E-Paper

‘শীত-উৎসব’ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে, বিতর্ক

প্রথমে বিষয়টি নিয়ে সরব হন জিটিএ সদস্য তথা প্রাক্তন জিটিএ চেয়ারম্যান বিনয় তামাং। তিনি অভিযোগ করেন, কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের জমিতে কৃষি সম্পর্কিত কাজের বদলে মেলা বা কৃষির বাইরের কোনও কাজে ব্য়বহার করার সিদ্ধান্ত সঠিক নয়।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:২৮
কালিম্পং কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের এই এলাকাতেই উইন্টার ফেস্টিভ্যাল হওয়ার কথা।

কালিম্পং কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের এই এলাকাতেই উইন্টার ফেস্টিভ্যাল হওয়ার কথা। — নিজস্ব চিত্র।

কালিম্পঙের কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের চত্বরে শীতে উৎসব-মেলা বা ‘উইন্টার ফেস্টিভ্যাল’ করার প্রস্তুতি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে পাহাড়ে। বৃহস্পতিবার থেকে ওই গবেষণা কেন্দ্রের একাংশে আর্থমুভার ব্যবহার করে মাটি সমান করার কাজ শুরু হয়। তার পরেই তা নিয়ে হইচই পড়ে যায়। প্রথমে বিষয়টি নিয়ে সরব হন জিটিএ সদস্য তথা প্রাক্তন জিটিএ চেয়ারম্যান বিনয় তামাং। তিনি অভিযোগ করেন, কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের জমিতে কৃষি সম্পর্কিত কাজের বদলে মেলা বা কৃষির বাইরের কোনও কাজে ব্য়বহার করার সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। কারণ এতে গবেষণা কেন্দ্রেরজমি তো বটেই পরিবেশও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

যদিও বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে কোনও অনুমতির বিষয় নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন কালিম্পঙের জেলাশাসক বালাসুব্রমনীয়ন টি। তিনি বলেন, ‘‘কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে মেলা করার অনুমতির মধ্যে প্রশাসনের কোনও ভূমিকা নেই। প্রশাসন এমন কোনও অনুমতির সঙ্গে জড়িত নয়।’’

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ডিসেম্বর মাস থেকে দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে শীতের উৎসব শুরু হচ্ছে। পুলিশ ও জিটিএ একসঙ্গে উৎসব করছে। নাম দেওয়া হয়েছে, ‘মেলো ফেস্টিবল’। তা ওই এলাকায় হওয়ার কথা রয়েছে। আরও কিছু অনুষ্ঠান সেখানে হতে পারে। বিতর্ক দেখার পর বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেন কালিম্পঙের বিধায়ক রূদেন সাদা লেপচা। কালিম্পং কৃষি গবেষণা কেন্দ্রটি উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রদ্যুৎ পাল বলেন, ‘‘অনুমতি নিয়ে এলাকায় মেলা হবে। কেন্দ্রের কোনও অসুবিধা হওয়ার বিষয় নেই।’’

তবে স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, ওই কেন্দ্রের ফাঁকা জমিতে নানা চাষাবাদ হয়ে এসেছে। এক সময় হলুদ চাষও হত। এই ভাবে গবেষণা কেন্দ্রের মধ্যে মেলা বা নানা অনুষ্ঠান শুরু করা হলে আগামীতে তা আরও বাড়বে। তাতে গবেষণা কেন্দ্রের পরিবেশ এবং মানের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। প্রশাসনের অফিসারেরা জানাচ্ছেন, এই গবেষণা কেন্দ্রে বর্তমানে কৃষিজ শস্যের ভাইরাস, রোগ জীবানু সংক্রমণ নিয়ে গবেষণা চলছে। কালিম্পং, দার্জিলিং এবং সিকিমকে কেন্দ্র করে গবেষণা হয়।

প্রাক্তন জিটিএ চেয়ারম্যান বিনয় জানান, একটি শিক্ষা বা গবেষণা কেন্দ্রের মধ্যে মেলা, উৎসব করার যুক্তিটা বোঝা যাচ্ছে না। কাজের পরিবেশই তো নষ্ট যাবে। কি ধরণের চিন্তাভাবনা চলছে তা বোঝাই যাচ্ছে। একসময় ওই এলাকায় কেন্দ্রের গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থার প্রকল্পের কথা ভাবা হয়। এখনও গাড়ি রাখার জন্য তা ব্য়বহার করাই যেতে পারে। কিন্তু মেলা বা উৎসব হওয়াটা বাঞ্ছনীয় নয়।

প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর বিনয়ের সঙ্গে অনীত থাপাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তাতে অনীত পরিচালিত জিটিএ-র বিরুদ্ধে তিনি প্রায়শই সরব হচ্ছে। এমনকি, কালিম্পঙের কৃষিণ গবেষণা কেন্দ্রের এই প্রস্তাবিত মেলার জন্য প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার বিধায়ক রুদেন সাদা লেপচা-সহ জিটিএ সদস্যদের দায়ী করেছেন। যদিও তাঁরা বিনয়ের অভিযোগ নিয়ে পাল্টা এখনই কিছু বলতে চাননি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

festival Kalimpong

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy