রাজ্য আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের অধীনে গঠিত ট্রাইবস মনিটরিং কমিটির রাজ্য সদর দফতর মালবাজারে স্থাপিত হল। সোমবার এই কমিটির দফতর উদ্বোধন করেন কমিটির চেয়ারম্যান বিরসা তিরকে। উল্লেখ্য, বিরসা তিরকেকে মনিটরিং কমিটির চেয়ারম্যান করে মোট ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করে রাজ্য আদিবাসী উন্নয়ন দফতর। কমিটির রাজ্য সদর কার্যালয় যাতে ডুয়ার্সের মালবাজারে করা যায়, সে বিষয়ে কমিটির তরফ থেকেই প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য সরকারের তরফে সবুজ সঙ্কেত মিলতেই তড়িঘড়ি প্রশাসনিক তৎপরতায় মালবাজারে দফতরের ভবন নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। কমিটির ভবন তৈরি হয়ে গিয়েছে শুনেই কমিটির সাত সদস্যকেই সোমবারে মালবাজারে চলে আসতে বলেন বিরসাবাবু। সেই মতো রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দা ৭ সদস্যের উপস্থিতিতেই দফতরে প্রবেশ করেন বিরসাবাবু।
উল্লেখ্য, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের বদলে আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্যে পৃথক দফতর তৈরির দাবি আদিবাসী বিকাশ পরিষদ রাজ্য সরকারের কাছে তুলেছিল। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ২০১২-তেই আদিবাসী উন্নয়ন দফতর তৈরিতে উদ্যোগী হন। মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি অধীনে থাকা এই দফতর কী পদ্ধতিতে আদিবাসী উন্নয়ন করতে পারে, তার জন্যে ট্রাইবস অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল তৈরি করে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যা বোঝার কাজও শুরু করে রাজ্য সরকার। এবারে আদিবাসীদের জন্যে রাজ্যের সমস্ত দফতরে যে উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে, তার অভিমুখ আরও কী ভাবে সরাসরি আদিবাসী কল্যাণে ব্যবহার করা যায়, তা খতিয়ে দেখতেই এই মনিটরিং কমিটিও তৈরি করে দেওয়া হয়। চলতি মাসের পয়লা তারিখে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণাও করে রাজ্য সরকার। কমিটির চেয়ারম্যান বিরসাবাবু ছাড়াও সদস্য হিসাবে রয়েছেন ডুয়ার্সের বাসিন্দা তেজকুমার টোপ্পো ,বাঁকুড়ার পার্বতী সোরেন, শিলিগুড়ির বীণা সামাদ, দার্জিলিং জেলার গয়াগঙ্গা চা বাগানের বাসিন্দা নিকোটিন মিন্জ, কালচিনির রাজেশ বারলা এবং সুন্দরবনের বাসিন্দা মহিমচন্দ্র সর্দার।
এদিন কমিটির দফতরে বসেই বিরসাবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার আদিবাসী কল্যাণে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ৭ জন আদিবাসীদের নিয়ে আদিবাসী উন্নয়নে কমিটি গঠন যেমন নজির বিহীন, তেমনই মালবাজারে রাজ্যস্তরের সদর কার্যালয় স্থাপনও ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। ডুয়ার্সে যেহেতু আদিবাসী মানুষ সব চাইতে বেশি মাত্রায় থাকেন, তাই তাঁরা যাতে সরাসরি কমিটির দফতরে এসে নিজেদের সমস্যার কথা জানাতে পারেন সে কারণেই এই কার্যালয় মালবাজারে করা হয়েছে। সরকার আদিবাসী উন্নয়নে যে বরাদ্দ পাঠাচ্ছে তা রুপায়ণে গিয়ে কোথাও কী আটকে থাকছে কি না, আমরা সেটিও খতিয়ে দেখব।’’ মুখ্যমন্ত্রী প্রতিটি জেলাতে একটি করে আদিবাসী ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জলপাইগুড়ি জেলার ভবনটিও মালবাজারে তৈরি করার সুপারিশও কমিটির মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে মালবাজারের বিডিও দফতর চত্বরে কমিটির স্থায়ী অফিসে এদিন বিরসাবাবুকে নিয়ে আসেন মালবাজারের মহকুমাশাসক জ্যোতির্ময় তাঁতি। তাঁর কথায় রাজ্য সরকারের আদিবাসী উন্নয়ন দফতর থেকেই মনিটরিং কমিটির কার্যালয় দ্রুততার সঙ্গে মালবাজারে তৈরির নির্দেশ এসেছিল, সেই মতোই বিরসাবাবুদের দফতর খুলে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy