Advertisement
E-Paper

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা সত্ত্বেও রোজকার সমস্যা মেটেনি

মালদহে লোডশেডিং আর হয় না। কমেছে লো ভোল্টেজও—গত ডিসেম্বরে মালদহ সফরে এসে প্রশাসনিক সভা থেকে প্রকাশ্যে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকেই মালদহ জুড়ে শুরু হয়েছে লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ। এখন সমস্যা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জেলাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, লোডশেডিং হওয়ার নির্দিষ্ট কোনও সময় নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৭

মালদহে লোডশেডিং আর হয় না। কমেছে লো ভোল্টেজও—গত ডিসেম্বরে মালদহ সফরে এসে প্রশাসনিক সভা থেকে প্রকাশ্যে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিন্তু এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকেই মালদহ জুড়ে শুরু হয়েছে লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ। এখন সমস্যা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জেলাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, লোডশেডিং হওয়ার নির্দিষ্ট কোনও সময় নেই। যে কোনও সময়ই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। আর যখন বিদ্যুৎ আসছে, তখন আবার লো-ভোল্টেজ। যার জন্য দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।

লোডশেডি ও লো-ভোল্টেজ সমস্যা সুরাহার জন্য জেলা বিদ্যুৎ দফতরে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কর্মাস। জেলার ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ জেলাতে এখন কমে গিয়েছে। তখন আমরা স্বস্তি পেয়েছিলাম। তবে গরমের আঁচ পড়তেই সমস্যা আরও কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছে। আমরা একাধিকবার চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন বিদ্যুৎ দফতরে।’’

বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে জেলাতে শাসক-বিরোধী তরজা শুরু হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর মুখের কথার সঙ্গে কাজের কোনও মিল নেই। লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ জেলাতে আছে কি না তা মানুষই জবাব দেবেন।’’ কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী মৌসম নূরও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের জন্য চাষের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ ঠিক মতো পানীয় জল পাচ্ছে না। তবুও নির্বিকার প্রশাসন। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা সমালোচনা করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘‘বিগত সরকারের আমলে লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ কতটা ছিল, তা মানুষ জানেন।’’

শহর হোক কিংবা গ্রামগঞ্জ। মালদহ জেলা জুড়েই চলছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। শহরের দিকে দিনের মধ্যে কম পক্ষে পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা করে লোডশেডিং থাকছে। আর গ্রামগঞ্জে নিয়ম করে লোডশেডিং হচ্ছে। দিনের মধ্যে তিন বার করে লোডশেডিং হচ্ছে দু’ঘণ্টা ধরে। সকাল নটা থেকে ১২টার মধ্যে, বিকেলের দিকে এবং রাতের দিকে একবার করে লোডশেডিং হচ্ছে। আর শহরের দিকেও কার্যত নিয়ম করে দুপুর ও রাতের দিকে লোডশেডিং হচ্ছে। বিুদ্যুৎ থাকলেও বৈদ্যুতিন পাখা থেকে শুরু করে আলো টিমটিম করে জ্বলেছে। গ্রামগঞ্জে শ্যালো পাম্প গুলি লো-ভোল্টেজের কারণে ঠিক মতো চলছে না। যার ফলে হাঁসফাঁস গরমের মধ্যে বিপাকে পড়েছেন জেলাবাসী।

এপ্রিল থেকেই জেলা জুড়ে তাপমাত্রার পারদ চড়ছে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশেপাশে থাকছে। ফলে চলতি মাস থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে লোডশেডিং। জেলার মধ্যে ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহের শহর এলাকায় ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। আর হবিবপুর, বামনগোলা, রতুয়া, হরিশ্চন্দ্রপুর, মোথাবাড়ি এই ব্লকগুলির বাসিন্দাদের প্রায় লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজের সমস্যায় পড়তে হয়। তাই প্রায় এই এলাকাগুলিতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের দাবিতে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগ, গরমের মধ্যে লোডশেডিং হওয়ায় শিশু ও বয়স্কেরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আর পাখা চললেও তা ধীর গতিতে চলছে। আর লোডশেডিং হওয়ার নির্দিষ্ট কোনও সময় নেই। এর ফলে পানীয় জলেরও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিদ্যুৎ দফতরের উচিত বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর মালদহে ৩২ মেগা ইউনিট ও দক্ষিণ মালদহে ৪২ মেগা ইউনিট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় প্রতি মাসে। এখন গরমে ফ্রিজ, এসি, ইনভার্টারের মতো বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি বেশি ব্যবহার হওয়ায় বাড়তি বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। এই বিষয়ে মালদহের বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওন্যাল ম্যানেজার দিলীপকুমার বাছাড় বলেন, ‘‘যন্ত্রপাতি সংস্কার চলায় মাঝে মাঝে পরিষেবা বন্ধ করতে হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ খরচ হওয়ায় লো-ভোল্টেজ হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রান্সফর্মার বসানোর কাজ চলছে।’’

Malda Unemployment alive
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy