Advertisement
E-Paper

যানজটে ভুগলেন পড়ুয়া, নিত্যযাত্রী

তৃণমূল নেত্রীর নন্দীগ্রাম দিবসের প্রায় এক ঘন্টার পদযাত্রায় স্তব্ধ হয়ে গেল শিলিগুড়ি শহরের অধিকাংশ রাস্তাঘাটই। সোমবার বিকালে প্রায় চার কিলোমিটার ধরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিলের জেরে যাত্রী, বাসিন্দাদের দুর্ভোগ কমতে কমতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৬ ০২:২৫
মিছিলের জেরে দুর্ভোগ শিলিগুড়িতে। আটকে পড়েছে স্কুলবাস। হিলকার্ট রোডে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

মিছিলের জেরে দুর্ভোগ শিলিগুড়িতে। আটকে পড়েছে স্কুলবাস। হিলকার্ট রোডে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

তৃণমূল নেত্রীর নন্দীগ্রাম দিবসের প্রায় এক ঘন্টার পদযাত্রায় স্তব্ধ হয়ে গেল শিলিগুড়ি শহরের অধিকাংশ রাস্তাঘাটই। সোমবার বিকালে প্রায় চার কিলোমিটার ধরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিলের জেরে যাত্রী, বাসিন্দাদের দুর্ভোগ কমতে কমতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়।

মিছিল বিকেল পাঁচটা নাগাদ শুরু হলেও দুর্ভোগ শুরু হয়েছিল বেলা সাড়ে তিনটে থেকেই। তখন থেকেই দার্জিলিং মোড় লাগোয়া ক্ষুদিরাম মূর্তির এক পাশের হিলকার্ট রোড দিয়ে গাড়ি যাতায়াত কমতে থাকে। বাস, অটো তো চলছিলই না, ভিআইপি এবং পুলিশ কর্তাদের গাড়ি বার করতেও হিমসিম খেতে হয়েছে পুলিশকর্মীদের। পরে তা-ও বন্ধ হয়ে যায়। আর ঘোষপুকুরের সভা থেকে এসে তৃণমূল নেত্রী মিছিলে পা মেলাতেই গোটা হিলকার্ট রোডের একপাশ চলে যায় তৃণমূল নেতা কর্মীদের দখলে। হিলকার্ট রোডের অন্য পাশে উৎসাহী মানুষের ভিড়ে বন্ধ হয়ে যায় গাড়ি চলাচল। প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে রাস্তার দখল ছিল তৃণমূলের হাতে। কিন্তু হিলকার্ট রোড লাগোয়া লেন, বাইলেনগুলির মুখও বন্ধ করে দেওয়ায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে শহরের অনেকটা অংশ জুড়ে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।

এর মধ্যে ভিড়ে চাপে কোথাও ভেঙে পড়ছে রাস্তার মাঝের বাগানের বাঁশের ব্যারিকেড। কোথাও স্কুল, কলেজ ফেরত ছেলেমেয়েরা রাস্তার কোণে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেছে অটো, বাসের খোঁজে। কেউ বা হেঁটেই রওনা হয়েছেন বাড়ির দিকে।

তবে পুরোটাই মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া বলে মনে করছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ এ দিন নিজে থেকে রাস্তা নেমেছেন। ইন্দিরা গাঁধীর মূত্যুর পর শোকযাত্রা ছাড়া শিলিগুড়ি তো বটেই উত্তরবঙ্গের মানুষ এমন মিছিল দেখেনি। লক্ষাধিক মানুষ রাস্তায় ছিল বলেই মনে হয়েছে।’’ আর দুর্ভোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক কোনও কর্মসূচিতে রাস্তায় এমন হয়। পুলিশ ভাল ব্যবস্থা করেছিল। মিছিল শেষ হতেই সব স্বাভাবিক হয়ে যায়।’’

তৃণমূলের জেলার কিছু নেতার দাবি, মিছিলে ৩৫ হাজারের মতো লোক হয়েছিল। তবে পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগগুলির অনুমান, রাস্তার দুই পাশ এবং মিছিল মিলিয়ে ১৫ হাজারের মতো লোক ছিলেন। এর জেরে শহরের মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে বলে মনে করেন শহরের মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এই মিছিলের জেরে মানুষকে যানজটে নাকাল হতে হয়েছে। মানুষের সমর্থন পেতে এসে উনি মানুষকেই সমস্যায় ফেলেছেন।’’

স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, কলকাতা বা দক্ষিণবঙ্গ দেখা গিয়েছে, তৃণমূল নেত্রী মিছিল করলে তিনিই সামনে থাকেন। পিছনে মিছিল গিয়ে শেষ হয়। শিলিগুড়িতে তা হয়নি। এ দিন নেত্রীর আগে কয়েক হাজার লোক আর পিছনে কয়েক হাজার। পুলিশ কর্মীরা মিছিলের মাঝে থাকা মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তাই মিছিলের বাকিটা যে যার মতো হেঁটেছেন। দু’পাশ থেকে লোক ঢুকেছেন। ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছেন। তাতে যানজট আরও বেড়েছে। পরিস্থিতি শেষে এমন দাঁড়ায় যে, হাসমিচকে নন্দীগ্রাম শহিদ মঞ্চে কোনও কথা বলা তো দূরের কথা মিনিট খানেক মঞ্চে থেকেই ভিড়ের ঠেলায় কোনও মতে গাড়িতে উঠে হোটেলের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিন ভিড়ের ঠেলায় শহরের ১১, ১২, ১০, ৬, ১৭, ১৮, ১, ২, ৩ এবং ৪ নম্বরের একাংশ যানজট ছড়ায়। অলিগলির রাস্তা রিকশা, অটো, গাড়িতে ভরে যায়। অফিস ফেরত সুকোমল ভট্টচার্য, রণদীপ সেনরা বলেন, ‘‘অনেকটা যুদ্ধ করে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। সপ্তাহের কাজের দিনের বদলে শনিবার, রবিবার এ সব হলে মানুষ বাঁচে।’’ আর কলেজ ফেরত সুদীপা রায়, ইলোরা বসু বা শর্মিষ্ঠা ঘোষেরা বলেন, ‘‘দার্জিলিং মোড় থেকে হেঁটে শহরে ঢুকতে হয়েছে। বাস, অটো চললেও তা থমকেই ছিল।’’

state news traffic jam mamata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy