Advertisement
E-Paper

প্রতিবন্ধকতা হারিয়ে মুক্তির স্বাদ

সারা বছর ধরেই চলে শীতকাল আসার অপেক্ষা। বছরে এই একবারই উত্তরবঙ্গের পাহাড়-নদীতে ঘুরতে আসে ওঁরা। ওরা মানে কেশব ঝাঁ, শুভ্রকান্তি মিত্র, রক্ষিত খারকা। তিন জনেই আক্রান্ত সেরিব্রাল পলসিতে। কিন্তু ন্যাফের প্রকৃতি পাঠ শিবিরে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আটকাতে পারেনি প্রতিবন্ধকতা।

সব্যসাচী ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১০
ন্যাফের প্রকৃতি পাঠ শিবিরে আড্ডায় যোগদানকারীরা। — নিজস্ব চিত্র

ন্যাফের প্রকৃতি পাঠ শিবিরে আড্ডায় যোগদানকারীরা। — নিজস্ব চিত্র

সারা বছর ধরেই চলে শীতকাল আসার অপেক্ষা। বছরে এই একবারই উত্তরবঙ্গের পাহাড়-নদীতে ঘুরতে আসে ওঁরা। ওরা মানে কেশব ঝাঁ, শুভ্রকান্তি মিত্র, রক্ষিত খারকা। তিন জনেই আক্রান্ত সেরিব্রাল পলসিতে। কিন্তু ন্যাফের প্রকৃতি পাঠ শিবিরে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আটকাতে পারেনি প্রতিবন্ধকতা। গত তিন বছর ধরেই এই শিবিরে আসছেন তাঁরা। রবিবার থেকে কালিম্পঙের ঝালং-এর কাছে দলগাঁওতে শুরু হওয়া ন্যাফের ২৬তম বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের ক্যাম্পে সাবলীল ভাবে আড্ডায় দেখা গেল ওঁদের। কলকাতার ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সেরিব্রাল পলসির আবাসিক ওই তিন বন্ধু-সহ এ বারের শিবিরে যোগ দিয়েছেন ১২০জন।

এই নিয়ে টানা তিন বার ন্যাফের শিবিরে এল কেশবরা। কেশব ও শুভ্রকান্তি দু’জনেরই পা অসার। হুইলচেয়ারই তাঁদের সঙ্গী। শারীরিক কষ্ট উবে গিয়ে শিবিরে আসার আনন্দ ওঁদের চোখেমুখে। ক্যাম্পে দু’টি দল করা হয়েছে, চিতা ও বাঘ। কেশব ও শুভ্রকান্তি দু’জনেই রয়েছে ‘চিতা’ দলটিতে। রক্ষিত রয়েছে ‘বাঘ’ দলে। ‘চিতা’ না কি ‘বাঘ’ কোন দল বেশি সমীহ আদায় করতে পারে সেই তর্কও জুড়েছে শিবিরের সকলে।

জড়িয়ে যাওয়া উচ্চারণে কেশব বলে, ‘‘বছরের এই কটা দিনের জন্যই সব সময় অপেক্ষা থাকে।’’ রক্ষিতের কথায়, ‘‘দুর্গাপুজোয় বাজি পোড়ানোর থেকেও পাহাড়ে আসতে আমার বেশি ভাল লাগে।’’ একই কথা শুভ্রকান্তিরও।

ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসুর দাবি, সরকারি সাহায্য না নিয়েই সারা দেশে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের নিয়ে টানা ২৬ বছর নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ক্যাম্প করে যাওয়ার আর কোনও নজির নেই। এই ধরনের ক্যাম্পের জন্যেই কেশব, শুভ্র, রক্ষিতরা জীবনকে নতুন করে আবিষ্কার করতে পারছে।

এই শিবিরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নরা ছাড়াও অনাথ শিশু কিশোররাও রয়েছে। ন্যাফের শিবিরের কোয়ার্টার মাস্টারের দায়িত্বে রয়েছেন বর্ধমানের বাসিন্দা রাজীব মণ্ডল। তিনি জানালেন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের শিবির অনেক কিছু শেখায় যা ওদের মুক্তির স্বাদ দেয়। জাতীয় পতাকা তুলে শুরু হল শিবির। শিবিরের নানা পর্যায়ে হুইলচেয়ারে দড়ি বেঁধে ওরা একে একে পাহাড়ি নদী-পথ টপকে যাবে। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে সেও এক মুক্তির স্বাদ।

cerebral palsy travel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy