Advertisement
E-Paper

এসজেডিএ তদন্তও সিবিআইকে দিতে জোর দাবি

সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের পরে এ বার শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) দুর্নীতি মামলার তদন্ত ভারও সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার দাবিতে মহামিছিলের ডাক দিল দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। আজ, শনিবার বিকেলে শিলিগুড়ি শহরে ওই মহামিছিল হওয়ার কথা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৪ ০৩:০৮

সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের পরে এ বার শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) দুর্নীতি মামলার তদন্ত ভারও সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার দাবিতে মহামিছিলের ডাক দিল দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। আজ, শনিবার বিকেলে শিলিগুড়ি শহরে ওই মহামিছিল হওয়ার কথা। কংগ্রেসের তরফে যিনি এসজেডিএ-কাণ্ডের সিবিআই তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন, সেই সুজয় ঘটকও লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। বাম ও কংগ্রেসের একাংশের অভিযোগ, সারদা-কাণ্ডে যেমন রাজ্য কয়েকজনকে আড়াল করতে চাইছে, তেমনই ঘটছে এসজেডিএ মামলার ক্ষেত্রেও। সেই সঙ্গে সারদা-কাণ্ডে নয়ছয় হওয়া টাকা যেমন বিদেশে পাচার হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, তেমন আশঙ্কা রয়েছে এসজেডিএ-র মামলার ব্যাপারেও। ফলে এসজেডিএ কাণ্ডের নিরেপক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তও রাজ্য পুলিশের পক্ষে করা বাস্তবে সম্ভব নয় বলে বামেদের দাবি।

জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা এসজেডিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “এত কোটি টাকা নয়ছয় হল আর চেয়ারম্যান, বোর্ড সদস্যরা কেউ জানলেন না এটা হতে পারে? চেয়ারম্যান সহ কয়েকজন বোর্ড সদস্যকে জেরা করেই পুলিশ ছাড় দেওয়ার অর্থ কী? এই মামলার ভার সিবিআইকে দিতেই হবে। আমরা প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টেও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।” প্রদেশ তৃণমূল সম্পাদক তথা জলপাইগুড়ির নেতা মৃদুল গোস্বামী অবশ্য সিআইডি তদন্তের উপরেই আস্থা রাখছেন। তাঁর বক্তব্য, “শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দুর্নীতির তদন্ত আমরাও চাই। সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সকলের শাস্তি হবে।”

মাস চারেক আগে এসজেডিএ কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চেয়ে দু’টি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে। দুটি মামলাই হাইকোর্টের বিচারাধীন। সিপিএমের পক্ষে কলকাতার বাসিন্দা বাসবী রায় চৌধুরী ছাড়াও দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী সুজয় ঘটক ওই মামলা করেছেন। সম্প্রতি দুটি মামলার জেরেই রাজ্য সরকারের দুর্নীতির ওই অভিযোগ নিয়ে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। তা ছাড়াও জন স্বার্থে আরও ২ টি মামলা হয়েছে হাইকোর্টে।

কংগ্রেস নেতা সুজয় ঘটক জানান, এসজেডিএ-র প্রাক্তন সিইও গোদালা কিরণ কুমারকে গ্রেফতার করায় কয়েক ঘন্টার মধ্যে পুলিশ কমিশনারকে বদলি করেছিল রাজ্য সরকার। তাঁর প্রশ্ন, “তা হলে এসজেডিএ-র বহু কোটি টাকার দুর্নীতিতে যদি কোনও বড় মাপের নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়ায়, তা হলে তাঁকে গ্রেফতারের সাহস দেখাবেন কোনও পুলিশ অফিসার? সে জন্যই সিবিআই তদন্ত দরকার। কলকাতা হাইকোর্টে সেই আর্জি পেশ করা হয়েছে। বিচার বিভাগের উপরে আমাদের আস্থা আছে।”

ঘটনাচক্রে, এসজেডিএ মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ জেরা করেছে দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, শিলিগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য, তৃণমূল কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা, তৃণমূলের জলপাইগুড়ির সাংগঠনিক সভাপতি চন্দন ভৌমিককেও। তবে কংগ্রেস নেতা তথা এসজেডিএ সদস্য শঙ্করবাবুও চাইছেন সিবিআই তদন্ত। তিনি বলেন, “এসজেডিএ নিয়ে সিবিআই তদন্ত হোক। তা হলে প্রকৃত সত্য সামনে আসবে।” জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার এক ধাপ এগিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা শীঘ্রই সিবিআই তদন্তের দাবিতে আন্দোলনে নামবেন। জলপাইগুড়ি পুরসবার চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেতা মোহন বসু বলেন, “তৃণমূল জলপাইগুনি জেলার সাংগঠনিক সবাপতিকে ওি মামলায় পুলিশ জেরা করেছে। তার বেশি কিছু হয়নি। তাই পুলিশ নয়, সিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য আন্দোলন করব।”

বামেদের তরফে সিপিআই-র দার্জিলিং জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন॥

এসজেডিএ-র বিভিন্ন প্রকল্পে অন্তত ৮০ কোটি টাকার দুর্নীতি অভিযোগ ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তৎকালীন সিইও শরদ দ্বিবেদী প্রধাননগর থানায় অভিযোগ জানান। বাগডোগরা, মালবাজার এবং ময়নাগুড়ি শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো এবং মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি তৈরির কাজে অন্তত ৬০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে জোড়াপানি নদী খাত পরিষ্কার, শহরে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানোর কাজ নিয়েও পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ দফতরের ৩ জন বাস্তুকারকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করা হয় ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার এবং কর্মী মিলিয়ে ১১ জনকে। তৎকালীন সিইও গোদালা কিরণ কুমার মালদহের জেলাশাসক থাকাকালীন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তিনি জামিন পেয়ে যান। ওই ঘটনার জেরে সরিয়ে দেওয়া হয় তৎকালীন পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামনকে। রাজ্য সরকারের তরফে ওই মামলা ভার সিআইডি-কে দেওয়া হয়। সম্প্রতি এসজেডিএ মামলার বিষয়টি নজরে এসেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র। তারাও ইতিমধ্যে দফতরের বাস্তুকারদের কলকাতায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

sjda cbi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy