প্রধাননগরে দলের পার্টি অফিসে হামলার অভিযোগের ঘটনায়, তৃণমূল এবং কংগ্রেসের দায়ের করা পাল্টা মামলায় অভিযুক্ত ৪ বিজেপি কর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি আদালতে আত্মসমর্পণ করার পরে, ৪ কর্মীই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে চুরি, হামলা চালানো, অবৈধ দখলের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল।
গত শুক্রবার প্রধাননগর এলাকার কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা বিজেপিতে যোগ দেন। সে দিন সন্ধ্যাতেই এলাকায় বিজেপির একটি পার্টি অফিস উদ্বোধন করেন তাঁরা। সে দিন রাতেই জেলা কংগ্রেসের থেকে অভিযোগ দায়ের করে দাবি করা হয়, কংগ্রেসের পার্টি অফিস দখল করে বিজেপির অফিস তৈরি হয়েছে। পরদিন সকালে ওই অফিসে হামলা চালিয়ে দেওয়াল ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপির তরফে এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়, তেমনিই কংগ্রেস এবং তৃণমূলের তরফেও বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে পাল্টা দখল, হামলা চালানোর তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়। ওই মামলাতেই সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শ্যামসুন্দর সিংহ, অজয় ঝাঁ সহ ৪ জন মঙ্গলবার আত্মসমর্পণ করেন। অভিযোগকারীদের আইনজীবী অখিল বিশ্বাস জানিয়েছেন, যে পার্টি অফিসটি কংগ্রেসের বলে দাবি করা হয়েছে, সেটি যে আসলে শ্যামসুন্দর সিহের নামে রয়েছে, তা প্রমাণ করার জন্য আদালতে বিভিন্ন নথি জমা দেওয়া হয়েছে। অখিলবাবুর দাবি, “আমাদের দাবির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েই, বিচারক জামিনের আবেদন বিচারক মঞ্জুর করেছেন।”
বিজেপির দাবি, প্রধাননগর পার্টি অফিস দখল করা নিয়ে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের তিনটি অভিযোগে পৃথক তিনটে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির আইনজীবী সংঘছনের সদস্য অখিলবাবুর প্রশ্ন “একই ঘটনায় আলাদা করে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। আইনত একই সংক্রান্ত মামলায় সব অভিযোগকে একই মামলায় উল্লেখ্য করা হয়। এ ক্ষেত্রে পুলিশ কেন এমন করল তা বুঝতে পারছি না।” শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন অবশ্য দাবি করেছেন, আইন মেনেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এ দিনে যুব কংগ্রেস ছেড়ে চলে যাওয়া ৬ সদস্যকে বহিষ্কার করার কথা ঘোষণা করল সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব। গত শুক্রবার সেই সময় যুব কংগ্রেসের দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের সভাপতি অভিজিত্ রায় চৌধুরী-সহ অনেকে নেতা-নেত্রী বিজেপিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেন। মঙ্গলবার যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য শিলিগুড়িতে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় বিধান ভবনে বসে ঘোষণা করেন, “অভিজিত্ রায় চৌধুরী, অনিন্দিতা রায়, ব্রিজপাল সিংহ, কানাইয়া পাঠক, প্রবীন অগ্রবাল এবং সিকান্দর হুসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল। তাঁদের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।” দলের তরফে জানানো হয়েছে নিয়ম মাফিক ওই ঘোষণা করা হয়েছে। দল ছেড়ে যাওয়া ওই যুব নেতাদের তরফে অভিজিত্বাবু বলেন, “আমরা বিজেপি’তে যোগ দিয়েছি। তার পর কংগ্রেস নেতৃত্ব কী করে আমাদের বহিষ্কার করছেন?”