ফের বড় ধরনের চুরির অভিযোগ উঠল মালবাজার শহরে। রবিবার রাতে মালবাজার শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি দোতলা বাড়ির বাড়ির মালিক এবং ভাড়াটে দুই ঘরেই চুরির অভিযোগ ওঠে। গত শনিবার থেকে রবিবার রাত পর্যন্ত দোতলা বাড়িটি একেবারে ফাঁকা ছিল। রবিবার রাতে ভাড়াটে বাড়িতে ফিরতেই চুরির ঘটনা জানতে পারেন। উল্লেখ্য গত শনিবার গভীর রাতে মালবাজারের শিবোহম বালাজি মন্দিরে তালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটে। মন্দিরের তিনটি দানবাক্স ভেঙে টাকা বের করে নেওয়া হয় সেই সঙ্গে তিনটি ভারি পুজোর থালা সহ সোনার জল করা রুপোর বেশ কিছু অলঙ্কারও চুরি যায়। মন্দিরের গোপন ক্যামেরায় দুই দৃষ্কৃতীর কালো কাপড়ে মুখ ঢাকা চেহারাও ধরা পড়ে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে যায় মালবাজার শহরে। উত্তরবঙ্গের প্রখ্যাত এই মন্দিরের চুরির ঘটনায় রবিবার সাড়া পড়ে যায় পুলিশ মহলেও।
ফের রবিবার রাতে শহরের একেবারে ঘন জনবসতি এলাকায় মালিক এবং ভাড়াটে বাড়িতে ফের জোড়া চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় কার্যত ভয়ে সিটিয়ে পড়েন বাসিন্দারা।
রবিবার মালবাজারের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের যে বাড়িতে চুরির ঘটনার অভিযোগ ওঠে সেই বাড়ির মালিক স্বপন মিত্র প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক, স্ত্রী মিতাদেবীকে নিয়ে তিনি দোতলায় থাকেন, নীচের তলায় ১২ বছর ধরে সুমনা মুখোপাধ্যায় ভাড়া থাকেন। তিনি মালবাজারের পুষ্পিকা হিন্দি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তাঁর শ্বশুর বাড়ি শিলিগুড়ির হাকিম পাড়ায়। ফি সপ্তাহে শনিবার স্কুল করে তিনি শিলিগুড়ি চলে যান রবিবার রাত করে ফের মালবাজারে ফিরে আসেন। স্বপন বাবুর মেয়ে এবং মেয়ে জামাই ওড়িশার রৌরকেল্লায় থাকেন। গত ১ অগস্ট স্বপন বাবু সস্ত্রীক রৌরকেল্লায় যান।
এ বারে গত শনিবার দুপুরের পর থেকে শিলিগুড়ি চলে যেতেই বাড়ি কার্যত ফাঁকা হয়ে যায়। এই সুযোগেই শনিবার গভীর রাতে দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢোকে বলে অনুমান। চোরেরা দোতলার গ্রিল ভেঙে ওপর থেকে নিচে নামে বলেও পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে। স্বপনবাবুর এবং ভাড়াটে সুমনা দেবীর ঘরগুলোতে দুষ্কৃতীরা লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। সুমনাদেবীর কথায়, ‘‘শিলিগুড়ির থেকে রাতে বাড়ি ফিরে দরজার তালা ভাঙা দেখতে পাই, ভেতরে ঢুকে দেখি আলমারি বিছানার ওপরে ফেলা, পুরো ঘর তছনছ, পড়শিদের খবর দেওয়ার পর ওপরে গিয়ে স্বপনবাবুর ঘরেও একই চিত্র দেখি।’’
মালবাজার থানার পুলিশও রবিবার রাতেই জোড়া চুরির তদন্ত শুরু করে। সুমনা দেবীর স্বামী নারায়ণ মুখোপাধ্যায়ও রবিবার গভীর রাতে শিলিগুড়ি থেকে মালবাজারে চলে আসেন। স্বপন মিত্রের মালবাজারের আত্মীয়েরাও ঘটনার খবরে চলে আসেন।দুই বাড়ি মিলিয়ে নগদ টাকা এবং সম্পত্তি মিলিয়ে প্রাথমিক ভাবে প্রায় ২ লক্ষ টাকার চুরি হয়েছে বলেও জানা গেছে। সুমনাদেবী জানান, নগদ ৩৫ হাজার টাকা, ৫০ হাজার টাকা মূল্যের সোনার গয়না সহ বেশ কিছু আসবাব নষ্ট হয়েছে। স্বপনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও মালবাজারের বাসিন্দা তার ভাগ্নে সুব্রত ঘোষ বলেন প্রচুর ক্ষতি হয়েছে তা তো বোঝাই যাচ্ছে কিন্তু মামা না আসা পর্যন্ত ক্ষতির সঠিক তথ্য জানা যাচ্ছে না। এ দিকে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সমর দাসও দ্রুত অপরাধীদের ধরার দাবি তোলেন।
প্রথমে মন্দির তারপর এই জোড়া চুরির ঘটনা ঘটায় কার্যত বিপাকে পড়েছে পুলিশ প্রশাসন। দু’টো চুরিই শনিবার গভীর রাতে হয়েছে। শিবোহম বালাজি মন্দিরের গোপন ক্যামেরার ফুটেজে মোট ৩ দুষ্কৃতীকে দেখা গিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। শিবোহম বালাজি মন্দিরের ট্রাস্ট সভাপতি দেবীপ্রসাদ অগ্রবালের কথায় দ্রুত অপরাধী গ্রেফতার না হলে শহর জুড়ে আতঙ্ক থামবে না। মালবাজারের এসডিপিও নিমা নরবু ভুটিয়া বলেন পুলিশ তদন্ত করছে, ‘‘আমরা অপরাধীদের খোঁজে সব রকম চেষ্টা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy