Advertisement
E-Paper

কর্তব্যে গাফিলতি শিক্ষকদের, কড়া ব্যবস্থার ইঙ্গিত

কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ৪২ জন কলেজ শিক্ষককে শো-কজ করার তিন মাস পরেও ৩২ জন কোনও উত্তর না-দেওয়ায় ক্ষুব্ধ গৌড় বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক সনাতন দাস। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে কলেজগুলিতে পড়াশোনার পরিবেশের মান বাড়াতে কী ধরনের কড়া পদক্ষেপ করছে বিশ্ববিদ্যালয় তা জানান সনাতনবাবু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৩২

কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ৪২ জন কলেজ শিক্ষককে শো-কজ করার তিন মাস পরেও ৩২ জন কোনও উত্তর না-দেওয়ায় ক্ষুব্ধ গৌড় বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক সনাতন দাস। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে কলেজগুলিতে পড়াশোনার পরিবেশের মান বাড়াতে কী ধরনের কড়া পদক্ষেপ করছে বিশ্ববিদ্যালয় তা জানান সনাতনবাবু। সেই সময়ে তিনি বলেন, “পরীক্ষার খাতা দেখা, প্রশ্নপত্র তৈরি করা, প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা ও ত্রুটিপূর্ণ মূল্যায়নের অভিযোগে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ জন শিক্ষককে শো কজ করা হয়েছিল। তিন মাস আগে শো-কজ করা হলেও মাত্র ১০ জন জবাব দিয়েছেন। বাকিদের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি। ওই সমস্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সেই সঙ্গে পরীক্ষায় গণ টোকাটুকি রুখতে কলেজগুলি থেকে হোম সেন্টার তুলে দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ওই সাংবাদিক বৈঠকে না-থাকলেও উপাচার্য গোপাল মিশ্র পরে বিষয়টি নিয়ে বলেন, “খাতা দেখা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভুল মূল্যায়নে পড়ুয়াদের হয়রানি হয়। আবার তথ্য জানার অধিকার আইনে কোনও পড়ুয়ার যখন নম্বর বেড়ে যায় তখন খাতা দেখার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। সেটাই আমরা বন্ধ করতে চাই। তাই শিক্ষকদের আরও সতর্ক হওয়া দরকার।”

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ শিক্ষাবর্ষে খাতা দেখার ক্ষেত্রে গরমিল দেখেন কর্তৃপক্ষ। একটি কলেজের ইতিহাসের এক শিক্ষককে ১৫০০ খাতা দেখতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেখা যায় ১৪০০-র ওপর পড়ুয়া গড়ে ২৪ নম্বর পেয়েছে। ফলে ওই খাতা পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরকে ফের দেখানোর ব্যবস্থা করাতে হয়। আবার অঙ্কের এক শিক্ষকের কাছে এক পড়ুয়া ৮৩ নম্বর পান। পরে প্রধান পরীক্ষকের কাছে দেখা যায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৩। ভূগোলের এক ছাত্রকে ১৫ নম্বরের জায়গায় ৬৫ দিয়ে দেন এক শিক্ষক। এ ছাড়া পড়ুয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে ৪১ নম্বর বেড়ে ৬১ হওয়ার মতো ঘটনাও রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেই জানা যায়, গত শিক্ষাবর্ষের শেষে ওই ৪২ শিক্ষককে শো কজ করা হয়েছিল। একসঙ্গে এতজন শিক্ষককে শো কজ করার ঘটনা নজিরবিহীন। ফের এই শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। যদিও শিক্ষক সংগঠনগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্র-শিক্ষকের শতকরা অনুপাত এতটাই বেশি যে তাতে শিক্ষকদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। পাস কোর্সের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে প্রচুর খাতা দিয়ে যে সময় বেঁধে দেওয়া হয় তাতে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে শিক্ষকদের একাংশ সমস্যায় পড়েন বলে তাঁদের অনেকের দাবি।

ওয়েবকুপার জেলা সম্পাদক নরেশচন্দ্র রায় বলেন, “শিক্ষকদের আরও যত্নবান হওয়া উচিত। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ গাফিলতি করতে তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিলে আপত্তির কিছু থাকতে পারে না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরও কিছু বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার। অনেক সময়েই দেরি করে খাতা দিয়ে দ্রুত তা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তাতে সমস্যা হতে পারে।” ওয়েবকুটার জেলা সম্পাদক সোহরাব আলিও বলেন, “খাতা দেখার ক্ষেত্রে কতৃর্পক্ষ যেভাবে তাড়াহুড়ো করেন, তাতে অনেক সময় সমস্যা হয়। তবে শিক্ষকদেরও দায়িত্ববান হতে হবে।”

এদিকে আগামী ২ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের অনার্স পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। তখন থেকেই হোম সেন্টার উঠে যাচ্ছে। ২০১৩ শিক্ষাবর্ষে ১৩৯০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে টুকলি করার অভিযোগে ধরা হয়েছিন। ইটাহারের মেঘনাদ সাহা কলেজে ৭১ জন ছাত্র-ছাত্রী এক্সফেলও হয়। টুকলি রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হন পরীক্ষা নিয়ামকও। তার পরেই হোম সেন্টার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সব কটি ছাত্র সংগঠনের তরফেই ওই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

gourbanga university professors duty negligence chanchal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy