Advertisement
০১ মে ২০২৪

অস্ত্র-কাণ্ড নিয়ে তৃণমূল মোর্চার চাপানউতোর

অসমে’র অস্ত্র-কান্ড নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এবং মোর্চার চাপানউতর শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার অভিযুক্তদের সবাইকে গ্রেফতারের দাবিতে তৃণমূল পাহাড়ের রাস্তায় আন্দোলনে নামতেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। পাহাড় বন্ধের হুমকিও দিয়েছেন গুরুঙ্গ। পাল্টা রাস্তা অবরোধের কথা বলেছে তৃণমূলের পাহাড়ের নেতারাও। এদিন সকালে তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সদস্যরা অস্ত্রকান্ডে প্রধান অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে দার্জিলিং পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দিয়েছে। শৈলশহরে মিছিল করে ডিএসপি অফিসে বিক্ষোভও দেখায় তৃণমূল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:১৩
Share: Save:

অসমে’র অস্ত্র-কান্ড নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এবং মোর্চার চাপানউতর শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার অভিযুক্তদের সবাইকে গ্রেফতারের দাবিতে তৃণমূল পাহাড়ের রাস্তায় আন্দোলনে নামতেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। পাহাড় বন্ধের হুমকিও দিয়েছেন গুরুঙ্গ। পাল্টা রাস্তা অবরোধের কথা বলেছে তৃণমূলের পাহাড়ের নেতারাও। এদিন সকালে তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সদস্যরা অস্ত্রকান্ডে প্রধান অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে দার্জিলিং পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দিয়েছে। শৈলশহরে মিছিল করে ডিএসপি অফিসে বিক্ষোভও দেখায় তৃণমূল। সেই সময় কালিম্পং আদালতে জাতীয় সড়ক অবরোধ মামলায় হাজিরা দিতে যান মোর্চা সভাপতি।

আদালতে বাইরে এসে গুরুঙ্গের অভিযোগ, “অসমের অস্ত্রকাণ্ডে রাজ্য সরকার দার্জিলিংকে বদনাম করতে চাইছে। জিটিএ সদস্যের নাম সামনে আনা হয়েছে। মোর্চার কর্মীদের হেনস্থা করে আলাদা রাজ্যের দাবিকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। তল্লাশি নামে পাহাড়বাসীর অনেককেই হয়রান করা হচ্ছে।” এর পরেই তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেছি। এ সব বন্ধ না হলে ১২ ঘন্টার বন্ধ ডাকব। তাতেও কাজ না হলে টানা ৭২ ঘন্টা পাহাড় বন্ধ হবে।” তবে বন্ধের দিনক্ষণ অবশ্য গুরুঙ্গ এদিন ঘোষণা করেননি।

এদিন গুরুঙ্গ রাজ্য পুলিশেরও সমালোচনা করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, “২০০১ সালে কার্শিয়াঙের কাছে সাতঘুমটিতে জিএনএলএফ নেতা সুবাস ঘিসিঙ্গ-এর উপর হামলা হয়েছিল। সেখানেও বাইরে থেকে লোকজন, অস্ত্র এসেছিল। আজ অবধি পুলিশ সেই মামলার ঠিকঠাক কিছুই কিনারা করতে পারেনি। এখন অসমের অস্ত্র মামলা নিয়ে এসে নানা কথা বলছে।”

মোর্চা সভাপতির পাহাড় বন্ধের হুমকির জেরে পিছিয়ে আসতে রাজি নন তৃণমূল নেতারাও। মূল অভিযুক্তদের দ্রুত ধরা না হলে রাস্তা অবরোধ কর্মসূচির পাল্টা হুমকি দিয়েছেন তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সভাপতি রাজেন মুখিয়া। তিনি বলেন, “অসম থেকে দার্জিলিঙে অস্ত্র নিয়ে আসা হচ্ছিল বলে আমরা শুনছি। শান্ত পাহাড়কে অশান্ত করার একটা ভয়ঙ্কর চক্রান্ত হচ্ছিল। মোর্চার নাম জড়িয়ে যাওয়ায় তাঁরা তাই ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন।”

তিনি জানান, পুলিশের তদন্তে সামনে এসেছে জিটিএ সদস্য সঞ্জয় থুলুং গোটা ঘটনার মূল চাঁই। পুলিশকে আমরা বলেছি, আগামী ২০ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি আসবেন। তার পরে মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড়ে কর্মসূচি রয়েছে। তার আগেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। নইলে আমরা বিক্ষোভ, রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি হাতে নেব।

গত ৮ নভেম্বর অসমের চিরাং জেলায় অস্ত্র বোঝাই গাড়ি আটক করে পুলিশ। ধরা হয় উমেশ কামি এবং গনেশ ছেত্রীকে। তাদের জেরা করে পুলিশ জানায়, বিপুল পরিমাণ ওই অস্ত্র দার্জিলিঙে পাঠানো হচ্ছিল। নাগাল্যান্ডের একটি জঙ্গি সংগঠনের কাছে থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল। তদন্তেই নাম উঠেছে আসে জিটিএ সদস্য সঞ্জয় থুলুং-এর। বর্তমানে তিনি পলাতক বলে পুলিশের দাবি। এরমধ্যে ৯ ডিসেম্বর ২৭ মাইল এলাকার জঙ্গল থেকে আরও কিছু অস্ত্র উদ্ধার করে সিআইডি। আলাদা রাজ্যের দাবিতে গড়া গোর্খাল্যান্ড লিবারেশন আর্মি নামের একটি সংগঠন এসব করছিল বলে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি জানায়। পাহাড় জুড়ে সঞ্জয় থুলুং এবং পলাতক আরও ১২ জনের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ।

যদিও দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদি বলেন, “অস্ত্রকান্ডের তদন্ত চলছে। কাউকে হেনস্থার কোনও বিষয়ই নেই। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি করা হচ্ছে। তৃণমূলের স্মারকলিপিও পেয়েছি। বিষয়টি দেখা হবে।” গত দুই সপ্তাহ ধরে অস্ত্রকান্ডে ধৃত উমেশ এবং গনেশ দার্জিলিঙে রয়েছে। এদিনই তাঁদের আদালতে পেশ করে পুলিশ। উমেশের জন্য ছয়জন পুলিশি হেফাজতের আবেদনও করে। কিন্তু আদালতে ছুটি শুরু হওয়ায় দুই জনকেই ৩০ জানুয়ারি অবধি জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

weapon case tmc morcha agitation darjeeling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE