চা বাগান। — ফাইল চিত্র।
‘একটু চা পাই কোথায়’?
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট প্রস্তাব পড়া শেষ হতেই, সুকুমার রায়ের ‘অবাক জলপান’ নাটকের ‘মশাই, একটু জল পাই কোথায় বলতে পারেন’— প্রশ্নটি ধার করে নিয়ে যেন চা শিল্পের বড় অংশ জানতে চেয়েছে, ‘মাননীয় অর্থমন্ত্রী, একটু চা পাই কোথায়’?
বুধবার কেন্দ্রীয় বাজেটের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত চায়ের কোনও নামগন্ধ পায়নি চা মহল্লা। দিনের শেষে দেশের সবচেয়ে বড় চা বণিকসভা ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’ যে বাজেট বিবৃতি প্রকাশ করেছে, তাতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বাজেট প্রস্তাব বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী-কী উপকার করবে তার ফর্দ জানিয়ে চায়ের বেলায় খুঁজে এনেছে ‘এক জেলা এক পণ্য’ নামে বিপণন। টি অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ‘এক জেলা এক পণ্য’ প্রচারে দার্জিলিং চায়ের বিপণন বাড়বে। যাকে কটাক্ষ করে ডুয়ার্সের এক জনপ্রিয় চা বাগানের ম্যানেজারের মন্তব্য, “এ অনেকটা অশ্বত্থামা হত কথাটি উচ্চারণের পরে, নিচু স্বরে ইতি গজ বলার মতো বিষয়!”
‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর চেয়ারপার্সন নয়নতারা পালচৌধুরী বলেন, “এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেটে পরিকাঠামো থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে জোর দিয়েছে। ‘পিএম প্রণাম’-এর মতো প্রকল্প এসেছে, যারফলে, পরিবেশে নজর দেওয়া হয়েছে, রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রিতহবে।” যদিও চা মালিকদের এই সংগঠনের ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পাণ্ডে বলেই ফেলেছেন, “চায়ের জন্য বিশেষ কিছু খুঁজে পেলাম না। আমরা আশা করি, চায়ের বিপণন, বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সরকার যত্নবান হবে।”
ছোট চা বাগানের পরিচালকেরা নিজেদের চা চাষি বলেন। বড়দের মতো ছোট বাগানের পরিচালকেরাও কোনও আশা দেখেননি কেন্দ্রীয় বাজেটে। তবে কৃষি ক্ষেত্রের জন্য বাজেটে নানা প্রস্তাব রয়েছে। ছোট চা বাগান মালিকদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’, তার সর্বভারতীয় সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় বাণিজ্য সচিবের কাছে দাবি জানিয়েছি ছোট চা চাষিদের কৃষক হিসেবে ঘোষণা করতে। সে ঘোষণা করলে, আমরা বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা পাব। চা বাগান হিসেবে না হোক, কৃষক হিসেবে তো কিছু জুটবে!”
তৃণমূলের চা শ্রমিক নেতা স্বপন সরকারের মন্তব্য, “বিজেপি প্রধানমন্ত্রীকে চা বিক্রেতা বলে দাবি করে। অথচ, এই আমলেই চা বঞ্চিত।” পাল্টা, জলপাইগুড়ি বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের দাবি, “কেন্দ্রীয় বাজেট একটি আর্থিক রূপরেখা। এর পরে, সব মন্ত্রক সেই নীতিতে কাজ করবে। এত দিন চা ক্ষেত্রে যুগান্তকারী সব সিদ্ধান্ত বিজেপি নিয়েছে। গত বছর চা শিল্পে কয়েক হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ দিয়েছে কেন্দ্র। এ বারও হবে এবং সকলে তা দেখতেও পাবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy