Advertisement
E-Paper

পঞ্চায়েত অফিসে রাত কাটাচ্ছে গ্রাম

জলের তোড়ে উড়ে গিয়েছে কালভার্ট। বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে জল ঢুকে গিয়েছে গ্রামে। জলে থইথই ঘর ছেড়ে পঞ্চায়েত অফিসেই রাত কাটিয়েছেন শতাধিক মানুষ। অনেকে বাঁধের উপরেই কাটিয়ে দিয়েছেন রাত। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় সীমান্তে পাহারায় থাকা বিএসএফ জওয়ানেরাও অসুবিধেয় পড়েছেন। জলে ভিজেই অনেকে পাহারা দিয়েছেন।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৫ ০২:৫১
কোচবিহারের টাকাগছ এলাকায় জলমগ্ন ঘরবাড়ি। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

কোচবিহারের টাকাগছ এলাকায় জলমগ্ন ঘরবাড়ি। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

জলের তোড়ে উড়ে গিয়েছে কালভার্ট। বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে জল ঢুকে গিয়েছে গ্রামে। জলে থইথই ঘর ছেড়ে পঞ্চায়েত অফিসেই রাত কাটিয়েছেন শতাধিক মানুষ। অনেকে বাঁধের উপরেই কাটিয়ে দিয়েছেন রাত। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় সীমান্তে পাহারায় থাকা বিএসএফ জওয়ানেরাও অসুবিধেয় পড়েছেন। জলে ভিজেই অনেকে পাহারা দিয়েছেন।
বুধবার তিস্তার জল বেড়ে যাওয়ায় মেখলিগঞ্জের বেশ কয়েকটি গ্রামে জল ঢুকে পড়ে। নিজতরফ, তিস্তাপয়েস্তির প্রায় দু’হাজার মানুষ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। ঘরে জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় নিজতরফ এলাকার ৩৫টি পরিবারকে প্রশাসন সরিয়ে নিয়ে যায়। তাঁদের কুচলিবাড়ি পঞ্চায়েতে রাখা হয়। গবাদি পশু রাখার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়।
মেখলিগঞ্জের মহকুমাশাসক রঞ্জনকুমার ঝাঁ বলেন, “ওই বাসিন্দাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে সব এলাকায় জল ঢুকেছে, সেখানেও শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। কোনও মানুষের যাতে অসুবিধের মধ্যে পড়তে না হয় সে দিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি।”
রাতেই ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা এবং পঞ্চায়েত প্রধানেরা বিভিন্ন এলাকায় যান। কুচলিবাড়ি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিশ্বনাথ দে জানান, নিজতরফের দিল্লিকুড়া এলাকার একটি কালভার্ট জলের তোড়ে উড়ে গিয়েছে। পাশের এলাকা একটি রাস্তা জলে মিশে গিয়েছে। ফলে প্রায় ৩০ ঘর পরিবারের বাড়িতে যাতায়াতের কোনও রাস্তা থাকল না। তিনি বলেন, “মানুষ খুব অসুবিধেয় পড়েছেন। তবে জল একটু কমতে শুরু করেছে। আর কিছুটা কমে গেলেই সবাই বাড়ি ফিরতে পারবেন। ওই এলাকার রাস্তাগুলি যাতে পুনরায় তৈরি করা যায়, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

বাসিন্দারা জানান, বুধবার সকালের পর থেকেই নদীর জল বাড়তে শুরু করে। আপাতত ঘর ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে ঠাঁই নিয়েছেন চরণ সিংহ, কেশব রায়, সাত্তার আলি, রসিদুল হকরা। তাঁরা বলেন, “বিকেলের মধ্যে ঘরের ভেতরে জল ঢুকে পড়ে। কোন সাহসে আর রাতে বাড়িতে থাকি। রাতে যদি জল আরও বাড়ে, সেই ভয়ে পঞ্চায়েতে চলে আসি। বাড়ির গবাদি পশুগুলোকে একটু উঁচু জায়গায় মাঠের মধ্যে বেঁধে রেখে দিই।” রাতে জল আরও বা়ড়ায় সকালের দিকে বাহাত্তর নিজতরফ এলাকার একটি বাঁধের অনেকটা ভেঙে যায়। ওই ভাঙা অংশ দিয়ে জল ঢুকেই গ্রাম প্লাবিত হয়। সেখানকার একটি বিএসএফ ক্যাম্পের মধ্যেও জল ঢুকে যায়।

ওই এলাকার তৃণমূলের পঞ্চায়েতের সদস্য রেজাউল করিম বলেন, “সবাইকে সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে। রাতের দিকে আমরা নজর রাখছি।” তৃণমূলের মেখলিঞ্জ ব্লকের সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত সরকার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরেছেন। তিনি বিষয়টি জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে জানিয়েছেন। লক্ষ্মীকান্তবাবু বলেন, “সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধে না হয় সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। দলের পাশাপাশি প্রশাসনকেও বিষয়টি জানিয়েছি।” মেখলিগঞ্জের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক পরেশ অধিকারী বলেন, “প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছি, যাতে সাধারণ মানুষকে সব রকম সহযোগিতা করা হয়। আমরাও পাশে রয়েছি।”

mekhliganj namitesh ghosh trinamool tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy