Advertisement
E-Paper

বিপর্যস্ত পর্যটন

প্রতি বছর ২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় বড়দিনের মরসুম। তা চলে নতুন বছরের ১০ জানুয়ারি অবধি। আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি না বদলালে এই মরসুমে ব্যবসায় ক্ষতির আশঙ্কা প্রায় ১০ কোটি টাকা, জানাচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪৯
ভোগান্তি: বাসের অপেক্ষায় পর্যটকেরা। শিলিগুড়িতে সোমবার।নিজস্ব চিত্র

ভোগান্তি: বাসের অপেক্ষায় পর্যটকেরা। শিলিগুড়িতে সোমবার।নিজস্ব চিত্র

দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মাথায় হাত পর্যটন ব্যবসায়ীদের। একই সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন পর্যটকেরাও। ২০১৭ সালে পাহাড়ের আন্দোলন এবং বর্ষার সময়ে তেলতা সেতু ভেসে যাওয়ায় জোর ধাক্কা লেগেছিল পর্যটন ব্যবসায়। সে বারে গরমের মরসুম মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। পুজোতেও সেই পরিস্থিতি বিশেষ বদলায়নি। তবে শীতের ছুটির মরসুমে কয়েকটি জায়গায় পর্যটকেরা ঘুরতে এসেছিলেন। এ বারে মন্দায় ব্যাহত পুজোর পরে শীতের মরসুমের আগে রেল যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তাই নতুন করে আশঙ্কার মেঘ পর্যটনের আকাশে। পর্যটন ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেন বন্ধ থাকায় বাসের টিকিট নিয়ে কালোবাজারি শুরু হয়েছে। বিমানের ভাড়াও আকাশছোঁয়া।

প্রতি বছর ২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় বড়দিনের মরসুম। তা চলে নতুন বছরের ১০ জানুয়ারি অবধি। আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি না বদলালে এই মরসুমে ব্যবসায় ক্ষতির আশঙ্কা প্রায় ১০ কোটি টাকা, জানাচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাই রাজ্য সরকারের তরফে বাড়তি বাস দিয়ে আপাতত পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চলছে। যদিও চাহিদার তুলনায় তা কিছুই নয় বলে পর্যটন সংগঠনগুলি মনে করেছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক করতে হবে এবং বিমানের ভাড়া নাগালের মধ্যে আনতে হবে। না হলে অবস্থা বদলাবে না। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দেখা যাক, অবস্থা শেষ অবধি কী দাঁড়ায়!’’

অস্থিরতা বা অচলাবস্থার জেরে পর্যটন ব্যবসার আর্থিক ক্ষতির ঘটনা নতুন নয়। ২০১৭ সালে পাহাড়ে বন্‌ধের জেরে পর্যটন ব্যবসা বন্ধ ছিল। তার আগে ২০১৫ সালে নেপাল এবং উত্তরের ভূমিকম্প, ২০১৪ সালে পাহাড়ের তিন মাস বন্‌ধ, ২০১১ সালে সিকিম এবং সংলগ্ন এলাকায় ভূমিকম্পে বারবার পর্যটন শিল্প ক্ষতির মুখে পড়েছে। হোটেল রিসর্ট থেকে গাড়ি বুকিং বাতিলের জেরে ক্ষতির অঙ্ক কখনও ১০ কোটি, কখনও ২৫ কোটি টাকা বা কখনও আরও বেশি দাঁড়িয়েছে।

এই অবস্থায় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল, রাজ্য পরিবহণ দফতর এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়াকে চিঠি দিয়ে যতটা সম্ভব দ্রুত অবস্থার বদল চেয়েছে হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরজিম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। চিঠি দিচ্ছি। ইতিমধ্যে বুকিং বাতিল, অনিশ্চয়তা তৈরি হয়ে গিয়েছে। লোকসানের জেরে অনেক ছোট ব্যবসায়ীরা বড় সমস্যায় পড়বেন।’’

পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পর গত বছর থেকে পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্সের পরিস্থিতি বদলেছিল। এ বার পুজো অবধি সব কটি মরসুমে ভাল ব্যবসা হয়েছে। বড়দিন এবং নতুন বছরও তেমনটাই হবে বলে ধরে নিয়ে এগিয়েছিলেন হোটেল, রিসর্ট, হোম-স্টে বা গাড়ির ব্যবসায়ীরা। শীতের ডুয়ার্সের চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। সরাসরি, এজেন্সি দিয়ে কিংবা অনলাইনে দেদার বুকিং এসেছে। কিন্তু সোমবার থেকে পরিস্থিতি একেবারেই ঘুরে গিয়েছে। পাহাড়, ডুয়ার্সের ছোট হোম-স্টে ব্যবসায়ীদের অবস্থা আরও খারাপ। তাঁদের কয়েক জন জানান, ‘‘বড় হোটেল, গাড়ি ব্যবসায়ীরা লোকসান কোনওমতে সামলান। আমাদের তো মরসুমের রোজগারের উপর যাবতীয় খরচ ঠিক করা থাকে। কোথা থেকে কী আসবে, তা কেউ ভেবে পাচ্ছে না।’’

Travel and Tourism Citizenship Amendment Act Violence Train Services
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy