দুই হাসপাতালের চিকিৎসকদের দু’রকম নিদানে উদ্বিগ্ন ডেঙ্গি সন্দেহে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী এবং তাঁদের পরিবার।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা করাতে গেলে ডেঙ্গি আক্রান্ত জলপাইমোড়ের বাসিন্দা মজিবর আলিকে প্লেটলেট দিতে হবে বলে তখনই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করা হয়। পরিবারের দাবি, বুধবার রাতে শিলিগুড়ি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় মজিবরকে। চিকিৎসক রিপোর্ট দেখে জানান, ডেঙ্গি হয়েছে। প্লেটলেট কমে ২০ হাজারে এসেছে। তা বিপজ্জনক। প্লেটলেট দিতে হবে। তাই তিনি রেফার করে দিচ্ছেন। তা শুনে রাত ১১টা নাগাদ তড়িঘড়ি তাঁকে মেডিক্যালে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। অথচ বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মেডিক্যালের চিকিৎসকরা প্লেটলেট দেওয়ার ব্যাপারে কিছু না বলায় উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবার। দুই চিকিৎসক দু’রকম কথা বলায় বিভ্রান্ত পরিবারের লোকজন।
মজিবর আলির স্ত্রী অঞ্জুদেবীর কথায়, ‘‘শিলিগুড়ি হাসপাতালের চিকিৎসক বলেছিলেন ডেঙ্গি হয়েছে। পরিস্থিতি যা এখনই প্লেটলেট দিতে হবে। আর মেডিক্যালে চিকিৎসক বলছেন যখন দরকার হবে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। দু’ রকম কথায় উদ্বেগে রয়েছি। আমরা তো অত বুঝি না।’’ মাটিগাড়ার ভাঙাপুলের বাসিন্দা বুদ্ধিমান বর্মনের প্লেটলেট মঙ্গলবার ছিল ৬৮ হাজার। এ দিন তা নেমে যায় ২৮ হাজারে। তাঁকে প্লেটলেট দেওয়ার কথাও চিকিৎসক কিছু বলেননি দেখে উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবারও।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘২০ হাজার বা তার নিচে নেমে গেলে সাধারণত প্লেটলেট দেওয়ার দরকার হয়। সে কারণে রোগীর অবস্থা দেখে চিকিৎসক পাঠিয়েছেন। আবার মেডিক্যালের চিকিৎসক তাঁর মতো করে দেখছেন। বিষয়টি খোঁজ নেব।’’ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের সুপার মৈত্রেয়ী কর জানান, ওই রোগীর চিকিৎসা কী হচ্ছে তিনি খবর নেবেন।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসা করাতে এসে রোগীদের নানা দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ। ওয়ার্ডে জায়গা না-মেলায় মেডিসিন বিভাগের করিডরের মেঝেতে জ্বরের রোগীরা রয়েছেন। মশারি, শয্যার চাদর চেয়ে মেলে না বলে অভিযোগ। যাতায়াতের করিডরের মেঝেতেও জ্বরের রোগীরা রয়েছেন। এ দিন সকালে তার উপরে থাকা দোতলার করিডর থেকে সাফাই কর্মীরা আবর্জনা ফেললে তা দীপক হালদার নামে এক রোগীর গায়ের উপর এসে পড়ে। তার শরীর নোংরা জলে ভিজে যায়। তাঁর স্ত্রী দীপাদেবী বলেন, ‘‘জায়গার অভাবে করিডরে এ ভাবে থাকতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। বুঝতে পারছি না।’’