Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

উত্তেজনার ফাইনালে জয়ী সেই মহানন্দা

দমবন্ধ ফাইনালে জিতে কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবলের খেতাব ধরে রাখল মহানন্দা স্পোর্টিং। গোটা ম্যাচ ধরে এলোপাথাড়ি খেলা, বিপক্ষের পায়ে বারবার বল তুলে দেওয়া, খেলার ৮৫ মিনিটে লালকার্ড দেখে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়া, খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তা থেকে দর্শকদের রেফারির মুণ্ডপাত করে যাওয়া এই সবের পরেও তাঁরা যে বিজয়ীর হাসি হাসলেন তার পিছনে গোলরক্ষকের পাশাপাশি জিটিএসের ফরোয়ার্ড লাইনও দায়ী।

রবিবার শেষ হল শিলিগুড়ির কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবল। পুরস্কার নিচ্ছে জয়ী দল মহানন্দা স্পোর্টিং ক্লাব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

রবিবার শেষ হল শিলিগুড়ির কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবল। পুরস্কার নিচ্ছে জয়ী দল মহানন্দা স্পোর্টিং ক্লাব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

সংগ্রাম সিংহ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:১৩
Share: Save:

দমবন্ধ ফাইনালে জিতে কিরণচন্দ্র নৈশ ফুটবলের খেতাব ধরে রাখল মহানন্দা স্পোর্টিং।

গোটা ম্যাচ ধরে এলোপাথাড়ি খেলা, বিপক্ষের পায়ে বারবার বল তুলে দেওয়া, খেলার ৮৫ মিনিটে লালকার্ড দেখে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়া, খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তা থেকে দর্শকদের রেফারির মুণ্ডপাত করে যাওয়া এই সবের পরেও তাঁরা যে বিজয়ীর হাসি হাসলেন তার পিছনে গোলরক্ষকের পাশাপাশি জিটিএসের ফরোয়ার্ড লাইনও দায়ী। দ্বিতীয়ার্ধে তারা হঠাত্‌ যেন ‘চোক করে’ গেল! তারপরেও ম্যাচের ফল জিটিএসের পক্ষে ১-০ হতে পারত। তবে, সারা ম্যাচে মহানন্দা একটাই সুযোগ পেয়েছে, এবং তা গোলে পরিণত করেছে। জিটিএস একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও বারবার ব্যর্থ। না হলে ম্যাচ টাইব্রেকারেই গড়ায় না। খেলার শেষে মহানন্দার গোলরক্ষকের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন জিটিএসের এক খেলোয়াড়। তাকে কেন্দ্র করে দু’দলের আরও কিছু খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। পরে অবশ্য ক্রীড়া পরিষদ কর্তাদের হস্তক্ষেপে তা বেশিদূর গড়াতে পারেনি।

এ দিন শুরু থেকেই জিটিএসের আক্রমণের ঝাঁঝ নাভিশ্বাস তুলে দেয় মহানন্দার রক্ষণে। আগের দিন সাত গোল দেওয়ার পর এ দিন গোল করার ইচ্ছেটাই যেন মরে গিয়েছিল তাঁদের। না হলে জিটিএস আক্রমণ করবে বলেই কী তাঁরা পাল্টা আক্রমণে যাবে না? একের পর এক মিস পাস দলকে প্রায় ডুবিয়েই দিয়েছিল। ম্যাচের ২৮ মিনিটে দু’জনে নিজেদের মধ্যে রিলে পাস খেলে বিপক্ষ রক্ষণ ও গোলরক্ষককে বোকা বানান জিটিএসের যোসেফ ও কাজিম। গোল করার মুহূর্তে যোসেফের সামনে কেউ ছিলেন না। এই অর্ধে ম্যাচের গতির বিরুদ্ধেই গোল পায় মহানন্দা। ৪১ মিনিটে হেড থেকে গোল করেন কোকো সাকিবো।


রবিবার ফাইনাল খেলার একটি মুহূর্ত।


খেলার শেষে উত্তেজনা গড়ায় বচসায়।

ম্যাচের শেষে দৃশ্যতই হতাশ জিটিএস কোচ দেবজ্যোতি নাহা কোচ বলেন, “আমাদেরই জেতা উচিত ছিল। কিন্তু কিছু করার নেই। এটাই মেনে নিতে হবে।” কিন্তু দু’দুবার ম্যাচে সুবিধাজনক জায়গায় গিয়েও ম্যাচ হারার যন্ত্রণা ভুলতে তাঁদের অনেক দিন লাগবে, তা জিটিএস খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। ম্যাচের ৮৫ মিনিটের মাথায় রেফারির সঙ্গে তর্ক করে লালকার্ড দেখেন ড্যানিয়েল। আগেও একবার হলুদ কার্ড ছিল। ফলে দ্বিতীয়বার কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তিনি। এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন, প্রতিযোগিাতর সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার নিতে আসেননি।

ম্যাচের পর মহানন্দা কোচ রঘু নন্দীকে দেখে মনে হল যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। তবে জিটিএসের প্রতি সমীহ ঝরে পড়ল তাঁর গলায়। তিনি বলেন, “আমি আগের দিনই বলেছিলাম জিটিএস ভাল দল গড়েছে। এ দিন ভালও খেলেছে। তবে জয়টাই আসল।” নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র থাকায় প্রতিযোগিতার নিয়মানুযায়ী সরাসরি পেনাল্টিতে চলে যায়। সেখানেও মীমাংসা না হওয়ায় সাডেন ডেথে ফয়সালা হয় ম্যাচের।

—নিজস্ব চিত্র।

ফাইনালের সেরা- সুমন দাস (জিটিএসসি)

প্রতিযোগিতার সেরা- বেলো রজক (মহানন্দা স্পোর্টিং)

সেরা গোলরক্ষক- রাজু গঙ্গোপাধ্যায় (মহানন্দা স্পোর্টিং)

সর্বোচ্চ গোলদাতা- ড্যানিয়েল বিদেমি (মহানন্দা)

ফেয়ার প্লে- স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া, শিলিগুড়ি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE