Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ফল শুনে নেচে উঠল মন

শুধু পড়ার বইয়েই মুখ ডুবিয়ে থাকত না অনুষ্কা। কখনও পড়া, কখনও গল্পের বই, কখনও আড্ডা, কখনও আবার নাচ। অনুষ্কা বলছিল, নাচতে ভালবাসে সে।

উচ্ছ্বাস: মাধ্যমিকের ফল বেরনোর পরে পরিজনদের সঙ্গে অনুষ্কা। জলপাইগুড়ির বাড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল

উচ্ছ্বাস: মাধ্যমিকের ফল বেরনোর পরে পরিজনদের সঙ্গে অনুষ্কা। জলপাইগুড়ির বাড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা 
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ০৫:৪৮
Share: Save:

রেজাল্ট জানার পরে মাকে জড়িয়ে ধরল সে। মা তুলে নিলেন কোলে। বাড়িসুদ্ধু সবার মুখে তখন হাসি। হবে না-ই বা কেন! ৬৮২ পেয়ে গোটা রাজ্যে নবম হয়েছে অনুষ্কা মহাপাত্র। জলপাইগুড়িতে প্রথম। কেমন লাগছে? মায়ের কোল থেকে নেমে অনুষ্কা বলে, ‘‘খুব নাচতে ইচ্ছে করছে।’’

জলপাইগুড়ি আশালতা বসু বিদ্যালয়ের ছাত্রী অনুষ্কা। বাবা অসীম মহাপাত্র জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষক। মা শিপ্রা গৃহবধূ। নিবাস ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ক্যাম্পাসের আবাসনে।

বাবা-মায়ের একই মেয়ে অনুষ্কা। অসীমের বাড়ি বাঁকুড়া জেলার সায়েঙ্গায়। চাকরির সুবাদে এখন জলপাইগুড়িতে রয়েছেন। অনুষ্কা জানায়, কোনও গৃহশিক্ষক ছিল না তার। বাবা তাকে অঙ্ক আর বিজ্ঞান পড়াতেন। মা বাংলা, ইতিহাস ও ভূগোল। অনুষ্কার কথায়, ‘‘ইংরেজি আমি নিজেই পড়তাম।’’

শুধু পড়ার বইয়েই মুখ ডুবিয়ে থাকত না অনুষ্কা। কখনও পড়া, কখনও গল্পের বই, কখনও আড্ডা, কখনও আবার নাচ। অনুষ্কা বলছিল, নাচতে ভালবাসে সে। ‘‘তাই তো নবম হওয়ার খবর পেয়ে প্রথমেই খুব নাচতে ইচ্ছে করল,’’ বলল সে। গোয়েন্দা গল্প খুব ভালবাসে অনুষ্কা। ফেলুদা, ব্যোমকেশ, কাকাবাবু— এ সব বইয়ের প্রতি তার আগ্রহ বেশি। ভবিষ্যতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায় অনুষ্কা। পছন্দের বিষয় অঙ্ক। টেস্টে পেয়েছিল ৯২%। তবে এত ভাল রেজাল্ট হবে আশাই করতে পারেনি, জানায় সে।

বাবা অসীমবাবু বলেন, ‘‘সারাদিন যা-ই ঘটুক না কেন, মেয়েকে রোজ রাত ৮-১০টা পর্যন্ত পড়তাম আমি। সব সময়ই ওকে বলতাম, অঙ্ক নিয়মিত অনুশীলন করতে হবে। আর বিজ্ঞান বুঝতে হবে।’’ মা শিপ্রাদেবী বলেন, ‘‘মেয়ের ইংরেজি ভাষায় লেখা ইতিহাস ও ভূগোলের পাশাপাশি বাংলা ইতিহাস ও ভূগোল বই থেকে আমি দাগিয়ে দিতাম গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলি। পাঠ্য বইয়ের সঙ্গে অন্য বই থেকেও নোট লিখে রাখতাম। বাংলাও পড়াতাম ওকে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

আশালতা বসু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাখী শর্মা আইচ বলেন, ‘‘আমরা আমাদের স্কুলের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ করে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। তাদের যাতে পড়াশোনায় কোনও অসুবিধা না হয়, সে দিকে আমাদের নজর থাকে। স্কুলে মক টেস্ট থেকে শুরু করে সব রকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অনুষ্কা স্কুলের মক টেস্টও ভাল ফল করেছে। ওর সাফল্যে বিদ্যালয় খুশি।’’

অনুষ্কা বাংলায় ৯৪, ইংরেজিতে ৯৭, অঙ্কে ৯৮, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৯, জীবন বিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯৮ এবং ভূগোলে ৯৮ পেয়েছে। আশালতা বসু বিদ্যালয়েই একাদশ শ্রেণিতে পড়বে সে। বড় হয়ে কী হতে চাও? এই প্রশ্নের উত্তরে অনুষ্কার জবাব, ‘‘এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।’’ একটা বিষয়ে কোনও আগ্রহ নেই অনুষ্কার। সেটা রাজনীতি। কেন? অনুষ্কার জবাব, ‘‘ভাল লাগে না আমার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE