাওয়ায় বসে মঙ্গলিদেবী বলছিলেন, ‘‘সে দিন বাবুরা বলেছিল, পাকা শৌচাগার তৈরি করে নাও, পঞ্চায়েত থেকে টাকা পেয়ে যাবে।’’

সেই ভরসায় ছেলে সোম সরেন বেসরকারি সংস্থা থেকে চার হাজার টাকা ঋণ নিয়ে বাড়িতে শৌচাগার তৈরির কাজও শুরু করেছিল। কিন্তু ভিটে পর্যন্ত ওঠে, আর হয়নি। ফলে এখনও ভরসা সেই মাঠ। তাঁর খেদ, ‘‘এই কয়েকমাসে ছেলে বেশ কয়েকবার পঞ্চায়েতে গিয়েওছিল, কিন্তু টাকা মেলেনি।’’ এই ছবিটা শুধু মঙ্গলি মুর্মুর ঘরেই নয়, গাজোল ২ পঞ্চায়েতের রানিপুর গ্রামের একাধিক পরিবারেই।

গাজোল ১ পঞ্চায়েতের দক্ষিণ কলেজপাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ বালা। তিনি জানান, এখনও মাঠেই প্রাতঃকৃত্য সারেন তাঁরা। দু’বছর আগে পঞ্চায়েত থেকে বলা হয়েছিল যে আট হাজার টাকার শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হবে। এ জন্য ন’শো টাকা করে দিতে হবে। পঞ্চায়েতে টাকা জমা করা হলেও একটি ইটও গাঁথা হয়নি। পাশের একাধিক বাড়িতেও শৌচাগার নেই। ভরসা খোলা মাঠ।

যদিও খাতায়কলমে এই পঞ্চায়েতই শুধু নয়, গোটা গাজোল ব্লকই অনেকদিন আগে নির্মল হয়ে গিয়েছে। আজ মঙ্গলবার, হাইস্কুল মাঠে ঘটা করে অনুষ্ঠান করে মালদহ জেলাকে নির্মল জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়েরও থাকার কথা।

অন্ধকার থাকতেই মহানন্দা নদীর পাড়ে ছোটেন ইংরেজবাজার শহরের মহানন্দা তীরবর্তী এলাকাগুলির মেয়ে-বউরাও। শৌচকর্ম করে মহানন্দার জলে গা ভিজিয়ে বাড়ির পথ ধরেন। তারপরেই ছোটেন বাড়ির পুরুষরা। রোজই এই দৃশ্য নজরে আসে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ডের মোট ৩ হাজার ৮৭৮টি বাড়িতে শৌচাগার নেই। এছাড়া মহানন্দা নদীর ধারে উত্তর ও দক্ষিণ বালুরচর, বাঁধ রোড, সদরঘাট, ফুলবাড়ি, চুনিয়া পট্টি, রেল কলোনি সহ একাধিক এলাকাতেই অধিকাংশ বাড়িতে শৌচাগার নেই।

জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম নূর বলেন, “নামেই নির্মল হচ্ছে মালদহ। শহর কিংবা গ্রাম সর্বত্রই বহু বাড়িতে আজও শৌচাগার নির্মাণ হয়নি। উৎসবের নামে শুধু টাকা খরচ হচ্ছে।’’

জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোথাও যদি শৌচাগার তৈরি না হয়ে থাকে, তবে তার কারণ অবশ্যই খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু বেসলাইন সার্ভের সমস্ত শৌচাগার তৈরি হয়েছে। তাই জন্যই জেলা নির্মল হচ্ছে।’’

Toilet Malda শৌচাগার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy