Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
কেষ্টপুর ও সিঙ্গিঝোরা

দু’টি দুর্ঘটনায় মৃত দুই চালক

শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া বাগডোগরায় থানা এলাকার জাতীয় সড়কে সারা দিনে দুটি বাস দুর্ঘটনায় দু’জন মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৫ জন। এর মধ্যে দুইজন বাইক আরোহী আছেন। সকালের প্রথম ঘটনায় বাইক-লোকাল বাসের সংর্ঘষের পর বাসটিতে কোনওভাবে আগুন লেগে যায়।

সিঙ্গিঝোরায় দুর্ঘটনায় আহতদের আনা হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। — বিশ্বরূপ বসাক

সিঙ্গিঝোরায় দুর্ঘটনায় আহতদের আনা হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। — বিশ্বরূপ বসাক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০৭
Share: Save:

শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া বাগডোগরায় থানা এলাকার জাতীয় সড়কে সারা দিনে দুটি বাস দুর্ঘটনায় দু’জন মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৫ জন। এর মধ্যে দুইজন বাইক আরোহী আছেন। সকালের প্রথম ঘটনায় বাইক-লোকাল বাসের সংর্ঘষের পর বাসটিতে কোনওভাবে আগুন লেগে যায়। বাসটি পুড়ে গিয়েছে। যাত্রীরা বাস থেকে নেমে কোনওমতে পালান। সন্ধ্যায় আবার দুটি লোকাল বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। তাতেই দুই চালক মারা যান। দুটি ঘটনার আহতদের মধ্যে ১৭ জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকি দু’জনকে মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম ঝন্টু বর্মন (৪০) এবং দীপক সিংহ (৩৭)। দুই জনই দুটি লোকাল বাসের চালক। মৃতদের মধ্যে ঝন্টুর বাড়ি শিলিগুড়ির ফুলেশ্বরী এবং দীপকের খড়িবাড়িতে।

যাত্রী এবং বাসিন্দাদের অভিযোগ, শিলিগুড়ির বিভিন্ন রুটে যাওয়া লোকাল বাসগুলি বেপরোয়া ভাবে চলাচল করে। শহরের ভিতরে খেয়ালখুশি মতো দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলা, অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চালানো, নিজেদের মতো ভাড়া ধরার জন্য প্রতিযোগিতা কিছুই বাদ থাকে না। বিশেষ করে হিলকার্ট রোড, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে যে ভাবে লোকাল বাসগুলি চলাচল করে, তাতে রোজই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। এদিনের বাস চালকেরা মদ্যপ ছিলেন বলেও কয়েকজন দুঘর্টনাগ্রস্ত যাত্রীর অভিযোগ। সন্ধ্যার পর তাঁরা অত্যন্ত বেপরোয়া ভাবে বাস চালাচ্ছিলেন। বাগডোগরা এবং মাটিগাড়ার জাতীয় সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ট্রাফিক পুলিশের তরফে নজরদারি নিয়ে উদাসীনতার অভিযোগও তুলেছেন যাত্রীরা। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেছেন, ‘‘ট্রাফিক পুলিশকে নজরদারি বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, এদিন সকালে শিলিগুড়ির দিক থেকে নকশালবাড়ি দিকে বাইকে আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান সাগর সুব্বা এক পরিচিত তরুণী শিখা থাপাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। উল্টো দিক থেকে নকশালবাড়ি-শিলিগুড়ি রুটের বাসটি জাতীয় সড়কের কেষ্টপুরে তাঁদের ধাক্কা মারে। দু’জন রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর জখম হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার পর বাসের চালক বাসটি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বাইকটি বাইকের সামনে অংশে নিচে আটকে যায়। এই অবস্থায় বাস অন্তত ৪০০ মিটার এগিয়ে যায়। তার পরে কোনওভাবে বাসে আগুন ধরে যায়। চালক, খালাসি ও যাত্রীরা নেমে প্রাণে বাঁচেন। মাটিগাড়া থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে বাসটি পুড়ে যায়। দমকলের অফিসারদের অনুমান, বাসের সামনে আটকে থাকা বাইকটির তেলের ট্যাঙ্কার ঘর্ষণে ফেটে গিয়ে আগুন ধরে গিয়েছে।

এর পরে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে বাগডোগরার সিঙ্গিঝোরা এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, যাত্রী তোলার জন্য দ্রুত গতিতে চলতে গিয়েই দুটি লোকাল বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। একটি বাস শিলিগুড়ি থেকে পানিট্যাঙ্কির দিকে যাচ্ছিল, অপরটি খড়িবাড়ি থেকে শিলিগুড়ির দিকে আসছিল। যাত্রীদের অভিযোগ, অন্ধকার জাতীয় সড়কে বাস দুটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মুখোমুখি ধাক্কা মারে। প্রচণ্ড আওয়াজে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পুলিশের সাহায্যে উদ্ধার কাজ শুরু হয়। চালকদের মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। আহতদের মধ্যে নিত্যযাত্রী ও ব্যবসায়ীরাই বেশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

accidents death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE