এ বার নবম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল কোচবিহারে। মেখলিগঞ্জ থানার ভোটবাড়ি এলাকায় গত ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ওই ঘটনা ঘটে। ২৬ জানুয়ারি রাতে পুলিশে অভিযোগ জানান দুই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা।
তাঁদের অভিযোগ, বাড়ির কিছু জিনিসপত্র কেনাকাটার জন্য তাঁরা কাছেই একটি দোকানে গিয়েছিলেন। সেই সময় প্রতিবেশী তিন যুবক ওই দুই ছাত্রীর পিছু নেয়। কিছুটা দূর গিয়ে অন্ধকারে একটি নির্জন জায়গায় প্রথমে এক কিশোরীর মুখ চেপে ধরে অভিযুক্তদের একজন। সেটা দেখে চিৎকার করার চেষ্টা করে আরেক কিশোরী। সেই সময় তারও মুখ চেপে ধরে অভিযুক্তদের এক সঙ্গী। রাস্তায় লোকজন দেখে অবশ্য মুহূর্তেই তারা পালিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে দু’জনকে চিনতে পেরেছে ছাত্রীরা। তাদের বাড়ি ওই এলাকাতেই। অভিযুক্তদের মধ্যে তৃতীয় জন কে ছিলেন, তার খোঁজ শুরু করা হয়েছে।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।” স্থানীয় বাসিন্দারাও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছেন। মেখলিগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক পরেশ অধিকারী বলেন, “গুরুতর অভিযোগ। ঘটনা ধামাচাপা না দিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে।” ভোটবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা বিজেপির মেখলিগঞ্জ মহকুমার নেতা দধীরাম রায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “আমার গ্রামেই এমন ঘটনা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশও সে ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছে। আশা করছি, দ্রুত তারা গ্রেফতার হবে।” মেখলিগঞ্জের তৃণমূল নেতা লক্ষীকান্ত সরকার বলেন, “পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই ছাত্রী পরিবার খুব গরিব। কৃষিকাজ করে কোনওরকমে সংসার চলে তাঁদের। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন পড়াশোনা করে। বাকি দুই যুবক পড়াশোনার সঙ্গে যুক্ত নয়। গত কালীপুজোর রাতে মাথাভাঙায় দুই নবম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। তাঁদের মধ্যে এক ছাত্রী আত্মহত্যা করে। আরেক কিশোরী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ওই ঘটনার পরে গোটা জেলা জুড়ে হইচই পড়ে যায়। অভিযুক্তদের দুইজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ওই ঘটনার পরে ফের মেখলিগঞ্জে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকেই বলেন, “পুলিশকে কড়া হাতে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ যাতে ফের কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায় তার জন্য অভিযুক্তদের শাস্তি পাওয়া জরুরি বলে তাঁরা জানান।