মালদহ টাউন স্টেশনে যাত্রীদের বিক্ষোভ। সোমবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
প্রায় সাত ঘণ্টা রেল অবরোধের জেরে চরম ভোগান্তির শিকার হলেন রেলযাত্রীরা। দু’টি এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে সোমবার ভোর থেকে মালদহের রতুয়ার কুমারগঞ্জে রেল অবরোধ শুরু করেন গ্রামবাসীরা।
দার্জিলিং মেল ৭ ঘন্টারও বেশি সময় দাঁড়িয়ে ছিল মালদহ স্টেশনে। পদাতিক এক্সপ্রেস দু’দফায় মালদা ও গৌড়-মালদায় দাঁড়িয়ে ছিল প্রায় ৮ ঘণ্টা। পাঁচ ঘন্টারও বেশি সময় একলাখি-রাধিকাপুর এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে ছিল মালদহে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর বেলা বাড়ার সঙ্গেই যাত্রীদের ক্ষোভের পারদও চড়তে থাকে। কারণ ট্রেন দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও মেলেনি জল ও খাবার। তাই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। অবরোধ তুলতে না নামলেও পরে যাত্রী বিক্ষোভ সামাল দিতে নামতে হয় রেল পুলিশকে। বিহারের খেরিয়ার বাসিন্দা সিমলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কুন্দন কুমার, রেলের গ্রুপ ডি পদে পরীক্ষা দিতে কলকাতায় গিয়েছিলেন। এদিন তাঁর কলেজে পৌঁছানোর কথা। তিনি বলেন, “মঙ্গলবার অনার্সের পরীক্ষা রয়েছে। সময়মত পৌঁছাতে পারব কিনা জানিনা।” বিপাকে পড়েন, বাংলাদেশ থেকে আসা এক রোগীও। জাহিদা খাতুন নামে ওই রোগী বলেন, “আমার কলকাতায় চিকিত্সার জন্য যাওয়ার কথা। শতাব্দী এক্সপ্রেস ধরার কথা। ১১ টা বেজে যাওয়ার পরেও ট্রেন আসেনি।”
টিকিটের দাম ফেরতের দাবিতে মালদহ টাউন স্টেশনে স্টেশন ম্যানেজারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা। উত্তেজিত যাত্রীদের একাংশ অনুসন্ধান কেন্দ্রে ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সকাল ১১টা নাগাদ রেলের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
এদিন ভোর রাত থেকে রতুয়া-২ ব্লকের কয়েক হাজার গ্রামবাসী রেল অবরোধের জন্য জড়ো হতে থাকেন। তাঁদের দাবি ছিল, কুমারগঞ্জে স্টপেজ দিতে হবে হাটে বাজারে এবং তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেসের। অবরোধের জেরে মালদহ স্টেশনে একাধিক দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনের পাশাপাশি সামসি স্টেশনে হাওড়াগামী শতাব্দী এক্সপ্রেসকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। কুমেদপুরে আটকে পড়ে সাপ্তাহিক কামাখ্যা-পুরি এক্সপ্রেস। আদিনা স্টেশনে দার্জিলিং মেল, একলাখি স্টেশনে রাধিকাপুর এক্সপ্রেস, মালদহে স্টেশন গরীব রথ, হাটেবাজারে এক্সপ্রেস এবং গৌড় মালদহ স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে যায়। পানীয় জল ও খাবারের জন্য আদিনা স্টেশনে দার্জিলিং মেলের যাত্রীরা বিক্ষোভও দেখান।
ট্রেনের যাত্রী সবিতা মালি বলেন, “মালদহ থেকে অসুস্থ আত্মীয়কে শিলিগুড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলাম। ট্রেনে জল নেই। খাবার পাওয়া যাচ্ছিল না। সব মিলিয়ে চরম দুর্ভোগ হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy