আদিবাসী উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজে আরও গতি আনার উপরে জোর দিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানাবেন আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিরা। আজ, বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটায় ডুয়ার্সের রাজাভাতখাওয়ার প্রকৃতি বীক্ষণ ভবনে ট্রাইবাল অ্যাডভাইসরি কাউন্সিলের (টিএসি) বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। টিএসির সকল সদস্যকেই বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্যে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর থেকে চিঠিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। টিএসিরসদস্য তথা আদিবাসী বিকাশ পরিষদের বিরসা তিরকেও আশাবাদী, ওই বৈঠকে এমন কিছু পদক্ষেপ করবেন মুখ্যমন্ত্রী, যাতে আদিবাসী উন্নয়নের কাজে আরও গতি আশবে।
রাজ্যের উপজাতি উন্নয়নের জন্যে গত বছরই গঠন করা হয়েছিল ট্রাইবাল অ্যাডভাইসারি কাউন্সিল। মুখ্যমন্ত্রীকে টিএসির মাথায় বসিয়ে রাজ্যের ৯ জন উপজাতিভুক্ত বিধায়ক ও একজন সাংসদকে টিএসির সদস্য করা হয়। এর মধ্যে ডুয়ার্সের নাগরাকাটা, মাদারিহাট এবং কালচিনির বিধায়কেরা যেমন রয়েছেন, তেমনই স্থান পেয়েছেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ। উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার উন্নয়নের জন্যে পরামর্শ দেবার কাজ করবে কাউন্সিল।
গত বছর ২৩ ডিসেম্বর নবান্নতে টিএসির প্রথম বৈঠকও করা হয়। এ বারে দ্বিতীয় বৈঠক ডুয়ার্সে আয়োজিত হতে যাওয়ায় এলাকার উন্নয়ন হতে পারে এই ভেবে আশায় বুক বেঁধেছেন আদিবাসী বিকাশ পরিষদের মত সংগঠনগুলি। প্রথমে টিএসির সদস্যপদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরই স্থান দেওয়া হলেও এবারে টিএসিতে সদস্য করা হয়েছে আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সভাপতি বিরসা তিরকেকেও। রাজ্যপালের মনোনীত সদস্য হিসাবে বীরসাবাবুকে সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে। টিএসির অন্তর্ভক্তির চিঠি পেয়ে বুধবারই ডুয়ার্সে চলে আসেন বীরসাবাবু। টিএসির বৈঠকে যোগ দিয়ে কী কী বিষয়ে কাউন্সিলকে পরামর্শ দেবেন তিনি তা চূড়ান্ত করতে সোমবার বিকালে মালবাজারের পরিষদের দফতরে এক জরুরি বৈঠকও ডাকেন তিনি।
ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সম্পাদক তেজকুমার টোপ্পো, ডুয়ার্স সভাপতি পরিমল লগুন, চা শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য কমিটির আহ্বায়ক অমরদান বাক্সলা সহ অনেকেই। ‘বঙ্গবিভূষণ’-এ সম্মানিত বীরসাবাবুকে এ দিন পরিষদের তরফেও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আদিবাসী বিকাশ পরিষদের দাবি মেনে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যান দফতরের বাইরে আদিবাসী কল্যাণ বিভাগ নামের আরও একটি দফতর গত বছরই চালু করান মুখ্যমন্ত্রী। সেই দফতর নিজের হাতেই রাখেন তিনি। ওই দফতরেরই উপদেষ্টা মন্ডলীর ভূমিকায় গুরুদায়িত্ব পালন করার কথা টিএসির। তাই দ্রুত আদিবাসী মঙ্গলবিভাগের পরিকাঠামো বৃদ্ধির আবেদনের মোট ১০ দফা পরামর্শ তিনি টিএসিতে রাখবেন বলে জানান। এর মধ্যে হিন্দি মাধ্যমে শিক্ষা, জমির পাট্টা, বিপিএল কার্ডের মত বিষয়গুলো থাকবে বলে জানান তিনি। ডুয়ার্সের বন্ধ বাগানের সমস্যা মেটাতেও আদিবাসী মঙ্গল বিভাগকে সক্রিয় করার আবেদনও জানানো হবে বলে বিরসা বাবু বলেন।
ডুয়ার্সের নাগরাকাটার কংগ্রেস বিধায়ক তথা টিএসির আরেক সদস্য জোসেফ মুন্ডাও বৈঠকে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আদিবাসী উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রীর টিএসি গঠন অবশ্যই প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। কিন্তু সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে কাজে গতি আনার প্রয়োজন। তিনি বলেন, “ডুয়ার্সের মেটেলিতে আদিবাসী ছেলে মেয়েদের জন্যে আইটিআই তৈরির বিষয়ে সম্মতি মিলেছে। এখনও কলেজ স্থাপনের জন্যে জমি চিহ্নিতও হয়নি। চা শ্রমিকদের পাট্টা বিলির কাজের গতিও বাড়ানো দরকার। সব কিছুই বৈঠকে জানাব।”
বৃহস্পতিবারের রাজাভাতখাওয়ার টিএসির বৈঠকের আলোচনার বিষয়কে মূলত দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ভাগে থাকবে ২৩ ডিসেম্বরের প্রথম বৈঠকের ভিত্তিতে কাজে অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা। বৈঠকের দ্বিতীয় ভাগে মতামত ও পরামর্শ দান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy