—প্রতীকী ছবি।
গরুমারাতে সোমবার গভীর রাতে গন্ডার মারার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল যে তিন জনকে, চার বছর আগে তাদেরই ধরা হয়েছিল একই অপরাধে। এই তিন জনের নাম হরেন রায়, গোপীনাথ রায় ও বাবুরাম রাই। ২০১৪ সালে গরুমারাতেই গন্ডার মেরে খড়্গ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে। সে বার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, কুপিয়ে গন্ডার মারার। বন দফতর তারপরে তিন জনকে সংশোধনের সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এই তিন জনই চোরাশিকারিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে মেটেলি থানার গরুমারা উত্তর প্রান্ত ঘেঁষা বেশ কিছু গ্রামে অভিযান চালায় বন দফতর। সেখান থেকেই এই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। বন দফতর সূত্রের খবর, তিন জনেই চার বছর আগে গ্রেফতার হয়। তিন জনেই এখন জামিনে মুক্ত। গোপীনাথকে বন দফতরই একশো দিনের কাজ দিয়েছে। প্রতিদিনই সে জঙ্গলে আগাছা সাফাই থেকে নানা কাজ করতে যায়। সেই সুযোগেই কোন গন্ডার কখন কোথায় থাকে, তার যাবতীয় তথ্য পাওয়া তাদের পক্ষে সহজ হয়েছে বলে বন দফতরের কয়েক জন কর্মীর দাবি। বাবুরাম ও হরেনও বনকর্মীদের সঙ্গে কাজ করত। তাই তারাও নানা খবর রাখে। বন দফতর সূত্রেই অনুমান, চোরাশিকারের চক্র এই তিন জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারপরে গন্ডারটিকে মারা হয়েছে। এক বন কর্তার কথায়, বন্যপ্রাণীর দেহাংশের চাহিদা রয়েছে বিদেশে। গন্ডারের দেহাংশ ব্যবহার নিয়ে কিছু কুসংস্কারও রয়েছে। সেই জন্যই মোটা টাকার লোভ দেখিয়ে এই তিন জন ‘অভিজ্ঞ গন্ডারশিকারিকে’ ব্যবহার করা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পরিবেশপ্রেমী সংস্থা মাউন্টেনার্স ক্লাবের সদস্য অমিত চন্দ বলেন, ‘‘স্থানীয়দের কয়েক জনের মদত ছাড়া খড়্গ কেটে নেওয়া সম্ভব নয়।’’
অন্য দিকে বনবস্তির বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, তিন জনের কেউই প্রকৃত অপরাধী নয়। আসল অভিযুক্তদের নাগাল না পেয়ে মুখরক্ষা করতেই এই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তাঁদের দাবি। গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, ‘‘আমরা তিন জনকে গ্রেফতার করেছি। তদন্ত চলছে। সেই মতো জঙ্গলে আরও তল্লাশিও হবে।’’
গন্ডারটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তার দেহে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে বনকর্মীরা দাবি করলেও ময়নাতদন্তে যে ক্ষত পাওয়া গিয়েছে, তা গুলির নয় বলেই দাবি। গন্ডারটিকে বিষ দিয়ে মারা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে খড়্গ কেটে নেওয়া হয়েছে বলেই প্রাথমিক ভাবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy