সংঘর্ষের পর শুনশান রাস্তা। — নিজস্ব চিত্র
এক মাসের মাথায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, বোমাবাজির ঘটনায় ফের উত্তপ্ত মালদহের চাঁচলের হজরতপুর-জালালপুর এলাকা।
সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্য়ন্ত দুই গোষ্ঠীর লোকজন এলাকায় মুড়িমুড়কির মতো বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। বোমাবাজি ছাড়াও দুই গোষ্ঠীই একে অন্যের বিরুদ্ধে গুলি চালানোরও অভিযোগ তুলেছে। বোমা ও গুলিতে জখম হয়েছে উভয়পক্ষের ছয়জন। তাদের মধ্যে তিন জনকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের পায়ে গুলি লেগেছে। অন্যজনের বোমায় হাত উড়ে গিয়েছে। পুলিশ অবশ্য গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ঘটনার জেরে গোটা এলাকা জুড়েই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। রাতেও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। পরে সকালে ফের বোমাবাজি শুরু হওয়ার পর বিরাট পুলিশ বাহিনী এলাকায় যায়। তল্লাশি চালিয়ে বোমা সরবরাহ করার অভিযোগে পাঁচ মহিলা সহ ছয় জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ফের যে কোনও সময় দুই গোষ্ঠীর গন্ডগোলের আশঙ্কায় কাঁটা হয়ে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
চাঁচলের এসডিপিও অভিষেক মজুমদার বলেন, ‘‘কোনও তরফই এখনও অভিযোগ করেনি। তবে পুলিশ সুয়োমোটো মামলা করেছে। ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকায় টহল চলছে।’’
পুলিশ ও তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর চাঁচল-২ ব্লকের নতুন সভাপতি হন হবিবুর রহমান। তারপর ওই রাতেই পার্টি অফিস দখলকে ঘিরে তৃণমূলের ক্ষমতাসীন ও প্রাক্তন গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। তারপর সোমবার রাতে ফের বোমাবাজির ঘটনায় এলাকা জুড়েই আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন কার্যকরী সভাপতি ইমদাদুল হকের খুড়তুতো ভাই ফিরোজ আলিকে তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর কয়েকজন মারধর করায় ঘটনার সূত্রপাত। ফিরোজ আলি দুটি ইটভাটার মালিক ও কংগ্রেস কর্মী। ভাই প্রহৃত হওয়ায় ইমদাদুল বদলা নিতে দলবল নিয়ে হামলা চালান বলে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর অভিযোগ।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ইমদাদুল হকের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘নতুন সভাপতি হওয়ার পর তার দলবলই আমাদের এলাকা ছাড়া করতে হামেশাই সন্ত্রাস চালাচ্ছে। সোমবার রাতেও আমাদের পক্ষের ফাইজুল হককে একা পেয়ে মারধর করে তার পায়ে গুলি করা হয়। ঠাকুর্দাকে বাঁচাতে গেলে রফিকুল ইসলামকে লক্ষ করে ওরা বোমা ছোড়ে। বোমায় তার হাতের একাংশ উড়ে যায়। নিজেরা হামলা চালিয়ে তা ঢাকতে এখন ওরা গল্প ফাঁদছে।’’
ব্লক তৃণমূল সভাপতি হবিবুর রহমানের অভিযোগ, ‘‘এতে রাজনীতি নেই। ব্যক্তিগত সমস্যার জেরে ওরা আমাদের লোকজনের উপরে বোমা, বন্দুক নিয়ে হামলা চালিয়েছে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘দলীয় স্তরে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় শৃঙ্খলা না মানলে তাদের দলে জায়গা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy