Advertisement
E-Paper

ঘরে খুচরো, বাইরে ধার শ্রীকৃষ্ণের

কোচবিহার মদনমোহন মন্দরের সামনে রোজই প্রায় প্রতি দিনই বাঁশি হাতে থাকেন তিনি। ভক্তরা অনেকেই দক্ষিণা দেন খুচরোয়। সেই টাকাতেই সংসার চলে তাঁর। কিন্তু সেই খুচরো কেউই নিতে চাইছেন না। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ১১:০০
সজ্জা: কৃষ্ণ সাজে যাদব সূত্রধর। নিজস্ব চিত্র

সজ্জা: কৃষ্ণ সাজে যাদব সূত্রধর। নিজস্ব চিত্র

খুচরোর সমস্যায় বিপাকে খোদ ‘শ্রীকৃষ্ণ’!

কোচবিহার মদনমোহন মন্দরের সামনে রোজই প্রায় প্রতি দিনই বাঁশি হাতে থাকেন তিনি। ভক্তরা অনেকেই দক্ষিণা দেন খুচরোয়। সেই টাকাতেই সংসার চলে তাঁর। কিন্তু সেই খুচরো কেউই নিতে চাইছেন না। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে।

এই ‘শ্রীকৃষ্ণ’ আসলে কোচবিহারের গুড়িয়াহাটি এলাকার বাসিন্দা প্রবীণ যাদব সূত্রধর। সত্তরোর্ধ্ব যাদববাবু দীর্ঘ দিন ধরেই ‘বহুরুপী’ সেজে রোজগার করেন। মদনমোহন মন্দিরের সামনে ‘শ্রীকৃষ্ণ’ সেজেই অবশ্য এখন বেশি সময় কাটান। দিনে গড়ে একশো টাকার মতো রোজগার হয়। তা দিয়েই এক মেয়ে ও বাবার কোনও মতে দিন গুজরান হয়। অতিরিক্ত খুচরোর জেরে সমস্যায় পড়েছেন তিনি। যাদববাবু বলেন, “এই বয়সে কাজ করার মতো শক্তি নেই। তাই বহুরুপী সেজেই মন্দিরের সামনে দিনভর থাকি। ভক্তরা বেশিরভাগ খুচরো দেন। এতদিন খুব অসুবিধে হয়নি। এখন দোকানে কেটাকাটা করতে পারছি না। অনেক অনুরোধ করে খুচরো দিয়ে জিনিস নিতে হচ্ছে। এ ভাবে কতদিন অনুরোধ করে চলবে বলতে পারেন?” দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্ত্তী বলেন, “শ্রীকৃষ্ণ সেজে যাদববাবু প্রায় প্রতিদিনই আসেন। ভক্তদের অনেকের কাছে তিনি বেশ পরিচিত মুখ। খুচরো নিয়ে তাঁর সমস্যার কথা শুনেছি।”

যাদববাবু একা নন মদনমোহন মন্দির চত্বরের অন্তত ১২ জন ভিক্ষাজীবীরও ওই এক সমস্যা। নিউ কোচবিহারের ভানু বর্মন, অসমের জয়ন্তী কলিতা, কোচবিহারের কল্যাণী বর্মনরা ওই প্রসঙ্গে এক সুরে প্রশ্ন তুলছেন, এ ভাবে কত দিন। ভানুবাবু বলেন, “দিনে গড়ে ৫০ টাকা পাই। তা-ও সবটাই এক বা দুই টাকার কয়েন। দোকানে কিনতে গেলে সেটা নিতে চাইছে না। কেনাকাটা করতে না পারলে খাব কী, বেঁচেই বা থাকব কী করে।” ব্যবসায়ীরা বলছেন তাঁরা নিরুপায়। অভিযোগ, ব্যাঙ্ক খুচরো নিচ্ছে না। মহাজন আপত্তি করছে। এক ব্যবসায়ী বিপ্লব সরকার বলেন, “ব্যাঙ্ক, মহাজন খুচরো নিচ্ছে না। তাই খদ্দেরদের কাছ থেকে আমরা নেব কী করে?” সংবাদপত্রের এজেন্ট ও হকারদের সমস্যা চরমে। কোচবিহারের এক এজেন্ট প্রদীপ ঘোষও বলেন, “ব্যাঙ্ক ফিরিয়ে দিলে আমাদের কী করার আছে বলুন।” কোচবিহার স্টেশনের এক হকার শ্যামল বর্মন বলেন, “ক্রেতারা বলছে তিন, চার টাকার নোট কোথায় পাব, খুচরো নিন। ঘরে পাহাড় জমছে। বাইরে বাকি বাড়ছে।” কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়েছে। সংসদে সরব হব।”

Polymorphous Coin শ্রীকৃষ্ণ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy