Advertisement
E-Paper

নতুন প্রতিভা খুঁজে আনতেই আনন্দ

কোচবিহারের সমরেশ নাগের হাত ধরে হকি থেকে কবাডি, অ্যাথলেটিক্সে উঠে এসেছে অনেক নতুন প্রতিভা। তাতেই তৃপ্তি খুঁজে পান মাঠ অন্তঃপ্রাণ স্যর। 

অরিন্দম সাহা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:২৭
ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সমরেশ স্যর। নিজস্ব চিত্র

ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সমরেশ স্যর। নিজস্ব চিত্র

পড়ন্ত বিকেলে কখনও ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে ছুটে যান। কখনও প্রয়োজন বুঝে তাদের জন্য খেলাধুলোর সরঞ্জাম কেনেন নিজের টাকায়। ছাত্র-ছাত্রীদের অনুশীলনে উৎসাহিত করতে মাঠে ঘাম ঝরান নিজেও। তাদের মাঠমুখী করার এমন অমোঘ টান এড়াতে পারেন না। গ্রামীণ স্কুলের মাঠ থেকে শহরের ময়দানেই যেন সময় কাটাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কোচবিহারের সমরেশ নাগের হাত ধরে হকি থেকে কবাডি, অ্যাথলেটিক্সে উঠে এসেছে অনেক নতুন প্রতিভা। তাতেই তৃপ্তি খুঁজে পান মাঠ অন্তঃপ্রাণ স্যর।
কোচবিহার ২ ব্লকের ঢাংঢিংগুড়ি কাচুয়া হাইস্কুলের শরীরশিক্ষার শিক্ষক সমরেশ। আর বছর খানেক বাদে কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার কথা। অবসরের দোড়গোড়ায় এসেও অবশ্য উৎসাহে খামতি নেই এতটুকু। সমরেশ বলছিলেন, “২০০৯-এর কথা, কলকাতায় হকি বিষয়ক কর্মশালায় যোগ দেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তার পরেই হকি চর্চায় উৎসাহ বাড়ানোর কাজ শুরু করি। প্রথমটায় কিছু প্রতিকূলতা ছিল। তবে এই কয়েক বছরের মধ্যে আমাদের স্কুলের ছেলেরা অনেকে জাতীয় স্তরে খেলার সুযোগ পেয়েছে। স্কুলেও নানা পুরস্কার এসেছে। নতুনদের তুলে আনাতেই তো আনন্দ।” তাঁর সংযোজন, পরিবারের সকলে আমার পাশে থাকায় কাজ করাটা সহজ হয়েছে।
ঢাংঢিংগুড়ির ওই হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি সজল রায় নিজেও সমরেশ স্যরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তিনি বলেন, “ওঁর উদ্যোগেই গ্রামে হকি জনপ্রিয় হয়েছে। মাঠের প্রতি সমরেশ স্যরের ভালবাসার কথা সকলে জানেন। গোটা কোচবিহার ২ ব্লকেই হকির নতুন প্রতিভাদের পরিচর্যা মূলত তিনি করেন।” স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ মালাকার বলেন, “ভীষণই মাঠ অন্তঃপ্রাণ উনি। সমরেশবাবুর সহকর্মী হতে পেরে আমি তো গর্ববোধ করি।”
শুধু নিজের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী নয়, অন্য স্কুলের প্রতিভাবানদের তুলে আনতেও তিনি সমান
উদ্যোগী। কোচবিহারের করুণাময়ী হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র রমজানি আলির আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তাঁর কথায়, “ম্যারাথন দৌড়ে একাধিক পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু আর্থিক অবস্থায় খেলাধূলো চালিয়ে যাওয়া সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পুষ্টিকর খাবারের সংস্থান মুশকিল। সমরেশ স্যর সহযোগিতা করছেন। তাই তো খেলা চালিয়ে যাওয়া এখনও সম্ভব হয়েছে।” গোপালপুরের বাসিন্দা এক অভিভাবক মনোরঞ্জন দেব বলেন, “আমার মেয়ে নন্দিতা ওই স্কুলের প্রাক্তনী। সমরেশবাবুর উৎসাহে ওর হকির হাতেখড়ি। কলকাতা, পঞ্জাবেও মেয়ে খেলছে। যাতায়াত থেকে খাওয়ার ব্যবস্থা স্যরই করেন।”
হকি, কাবাডি, আথলেটিক্সের প্রসারে সমরেশবাবু জেলার খেলা জগতে পরিচিত নামের একটি। স্কুল দলকে জুনিয়র নেহরু হকি প্রতিযোগিতায় রাজ্য চ্যাম্পিয়ন করার স্বপ্ন দেখেন তিনি। সমরেশ বলেন, “আগে একবার ওই প্রতিযোগিতায় স্কুলের ছেলেরা রানার্স হয়েছিল। চ্যাম্পিয়ন করাটা আমার স্বপ্ন। এ বারের দল নিয়ে খুব আশাবাদী ছিলাম। করোনা কাঁটায় অনিশ্চয়তা বেড়েছে।”

Sports Coochbehar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy