রক্তদানে আগ্রহ কম হওয়াতে সংকট
রক্তের সংকট প্রবল। দুর্গাপুজো এবং নির্বাচনের সময় রক্তের আকাল প্রকট হয়। কারণ সেই সময় রক্তদান শিবির কম হয়। রক্তের জোগান না থাকলে হাসপাতাল চলবে না। রক্ত বাজারে পাওয়া যায় না। মানুষই মানুষকে রক্ত দান করতে পারে। রক্ত দান করলে শরীরের লাভই হয়, ক্ষতি কিছু হয় না। এখনও সমাজ কুসংস্কারে ভুগছে। এটার অবসান হওয়া উচিত। গ্রামে-গঞ্জের লোকেরা ভয়ে রক্ত দিতে চায় না। স্বাস্থ্যমন্ত্রক ওদের অবগত করার জন্য গ্রামে বিভিন্ন ক্যাম্প করতে পারে। ডাক্তার পরীক্ষা করার পরই রক্ত নেওয়া হয়। রক্তদান শিবিরে ডাক্তারবাবুরা থাকেন। রক্তদানের কোনও প্রতিক্রিয়া নেই, নেই কোনও ঝুঁকিও। দেশে রক্তের অভাবে প্রচুর লোক মারা যায়। মানুষই পারে মানুষকে বাঁচাতে রক্ত দান করে। এটা হল মানবিকতা। রক্তদান শিবিরে রক্তদাতার সংখ্যা ক্রমশ কমছে। অনেক যুবকও এর থেকে দূরে থাকে। বয়স্ক মানুষের রক্ত দেওয়ার নিষেধ আছে। আশ্চর্যের বিষয় দেশের যুব সম্প্রদায়ের আগ্রহও এ বিষয়ে অনেক কম। তারা নিজের কেরিয়ার নিয়েই ব্যস্ত। এটা ভাল কথা। কিন্তু সমাজও তাদের কাছে কিছু চায়। সেই চাওয়াটাই রক্ত দান করা। সরকার প্রচুর বিজ্ঞাপন দিয়েও শিবিরে রক্তদাতার সংখ্যা বাড়াতে পারছে না। আবার মা-বাবারাও অনেক সময় রক্তদানের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। অথচ একজন যুবক রক্ত দিলে সমাজের ভিত শক্ত হবে আবার যুবকটিও সুস্থ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। হাসপাতালে রক্তের প্রবল হাহাকার। মুমূর্ষু রোগীর আত্মীয়স্বজনরা এক বোতল রক্তের জন্য হাহাকার করেন। হাসপাতালও নিরূপায়। সরকার ওষুধ বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে সাহায্য করতে পারে কিন্তু রক্ত তো দিতে পারবে না যুব সমাজ যদি রক্ত না দেয়। বর্তমানে মানুষ অমানবিক, নিজের স্বার্থে মগ্ন। সমাজের কাজ করতে চায় না। এটি সমাজের অবক্ষয়। এর প্রতিকার করতে হবে। স্বেচ্ছায় রক্তদান না করলে রক্তদান বাধ্যতামূলক করতে হবে। বিশেষ করে যুব সমাজের ক্ষেত্রে। তা না হলে রক্তের অভাব কোনও দিন মিটবে না। রক্তের অভাবে একদিন হাসপাতালও হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে। এটা তো সরকার কিছু করতে পারবে না। পারবে নতুন প্রজন্ম, যারা হাসপাতালে রক্ত দান করে মানুষকে বাঁচাবে।
— তিমির বন্দোপাধ্যায়, হাকিমপাড়া, জলপাইগুড়ি।
সংবাদপত্র জিন্দাবাদ
৩ মে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিবস। দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। জাতি বা সমাজহিতৈষী সংবাদপত্র তথা সাংবাদিকদের দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা স্মরণ করা ও শপথ নেওয়ার দিবস। সঙ্গে সঙ্গে বলতে চাই— জনগণকেও সাংবাদিকদের সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া বাঞ্ছনীয়। প্রশ্ন জাগে যে, বাস্তবে কি সংবাদপত্র স্বাধীন? সত্যিই কি সাংবাদিকরা স্বাধীন ভাবে সর্বত্র সত্য ঘটনা সংগ্রহ করতে পারেন? মনে হয় না। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন বাহুবলী রাজনৈতিক দলের স্বার্থান্ধতার কোপে পড়েন, বাধাপ্রাপ্ত হন, আক্রান্ত, লাঞ্চিত, আহত এমনকী নিহতও হন। নিহতদের শহিদের মর্যাদা দেওয়া রাষ্ট্রের কর্তব্য। অনৈতিক ক্ষমতাবানেরা নিজ অপকর্মের জন্য সর্বদা মানসিক দুর্বলতা বশত সত্যের মুখোমুখি হতে ভীত থাকেন। তাই সাংবাদিকদের প্রতিহত ও প্রতিরোধ করতে ভয়ঙ্কর হিংস্র হয়ে ওঠে এবং একটি মিথ্যা বা অন্যায়কে ঢাকতে অজস্র মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকে। অথচ বলার অপেক্ষা রাখে না যে সাংবাদিকরা নানা প্রতিকূলতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বাধাবিঘ্ন উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বলছি যে জাতির প্রতি সংবাদপত্র তথা সাংবদিকদের যেমন নিরপেক্ষতা, দায়িত্ব, দায়বদ্ধতা আছে, তেমনই সাংবাদিকদেরও অবাধ স্বাধীনতা দেওয়া, নিরাপত্তা দেওয়া এবং সৈনিকের মতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের থাকা একান্ত কাম্য।
—রামনাথ মজুমদার, নেতাজি কলোনি, কলাবাগান, কোচবিহার।
ট্রেনযাত্রী
কর্মসূত্রে দীর্ঘ ৩৫ বছর হলদিবাড়ি-জলপাইগুড়ি ট্রেনের নিত্যযাত্রী। এই লাইনে চার বগির ট্রেন চলত। এখন বগির সংখ্যা তিন গুণ। প্ল্যাটফর্মগুলিও ট্রেনে ওঠার উচ্চতার সুবিধা পেয়েছে। হলদিবাড়ির প্ল্যাটফর্মগুলি দীর্ঘায়িত না করলে দার্জিলিং মেলের সব কোচ ভিতরে ঢ়়ুকতে পারে না। তিস্তা-তোর্সার একটি অংশ চলে হলদিবাড়ি থেকে। যাত্রী চাহিদা থাকা সত্ত্বেও হলদিবাড়ি-কলকাতা সুপার ফাস্ট ট্রেন চলে সপ্তাহে তিন দিন। ট্রেনটি প্রতিদিন চালানোর অনুরোধ আগেও বহু বার করা হয়েছে। এক্সপ্রেস, সুপারফাস্ট ট্রেন পরিষ্কার হয় হলদিবাড়িতে। হলদিবাড়ি শিলিগুড়ি ডেমু প্যাসেঞ্জার ট্রেনটির হালচিত্র হতাশাজনক। টয়লেটে যাওয়া অসম্ভব। সপরিবার এই ট্রেনে ভ্রমণ অসম্মানজনক। প্রচণ্ড গরম অথচ ট্রেনের জানালা খোলা যায় না। ফ্যান ঘোরে না। এই ট্রেনেই শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি বাজারের সব্জি নিয়ে যাতায়াত করে সবব্জি বিক্রেতারা। শিলিগুড়ি-হলদিবাড়ি ডেমু প্যাসেঞ্জার ট্রেনের দুরবস্থা দীর্ঘ দিনের। কোনও পরিবর্তন নেই। ট্রেনটি লেটও করে থাকে প্রায় সময়ই। তখন অবস্থা হয় আরও অসহনীয়। এই ট্রেনের লোকগুলি অতি সাধারণ—হয়তো তাই এই দুরবস্থা। সাধারণ লোকের কথা কেউ কর্ণপাত করে না। তা ছাড়া খেয়ালিপনার অন্য কোনও কারণ ছিল না।
—দেবাশিস রায়, হলদিবাড়ি, কোচবিহার।
পাখি নিধন
অনুকূল প্রকৃতি পাওয়ার কারণে প্রচুর পরিযায়ী পাখি রায়গঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় আসে। তারা যে শুধু বাস্তুতন্ত্রের সহায়ক তাই নয়, তারা আমাদের অতিথিও বটে। ভারতীয় সংস্কৃতিতে অতিথির একটা আলাদা মর্যাদা আছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় কিছু মানুষ লোভের বশবর্তী হয়ে মাংস খাওয়ার জন্যে পাখিগুলিকে হত্যা করছে। সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষরা, কি পারি না এর বিরুদ্ধে সক্রিয় হতে? প্রশাসনের সক্রিয়তাও এ ব্যাপারে জরুরি।
—সামিম আখতার বানু, রায়গঞ্জ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy