Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

উচ্ছেদ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ল পুলিশ

হাইকোর্টের নির্দেশে মালিককে জমির দখল পাইয়ে দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন পুলিশ-প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। শিলিগুড়ির তৃতীয় মহানন্দা সেতু লাগোয়া পোড়াঝাড়ের ঘটনা। বিক্ষোভকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। কয়েক ঘন্টা প্রতিরোধ চলার পর অবশ্য সোমবার সকাল থেকে বিডিও, ম্যাজিস্ট্রেট সহ শিলিগুড়ি পুলিশের কর্তাদের একাংশের উপস্থিতিতে সওয়া চার বিঘা ওই জমির দখল উচ্ছেদ করতে যান জমির মালিক পক্ষ।

খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন বাসিন্দারা।—নিজস্ব চিত্র।

খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছেন বাসিন্দারা।—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৫ ০২:১১
Share: Save:

হাইকোর্টের নির্দেশে মালিককে জমির দখল পাইয়ে দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন পুলিশ-প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। শিলিগুড়ির তৃতীয় মহানন্দা সেতু লাগোয়া পোড়াঝাড়ের ঘটনা। বিক্ষোভকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। কয়েক ঘন্টা প্রতিরোধ চলার পর অবশ্য সোমবার সকাল থেকে বিডিও, ম্যাজিস্ট্রেট সহ শিলিগুড়ি পুলিশের কর্তাদের একাংশের উপস্থিতিতে সওয়া চার বিঘা ওই জমির দখল উচ্ছেদ করতে যান জমির মালিক পক্ষ।

তাঁদের দেখে ঘর ছাড়তে বেঁকে বসেন দখলকারীরা। আদালতের নির্দেশের প্রতিলিপি দেখালেও তাঁরা তা মানতে রাজি হননি। তাঁরা দাবি করতে থাকেন, জমির নির্দিষ্ট সীমানা তাঁদের দেখাতে পারেনি আদালতের প্রতিনিধিরা। পুলিশি নিরাপত্তায় আদালতের প্রতিনিধিরা জমি দখল মুক্ত করেন। তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ চারজন মহিলা-সহ পাঁচজনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করে। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের সকলে খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নেন। যদিও এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই পরিবারের অন্যত্র ঘরদোর সবই রয়েছে। শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি (পূর্ব) পিনাকী মজুমদার বলেন, “হাইকোর্টের নির্দেশ পালন করতে আমরা এসেছি।” মন্তব্য করতে চাননি রাজগঞ্জের বিডিও পি এন শেরপাও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিতর্কিত সওয়া চার বিঘা জমির মালিকানা রয়েছে দুলাল দাস নামে এক ব্যক্তির নামে। তিনি মারা গেলে তার দুই ছেলে গৌতম দাস, তপন দাস এবং তাঁদের পাঁচ বোন জমির উত্তরাধিকারী হন। সেই জমিতে ৪০ বছরের বেশি সময় থেকে বসবাস করছিলেন গোপাল সরকার, নেপাল সরকার, হরিনারায়ণ মল্লিক এবং কালীভক্ত মল্লিকরা। তাঁদের সঙ্গে মালিকানা নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে জমির মালিক বলে দাবি করা দুলাল দাসের পরিবার। তাতে তৃণমূলের কিছু স্থানীয় নেতার নামও জড়িয়ে যায়। তাঁদের সমর্থনের কারণেই এর আগে একাধিকবার আদালতের নির্দেশ নিয়ে দখল নিতে চাইলেও তা কার্যকর করা যায়নি বলে অভিযোগ এক পক্ষের।

দুলালবাবুদের আইনজীবী দেবাশিস কর্মকার বলেন, “১৯৯৬ সালে মামলার রায় বের হয়। এর বিরুদ্ধে চারবার রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন বিবাদী পক্ষ। তাতেও ফল তাঁদের পক্ষে না যাওয়ায় হাইকোর্টেও রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন তাঁরা। সেখানেও হেরে যাওয়ার পরেও তাঁরা ঘর ছাড়তে নারাজ ছিলেন।” অপর আইনজীবী সৌম্যজিত দত্তেরও দাবি, “সমস্ত আদালতের মামলা সরকার ও মল্লিকদের বিপক্ষে যাওয়ায় তাঁদের ঘর ছেড়ে দেওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনও রাস্তা ছিল না।” যদিও মামলায় হেরে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বিবাদী পক্ষের মধুসূদন সরকার বলেন, “আমরা জমি দখলে রাখার জন্য মামলা করে হেরেছি। আমাদের দখল ছাড়তে আপত্তি নেই। কিন্তু জমির সীমানা আমাদের নির্দিষ্ট করে দেখানো হয়নি।” তাঁদের ধোঁয়াশায় রাখা হচ্ছে বলে দাবি করেন অপর শরিক সুজন মল্লিকও। যদিও দুলালবাবুদের পক্ষে রাজেশ কর্মকার বলেন, “জমির মালিক ছিলেন আমার দাদু। আমরা উত্তরাধিকারী। কিন্তু ধোঁয়াশার কোনও ব্যপার নেই। সবই আইন মেনে আদালতের নির্দেশে হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police obstruction siliguri eviction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE