Advertisement
০২ মে ২০২৪
Panchayat Election

অভিষেকের পাল্টা ময়দানে বিজেপি চাইছে শুভেন্দুকে

বাম জমানা শেষ হওয়ার পরে, উত্তরবঙ্গে কোচবিহার তৃণমূলের ‘শক্ত ঘাঁটি’ বলেই পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সে ‘ঘাঁটি’ দখল করে নেয় বিজেপি।

Picture of Abhishek banerjee and Suvendu Adhikari

অভিষেকের পাল্টা এ বার শুভেন্দুকে মাঠে নামাতে চাইছে বিজেপি। — ফাইল চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৫৫
Share: Save:

অভিষেকের পাল্টা এ বার শুভেন্দুকে মাঠে নামাতে চাইছে বিজেপি। আগামী ২৪ এপ্রিল থেকে রাজ্য জুড়ে ‘সংযোগ যাত্রা’ শুরু করবেন তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তা শুরু হবে কোচবিহার থেকে। যাত্রার প্রথম দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের ‘খাস তালুক’ বলে পরিচিত দিনহাটার বামনহাটে রাত্রিযাপনের কথা রয়েছে অভিষেকের। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিষেক যে এলাকায় সভা করবেন, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে দিয়ে একই এলাকায় সভা করানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি। সে হিসাবে দিনহাটা, সিতাই, শীতলখুচি ও মাথাভাঙাতে শুভেন্দুকে দিয়ে সভা করানোর কথা ভাবা হয়েছে। যদি সে পরিকল্পনা চূড়ান্ত রূপ পায়, সে জন্য অন্তত দু’দিন শুভেন্দু অধিকারীকে কোচবিহারে থাকতে হবে।

বিজেপির কোচবিহার জেলার সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘চলতি মাসের শেষের দিকে শুভেন্দু অধিকারীকে কোচবিহারে আনার কথা ভাবা হয়েছে। সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার পরে, তা ঘোষণা করা হবে।’’ গোটা রাজ্য জুড়েও কি অভিষেকের ‘সংযোগ যাত্রার’ পরে, সভা করবেন শুভেন্দু? সে বিষয়ে বিজেপির রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মণ বলেন, ‘‘এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কোনও সিদ্ধান্ত হলে, পরে জানানো হবে।’’ তৃণমূল অবশ্য বিজেপির পাল্টা প্রচারের পরিকল্পনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারের পরে আর কারও কথা শুনবেন না মানুষ।’’

বাম জমানা শেষ হওয়ার পরে, উত্তরবঙ্গে কোচবিহার তৃণমূলের ‘শক্ত ঘাঁটি’ বলেই পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সে ‘ঘাঁটি’ দখল করে নেয় বিজেপি। লোকসভায় হারের পরে কোচবিহারে দুর্বল হতে শুরু করে রাজ্যের শাসক দল। অনেক চেষ্টার পরেও বিধানসভায় কোচবিহারে ভাল ফল করতে পারেনি তৃণমূল। জেলার ন’টি বিধানসভার মধ্যে সাতটি বিজেপির দখলে চলে যায়। পরে, উপনির্বাচনে দিনহাটা বিধানসভা পুনরায় দখল করতে সমর্থ হয় শাসক দল। এর পরের কোচবিহারে ছ’টি পুরসভাতেও জয়ী হয় তৃণমূল। তৃণমূল সূত্রের দাবি, সে ফলের পরেও এই জেলায় শাসক দল যে প্রকৃত পক্ষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা মনে করছেন না তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। দল মনে করছে, উত্তরবঙ্গে বিজেপিকে কোণঠাসা করতে হলে কোচবিহারের মতো পুরনো ঘাঁটি পুনরুদ্ধার করতে হবে। এ জন্যেই কোচবিহার দেখভালের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন অভিষেক। সেখান থেকে ‘সংযোগ যাত্রা’ শুরু করবেন তিনি।

কোচবিহারকে পাখির চোখ করেছে বিজেপিও। কেন্দ্রীয় প্ৰতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়ি কোচবিহারে। সে সঙ্গেই বিজেপি মনে করছে, কোচবিহারে তৃণমূলকে আটকে দিতে পারলে, উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের মনোবলে ধাক্কা দেওয়া যাবে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনেই শাসক দলের সঙ্গে টেক্কা দিতে চাইছে বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, সব কথা মাথায় রেখে শুভেন্দু অধিকারীকে দিয়ে অভিষেকের সফরের পরে, সভা করানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অভিষেক যে যে বিষয় প্রচারে তুলে ধরবেন, তার পাল্টা জবাব শুভেন্দু অধিকারী দিলে, দলের কর্মীদের চাঙ্গা রাখা যাবে বলে মনে করছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE