Advertisement
০৮ মে ২০২৪

লিঙ্ক না থাকায় টিকিট সংরক্ষণ বন্ধ টানা দু’দিন

টিকিট কাটতে গিয়ে অধিকাংশ দিন যাত্রীরা দেখেন, ‘লিঙ্ক’ নেই। ইন্টারনেটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকায় জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমছে না।

জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে বন্ধ কাউন্টার। —নিজস্ব চিত্র।

জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে বন্ধ কাউন্টার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০২:৫১
Share: Save:

টিকিট কাটতে গিয়ে অধিকাংশ দিন যাত্রীরা দেখেন, ‘লিঙ্ক’ নেই। ইন্টারনেটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকায় জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমছে না। এর মধ্যে টানা দু’দিন ধরেও জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে কম্পিউটরের মাধ্যমে আসন সংরক্ষণ বন্ধ থাকে। বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। রেল দফতর থেকে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষকে জানানো সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। কর্মীরা ‘লিঙ্ক ফেলিওর’ বোর্ড টাঙিয়ে বসে ছিলেন। অবশেষে সোমবার দুপুরে লাইন আসে।

জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধে ৬টা ১৯ মিনিটে ইন্টারনেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেই সংযোগ সোমবার দুপুর অবধি চালু হয়নি। বেলা আড়াইটেয় তা চালু হয়। জলপাইগুড়ি স্টেশনের ম্যানেজার নৃপেণচন্দ্র রায় বলেন, “যাত্রীরা এসে আমাদের কাছে অসুবিধার কথা জানাচ্ছেন। আমরাও বিএসএনএল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁরা পদক্ষেপ না করলে আমাদের কিছু করার ছিল না।” বিএসএনএল সূত্রে জানা যায়, শনিবার বাজ পড়ায় শিলিগুড়ির ভক্তিনগর এলাকায় বিএসএনএলের বেশ কিছু লাইন পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের লিঙ্ক কেটে যায়। বিএসএনএলের ট্রান্সমিশন বিভাগের এসডিই জগদীশচন্দ্র রায় বলেন, “কর্মীরা কাজ করছেন। লাইন এবং যন্ত্রাংশ পুড়ে যাওয়ার ফলে লাইন দিতে দেরি হল।”

এই লিঙ্ক না থাকার ফলে যাঁদের টিকিট বাতিল করার ছিল, তাঁরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যাঁদের টিকিট করার ছিল তারাও নাকাল হয়েছেন। জলপাইগুড়ির রাজবাড়িপাড়ার গৃহবধূ সবর্ণা নারায়ণের বাবা ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর বাবাকে নিয়ে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে না গেলেই নয়। সকালে স্টেশনে এসে দেখেন লিঙ্ক নেই। তিনি বলেন, “কনসেশন আছে। স্টেশন থেকে টিকিট কাটলে সুবিধা জেনে এসেছিলাম। সাইবার ক্যাফেতে চার্জ বেশি। স্টেশনে লিঙ্ক নেই। এখন কী করি।” পেশায় আইনজীবী জলপাইগুড়ির হাকিমপাড়ার বাসিন্দা ৭৬ বছরের জয়ন্তকুমার ভৌমিক এই বয়সে এসেছিলেন টিকিট কাটতে। টিকিট না পেয়ে তিনিও হতাশ। একই অবস্থা ষাটোর্ধ্ব সুকমল বসু এবং প্রদীপ ভৌমিকের।

যাত্রী এবং রেলকর্মীদের কয়েক জন জানিয়েছেন, একটি ছোট যন্ত্রাংশ (রাউটার মোডেম) বসালেই এই লিঙ্ক না থাকার সমস্যা মেটে। সেই মোডেমটি রেল দফতর বসাচ্ছে না। এই যন্ত্রাংশটি থাকলে লাইন ঠিক না থাকলেও সরাসরি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে লাইন চালু রাখা যায়। বিহারের অধিকাংশ কম্পিউটরাইজড আসন সংরক্ষণ কেন্দ্রে এই ব্যবস্থা চালু আছে।

জলপাইগুড়ি নিত্যযাত্রী সমিতির সম্পাদক এবং জলপাইগুড়ি স্টেশনের ইউজার্স কমিটির সদস্য গোপাল পোদ্দার বলেন, “জলপাইগুড়ি স্টেশনের এই সমস্যা দীর্ঘ দিনের। রেল কর্তৃপক্ষ জেনেশুনেও সমাধান করছেন না। কমিটির সামনের সভায় স্টেশনে রাউটার মোডেম বসানোর বিষয়টি তোলা হবে।” স্টেশন ম্যানেজার নৃপেণবাবু বলেন, “দাবিগুলি লিখিত ভাবে জানালে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE