রতন করের স্ত্রী, ছেলে। নিজস্ব চিত্র।
কথা দিয়েছিলেন, তাড়াতাড়ি ফিরবেন। কথা রাখতে পারলেন না স্বামী। সে কথা বলতে বলতে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন স্ত্রী শ্বেতা কর। বললেন, ‘‘একজন পুলিশকর্মী কর্তব্যরত অবস্থায় কী ভাবে কিডন্যাপ হয়ে যান! দিদি তো পুলিশমন্ত্রীও। আমি তাঁর কাছে বিচার চাই। আমি সিআইডি তদন্ত চাই।”
চারদিন নিখোঁজ থাকার পরে রবিবার সকালে আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁর দলসিংপাড়ার কাছে বিচ চা বাগানের ঝোপ থেকে পুলিশকর্মী রতন করের (৫২) দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর বাড়ি কোচবিহারের কাছে ব্যাঙচাতরা রোডের বিপদভঞ্জন কলোনিতে। দিন কয়েক ধরে ওই বাড়িতে উদ্বেগ ছড়িয়েছিল। এ দিন বিষণ্ণতায় ছেয়ে যায় বাড়ি। কন্নায় ভেঙে পড়েন নিহত পুলিশকর্মীর আত্মীয়-পরিজনেরা। ভাল মানুষ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন রতন। কেন তাঁকে খুন হতে হল, কেউই বুঝতে পারছেন না। তাঁর দাদা অজিত রায় বলেন, “এ জন্যই দাবি করছি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত করে সব স্পষ্ট হোক।”
পরিবারের সদস্যেরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশ বিভাগে ছিলেন রতন। তিনি পুলিশ ব্যাটালিয়নে কনেস্টবলের চাকরি পেয়েছিলেন। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি থেকে একাধিক এলাকায় তাঁর পোস্টিং হয়। প্রোমোশনে তিনি এএসআই হন। গত চার-পাঁচ বছর ধরে তিনি আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁ থানায় ট্র্যাফিকে কর্মরত ছিলেন। তাঁর আদি বাড়ি দিনহাটার বালিকায়। বছর পাঁচেক আগে তিনি কোচবিহার শহরের কাছে বাড়ি করেন। ওই এলাকাতেই তাঁর শ্বশুরবাড়ি। তাঁর দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে। ছেলে ঋতম এ বার মাধ্যমিক দেবে। বাবার মৃত্যুর কথা শুনে হতবাক সে। বার বার জিজ্ঞাসা করছে, “কেন এমন হল?” মেয়ে শিল্পা এমএসসি পড়ছেন। মন শক্ত করে বাবার দেহ শনাক্ত করতে তিনি আলিপুরদুয়ারে চলে যান।
পরিবারের সদস্যেরা জানান, বাইকেই কোচবিহার-জয়গাঁ যাতায়াত করতেন রতন। চিলাপাতার জঙ্গল পথেই যেতেন। স্ত্রী জানান, গত বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে জয়গাঁ’ রওনা হন তিনি। সেখানে পৌঁছে স্ত্রীকে ফোনও করেন। পরে সেখান থেকে বেলা দু’টো নাগাদ হাসিমারা নাকা পয়েন্টের দিকে রওনা হন। ওই রাস্তার বড় অংশ জুড়ে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেই ফুটেজ দেখানো হয়েছে তাঁর স্ত্রীকে। তিনি বলেন, “যে অংশে সিসি ক্যামেরা নেই, সেখান থেকেই আমার স্বামীকে পাওয়া যাছিল না। যারা খুন করেছে, তারা জানত ওই অংশে সিসি ক্যামেরা নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy