Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তোর্সার গতিপথ পাল্টে রানওয়ে বাড়াতে উদ্যোগ

বন্ধ উড়ান পরিষেবা চালু করতে কোচবিহার বিমান বন্দরের রানওয়ে বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। এ জন্য বিমানবন্দর লাগোয়া মরা তোর্সার গতিপথ বদলানোর কাজও ইতিমধ্যে অনেকটা এগিয়েছে।

তৈরা করা হচ্ছে নতুন নদীপথ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

তৈরা করা হচ্ছে নতুন নদীপথ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৬ ০২:২৪
Share: Save:

বন্ধ উড়ান পরিষেবা চালু করতে কোচবিহার বিমান বন্দরের রানওয়ে বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। এ জন্য বিমানবন্দর লাগোয়া মরা তোর্সার গতিপথ বদলানোর কাজও ইতিমধ্যে অনেকটা এগিয়েছে। আজ সোমবার বিমান বন্দরের পরিকাঠামোর সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে যাওয়ার কথা রয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতরের কর্তাদেরও তাঁর সঙ্গে থাকার কথা রয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কোচবিহার বিমান বন্দরের রানওয়ে বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার সেখানে যাব। রানওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়ানোর কাজ সম্পূর্ণ হলে বেশি আসনের উড়ান চালুর ব্যাপারে বিভিন্ন সংস্থার আগ্রহ বাড়বে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে এ জন্য আর্থিক বরাদ্দও দিয়েছে।” সেই সঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবুর সংযোজন, ৭০ আসনের উড়ান চালুর ব্যাপারে জোর দেওয়া হচ্ছে। গুয়াহাটি-কলকাতা-কোচবিহার রুটে পরিষেবা চালুর কথা ভাবা হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার বিমানবন্দরে রানওয়ের দৈর্ঘ্য ছিল ১০৬৯ মিটার। প্রথম পর্যায়ে রানওয়ের অব্যবহৃত এলাকা ৬০ মিটার বাড়ানোও হয়। ১৮ আসনের উড়ানের ওঠানামায় সমস্যা নেই। কিন্তু ৩২-৪০ আসনের উড়ান চালুর জন্য রানওয়ের দৈর্ঘ্য অন্তত ১২০০ মিটার করা দরকার। এটিআর বিমান ওঠানামায় রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৩২৭ মিটার বাড়ানো দরকার। সে ক্ষেত্রে ৭০ আসনের উড়ান চলাচলেও অসুবিধে হবে না। প্রাথমিক ভাবে ওই পরিকল্পনার কথা মাথায় রেখে মরা তোর্সা নদীর উপর বক্স কালভার্ট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। পরে প্রকল্প বদলে নদীর গতিপথ বদলানোর কাজ শুরু হয়। সেচ দফতরের কয়েকজন আধিকারিক জানিয়েছেন, রানওয়ে বাড়াতে মরা তোর্সা নদীর ৬১৮ মিটার এলাকার গতিপথ বদলানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৪০০ মিটার এলাকায় কাজ এগিয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “নদীর গতি বদল করে রানওয়ে বাড়াতে একশো দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে কাজের পরিকল্পনাও রয়েছে। এ সব নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, এক দশকের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা কোচবিহার-কলকাতা উড়ান পরিষেবা চালুর ব্যাপারে তৃণমূল জমানার শুরুতেই উদ্যোগ হয়। একাধিকবার বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পরিষেবা চালু করা হয়। গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ দফায় কোচবিহার-বাগডোগরা-কলকাতা-অন্ডাল রুটে নয় আসনের উড়ান চালু করা হয়। রাজ্য সরকার আর্থিক ভর্তুকি দেওয়ার পরেও কয়েক মাসের মধ্যেই ওই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। মূলত অনিয়মিত পরিষেবার পাশাপাশি বেশি যাত্রী ভাড়া নিয়ে অভিযোগে সমস্যা হয় বলে অভিযোগ। সব দিক খতিয়ে দেখে তাই এবার রানওয়ের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে বেশি আসনের উড়ান চালানর ব্যাপারে প্রশাসনের অন্দরে তৎপরতা শুরু হয়। তার জেরে সেচ দফতর নদীর গতিপথ বদলানোর ব্যাপারে প্রকল্প তৈরি করে রানওয়ে বাড়ানর কাজ শুরু করে। সেচ দফতরের কোচবিহারের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র স্বপন সাহা বলেন, “পুরানো খাতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নতুন খাত খনন করে গতিপথ ঘোরাতে চাইছি। ওই কাজ অনেকটা এগিয়েছে। বর্ষা নামার আগেই শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে।”

রানওয়ে বাড়িয়ে বেশি আসনের বিমান চালানোর মাধ্যমে পরিষেবা নতুন করে চালুর ওই উদ্যোগে খুশি ব্যবসায়ী ও শিল্পদ্যোগী মহলের অনেকেই। তাদের কয়েকজন জানান, বেশি আসনের উড়ান চালান হলে যাত্রী ভাড়া অনেকটা কমবে। ফলে নিয়মিত পরিষেবা মিললে যাত্রী ভিড় হবে। তাই শুরু থেকেই রানওয়ে বাড়ানর ব্যাপারে আর্জি জানান হচ্ছিল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী এবার শুরু থেকে ওই কাজের বাস্তবায়নের ব্যাপারে খোঁজখবর শুরু করায় ওই ব্যাপারে আশা অনেকটাই বেড়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

torsa river runway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE