মালদহের ইংরেজবাজারে বিদ্যুৎ দফতরে ঢুকে আধিকারিককে শাসাচ্ছেন বিশ্বজিৎ রায়। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
আগে কখনও এমন ভূমিকায় দেখা যায়নি বছর তিরিশের যুবককে। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের প্রতি মারমুখী বিশ্বজিৎ রায় ওরফে বুলেটকে টিভির পর্দায় দেখে স্তম্ভিত মালদহের অনেকেই।
ইতিহাসের স্নাতক বুলেটের মতো ‘ভাল ছেলে’ যে তৃণমূলে ঢোকার পরে এতটা বদলে যাবে, তা ভাবতে পারছেন না তাঁর কলেজের এক শিক্ষক। তিনি বলেন, “কলেজে বুলেট এমন ছিল না। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে তেমন যোগাযোগ নেই। এ দিন ছবিতে ওঁকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি। এতটা বদলে গেল কী ভাবে?” সচ্ছল পরিবারের বুলেটকে টিভিতে দেখে এ দিন আত্মীয়-স্বজনদের অনেকেই হতভম্ব।
তৃণমূল যুব সংগঠনের মালদহ জেলার সহ-সভাপতি বিশ্বজিতের নাম এর আগে সে ভাবে জেলার রাজনৈতিক আন্দোলনের খবরে উঠে আসেনি। তবে তৃণমূলের সদস্যদের সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের সাম্প্রতিক ঘটনাক্রমের নিরিখে দেখলে বিশ্বজিৎ ওরফে বুলেট ব্যতিক্রমী নন। গত বৃহস্পতিবার পুরাতন মালদহের মঙ্গল বাড়িতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাসের নেতৃত্বে কর্মী-সমর্থকেরা জাতীয় সড়কের প্রকল্প আধিকারিক সন্দীপ কুমার শর্মাকে জোর করে বেহাল রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ। তাঁকে প্রায় ৫০০ মিটার পথ হেঁটে ঘুরতে বাধ্য করা হয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের আগে পুরাতন মালদহের মীন ভবনে নির্বাচনের কাজ করার সময় কর্তব্যরত অবস্থায় এক সরকারি কর্মচারিকে মারধরের অভিযোগ ঘটে। অভিযুক্ত পুরাতন মালদহ পুরসভার তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান স্বাধীন ঘোষ। শুধু মালদহে দু’সপ্তাহের মধ্যে তিনবার সরকারি কর্মীকে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে।
প্রত্যাশিত ভাবেই এ দিনের ঘটনায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রের অভিযোগ, “শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা যখন আধিকারিকদের মারধর করছেন, তখন নিচু তলার কর্মীরা এমন ঘটনা ঘটাবে সেটাই বাস্তব।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, “রাজ্যের শাসন একেবারে ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।” আর বিজেপি-র জেলা সভাপতি শিবেন্দু শেখর রায় বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যদি বলতে পারেন, পুলিশকে চাবকানো উচিত তা হলে তাঁর দলের কর্মীরা তো এমন ঘটনা ঘটাবেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy