Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

রাতে গুলির শব্দ, ত্রস্ত কোচবিহার

মহালয়ার আগেই রাত জাগল কোচবিহারের গাঁধীনগর। আতসবাজির শব্দে নয়, গুলির শব্দে সারা রাত আতঙ্কে কাঁটা হয়ে রইলেন বাসিন্দারা। ঘড়িতে তখন রাত বারোটা। তখনই প্রথম বার গুলির শব্দে পাড়া কেঁপে ওঠে। তার পরে মুর্হুমুহু গুলির শব্দে আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসে। পুজোর প্রস্তুতি চলায় অনেক পরিবারের সদস্যরাই বাড়ির বাইরে রয়েছেন।

রাস্তায় পড়ে রয়েছে গুলির খোল। — নিজস্ব চিত্র

রাস্তায় পড়ে রয়েছে গুলির খোল। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪৩
Share: Save:

মহালয়ার আগেই রাত জাগল কোচবিহারের গাঁধীনগর। আতসবাজির শব্দে নয়, গুলির শব্দে সারা রাত আতঙ্কে কাঁটা হয়ে রইলেন বাসিন্দারা।

ঘড়িতে তখন রাত বারোটা। তখনই প্রথম বার গুলির শব্দে পাড়া কেঁপে ওঠে। তার পরে মুর্হুমুহু গুলির শব্দে আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসে। পুজোর প্রস্তুতি চলায় অনেক পরিবারের সদস্যরাই বাড়ির বাইরে রয়েছেন। উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে সেই বাড়িগুলিয়। তৃণমূলের দুই শিবিরের লড়াইতেই গোলমাল বেঁধেছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পৌঁছলেও রাতভর গোলমাল চলতে থাকে বলে অভিযোগ।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের জন্য লাগাতার অভিযান চলছে। বুধবার রাতেও অন্য একটি ঘটনায় কোচবিহার একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে।” গাঁধীনগরের ঘটনা সম্পর্কে বলেন, ‘‘ওই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

গোলমালের সূত্রপাত অবশ্য এ দিনই প্রথম নয়। বাসিন্দাদের দাবি, কোচবিহার শহরের এল দাস মোড় এলাকায় গত জুলাইয়ের এক রাতে দীপেশ লামা নামে এক তৃণমূল সমর্থক গুলিবিদ্ধ হন। তিনি তৃণমূল নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিকের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। ওই ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগ ওঠে অভিজিৎবাবুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠী বলে পরিচিত তৃণমূল কাউন্সিলর শুভজিৎ কুণ্ডুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগে শুভজিৎ গ্রেফতারও হন। ঘটনার তিন মাসের মাথায় ফের গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল কোচবিহার শহরে। অভিযোগ, নিশানায় ছিল শুভজিৎদের বাড়ি।

দল সূত্রে খবর, অভিজিৎ ও শুভজিৎ শিবিরের কোন্দল নতুন ব্যাপার নয়। কলেজের কর্তৃত্ব থেকে শহর নিয়ন্ত্রণ, সব বিষয়েই দুই গোষ্ঠীর গোলমাল বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। কিছু দিন আগে টিএমসিপি-র রাজ্য নেতৃত্ব দুই গোষ্ঠীর নেতাদের নিয়ে কলকাতায় বৈঠক করেন। দলের রাজ্য নেতৃত্বও ওই ব্যাপারে বিরক্তির কথা জানিয়ে দেন। তার পরেও অবশ্য বিরোধ মেটেনি। মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের মুখে স্বাভাবিক ভাবে মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় দলের অন্দরে জল্পনা ছড়িয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সরব বিরোধীরাও। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই এমন ঘটনা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা শান্তির কোচবিহার দেখতে চাই।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “সবটাই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জের। পুজোর আগে পুলিশের উচিত অবিলম্বে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া।’’ অভিজিৎ দে ভৌমিক ও শুভজিৎ কুণ্ডু অবশ্য গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ মানতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানান, যা হচ্ছে তা ভাল হচ্ছে না। সব কিছু নেতৃত্বের নজরে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gun firing Cooch behar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE