Advertisement
E-Paper

মদ্যপদের দৌরাত্ম্য নিয়ে তরজা ভোটে

সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় মদ্যপদের দৌরাত্ম্য। কোথাও গলির মোড়ে গোল হয়ে বসে চলতে থাকা মদের আসর। কোথাও আবার খোলা মাঠে বসে চলতে থাকে নেশার আড্ডা। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হল্লাও বাড়তে থাকে। বাঁধের উপরে তো দিনের বেলাতেই বসে ওই আড্ডা। কোচবিহার পুরসভা নির্বাচনের আগে নেশার আসর নিয়ে শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের নেতাদের একাংশের মদতে নেশার আসর বসছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০০

সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় মদ্যপদের দৌরাত্ম্য। কোথাও গলির মোড়ে গোল হয়ে বসে চলতে থাকা মদের আসর। কোথাও আবার খোলা মাঠে বসে চলতে থাকে নেশার আড্ডা। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হল্লাও বাড়তে থাকে। বাঁধের উপরে তো দিনের বেলাতেই বসে ওই আড্ডা। কোচবিহার পুরসভা নির্বাচনের আগে নেশার আসর নিয়ে শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের নেতাদের একাংশের মদতে নেশার আসর বসছে।

বিশেষ করে পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ওই আসর বসে বলে অভিযোগ। রাতে পোস্টার, ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিরোধী কর্মীদের হুমকি দেওয়া বলেও অভিযোগ। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, এমন কোনও অভিযোগ থাকলে তাঁরা পুলিশ-প্রশাসনকে জানাতে পারে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূলের অভিযোগ, এলাকার বাঁধ লাগোয়া ফাঁকা জায়গায় বেআইনি ভাবে মদ বিক্রি হয়। বিভিন্ন এলাকার দুষ্কৃতীরা সেখানে আড্ডা বসিয়েছে। ওই ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থীর সমর্থকরা এর সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, ‘‘মদ্যপদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান জারি রয়েছে। নির্দিষ্ট করে কেউ অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কোচবিহার সদরের মহকুমাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসার বিকাশ সাহার কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগও জমা হয়েছে। মহকুমাশাসক বলেন, “বাঁধ এলাকায় মদ্যপদের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ আমি পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে চিঠি দিয়েছে। পুলিশের তরফ থেকে ইতিমধ্যে টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। কোথাও মদ বা নেশার আসর বসলে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।”

কোচবিহার শহরের ২০টি ওয়ার্ডের একটি বড় অংশ তোর্সা বাঁধ সংলগ্ন এলাকা। ওই তোর্ষা বাঁধ নিয়েই বেশিরভাগ অভিযোগ। কংগ্রেস, বিজেপি বা বামেদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, শাসক দল তৃণমূল গ্রামআঞ্চল থেকে দুষ্কৃতীদের নিয়ে হাজির করে বাঁধ এলাকায়।

সন্ধ্যে হলেই সেখানে বসে পড়ে মদের আসর। কখনও কখনও তৃণমূল জিন্দাবাদ বলে স্লোগানও ওঠে। এর পরেই বিরোধী কোনও কর্মী-সমর্থককে পেলে চলে ভয় দেখানো। পুলিশ এর মধ্যে ওই এলাকা থেকে কয়েকজনকে আটক করে। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিষ বণিক বলেন, “আমাদের প্রার্থী ও কর্মীদের ভয় দেখানোর জন্য বাইরে থেকে দুষ্কৃতীদের জড়ো করা হচ্ছে বাঁধ এলাকায়। বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।” তাঁর আরও অভিযোগ, ৪ নম্বরে ওয়ার্ডে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।

সেখানেও সন্ধ্যের পরে মদ্যপরা দলে দলে ঘুরে হুমকি দিচ্ছে। ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন দলের কোর কমিটির নেতা ভূষণ সিং। ওই ওয়ার্ডে ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী হয়েছেন গোপাল দে। ভূষণবাবু বলেন, “ভিত্তি অভিযোগ। আসলে এখানে বিরোধী সব প্রার্থীর জামানত জব্দ হবে। তা বুঝতে পেরেই বামেদের তরফে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।” ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী প্রার্থপ্রতিম ঈশোরের অভিযোগ, রাতে ওই ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় মদের আসর বসছে। পিকনিক হচ্ছে। একটু বেশি রাতের দিকে মদ্যপ অবস্থায় শাসক দলের কিছু কর্মী তাঁর ফ্লেক্স, পোস্টার ছিঁড়ে দিচ্ছে। ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী শুভজিৎ কুন্ডু বলেন, “এই এলাকায় কংগ্রেসের কোনও প্রভাব নেই। মিথ্যে কিছু কথা বলে বাজার গরম করতে চাইছে। মানুষ ভোটে তাঁর জবাব দেবে।”

১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন অন্তরা বসু। তাঁর স্বামী রানা বসু তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কার্জকরি সভাপতি। তিনি অভিযোগ করেন, ওই ওয়ার্ডে বাঁধের ধারে বেআইনি ভাবে মদের কারবার হয়। সেখানে দুষ্কৃতীরা ভিড় জমায়। তৃণমূলের লোকজনকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে কিছু দুস্কৃতী মদের আসর বসাচ্ছে। কয়েকজন নানা মামলায় অভিযুক্ত। পুলিশকে সব জানিয়েছি।” ওই এলাকায় নির্দল প্রার্থী হয়েছেন শম্পা রায়। ওই এলাকার নির্দলের নেতা উত্তম রায় বলেন, “মিথ্যে অভিযোগ। মদ্যের আড্ডা আমরা বসাব এটা হাস্যকর। আসলে মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। তা দেখে তৃণমূল প্রার্থীর তরফে ভিত্তিহীন কিছু অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

Cooch Behar municipal election trinamool TMC drunker bjp congress cpm police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy