Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Mishap at Chopra

জমি কার সে প্রশ্নের মেলেনি উত্তর, জারি চাপান-উতোর

প্রশাসন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার পরেই বিএসএফ তাদের জায়গার সীমানা চিহ্নিতকরণের জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে আবেদন করেছে।

দুর্ঘটনাস্থল।

দুর্ঘটনাস্থল। নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ পাল
চোপড়া শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৩
Share: Save:

সীমান্তের কাঁটাতার থেকে বিতর্কিত নালাটির দূরত্ব ১০ মিটারেরও কম— এমনই দাবি স্থানীয়দের। এই নালাতেই মাটি ধসে চার নাবালকের প্রাণ গিয়েছে। নালার জমিটি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) অধীন বলেই দাবি স্থানীয়দের। বিএসএফের নির্দেশেই নালা খোঁড়া হয়েছে বলে দাবি পুলিশি হেফাজতে থাকা ধৃত ঠিকাদারের। স্থানীয়দের দাবি, ওই এলাকায় দিনের বেলায় সামান্য মাটি কাটলেও তাড়া খেতে হয় বিএসএফের। তা হলে জায়গাটি কার? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে চোপড়ার সীমান্তবর্তী গ্রাম চেতনাগছে।

প্রশাসন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার পরেই বিএসএফ তাদের জায়গার সীমানা চিহ্নিতকরণের জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে আবেদন করেছে। সূত্রের খবর, পুলিশের তরফ থেকেও চোপড়ার বিডিও এবং ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিকের কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে, জায়গাটি কার ও সেখানে খোঁড়াখুঁড়ির অনুমতি কেউ চেয়েছিল কি না। চোপড়ার ভূমি ও ভূমিসংস্কার আধিকারিক সুবিমল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নতুন করে সীমান্ত এলাকায় সমীক্ষার কাজ চলছে। নালা-দুর্ঘটনার পরে, বিএসএফের তরফেও সমীক্ষার আবেদন করা হয়েছে।’’

এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব তসিরুল ইসলাম এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের শেষ প্রান্তে বেড়া দেওয়া রয়েছে। তার পরেই পড়ে নালার ওই জায়গাটা। দিনের বেলায় ওখানে ছাগল বাঁধতে গেলেও, বিএসএফের অনুমতি লাগে। ওদের জায়গা না হলে, ওদের অনুমতি নিতে হয় কেন?’’ যদিও বিএসএফের আধিকারিকেরা এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেননি।

বিএসএফের তরফ থেকে বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছিল, দুর্ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে এলাকাবাসী মাটি কাটছিলেন বলে তাদের জওয়ানেরা খবর পেয়েছিলেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে, সীমান্তবর্তী এলাকায় যখন নালা খোঁড়া হচ্ছিল, তখন বারণ করা হয়নি কেন? ধৃত ঠিকাদার আসিরুল হক শুক্রবার দাবি করেন, বিএসএফের নির্দেশেই মাটি কেটেছিলেন তিনি। স্থানীয়দের বক্তব্য, বিএসএফের নির্দেশে কেউ মাটি কাটলে বাধা দেবে কে!

মৃতদের পরিবারকে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণ এবং বিএসএফের শাস্তির দাবিতে তৃণমূলের ধর্না-বিক্ষোভ শনিবার পাঁচ দিনে পড়েছে এ সব বিতর্কের মধ্যেই। দলের বিধায়ক হামিদুল রহমান এ দিন বলেন, ‘‘এখনও কোনও দোষী কর্মীকে বরখাস্ত পর্যন্ত করল না বিএসএফ। আমাদের আন্দোলন চলবে। বৃহত্তর আন্দোলন হবে। দরকার হলে, জাতীয় সড়ক ও আলুয়াবাড়ি রোড স্টেশনে রেল অবরোধ করব।’’

বিজেপির তরফে এ দিনও তৃণমূলের অবস্থানকে কটাক্ষ করা হয়েছে। দলের উত্তর দিনাজপুর জেলার সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘তৃণমূল সন্দেশখালি-কাণ্ড থেকে মানুষের মন অন্যত্র ঘোরানোর জন্যই বিষয়টি নিয়ে নাটক করছে, রাজনীতি করছে।’’

শনিবার মৃত চার নাবালকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান সিপিএমের উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির সম্পাদক আনওয়ারুল হক ও অন্য নেতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chopra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE