দলের প্রদেশ সভাপতির বহিষ্কারের হুমকির পরে, পাল্টা চাপ তৈরি করতে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের ৬ কংগ্রেস সদস্য। বামেদের দখলে থাকা জেলা পরিষদ বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলানোয় দলের ছয় সদস্যকে বহিষ্কার করা হবে বলে শুক্রবার জানিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। এরপরে শনিবার দুপুরে জেলা পরিষদের কংগ্রেসের বিরোধি দলনেতা তথা দলের জেলা সহ সভাপতি পূর্ণেন্দু দে অনাস্থার পক্ষে থাকা দলের বাকি ৫ সদস্যদের সঙ্গে রায়গঞ্জে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের পর পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “বামফ্রন্টকে জেলা পরিষদ থেকে সরিয়ে জেলার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থেই আমরা তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সভাধিপতি ও সহকারি সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছি। প্রদেশ সভাপতি জেলাবাসীর স্বার্থ না দেখে আমাদে র দল থেকে বহিষ্কার করলে ডানপন্থী কোনও দলে যোগ দেব আমরা।”
যদিও, সেই ডানপন্থী দল তৃণমূল কিনা তা অবশ্য স্পষ্ট বলতে চাননি পূর্ণেন্দুবাবুরা। তিনি বলেন, “পরিবেশ ও পরিস্থিতি না বুঝে দিশাহীন নেতৃত্বের কারণে একটি দল নষ্ট হতে বসেছে। আগে আমাদের বহিষ্কার করা হোক, তারপর তৃণমূলে যোগ দেব কিনা ভাবা যাবে। এটা অসম্ভবের কিছু নয়।”
এ বিষয়ে জেলা কংগ্রেসের মধ্যেই দ্বিমত রয়েছে বলে নেতারা দাবি করেছেন। রাজ্য নেতৃত্ব একতরফা সিদ্ধান্ত না নিয়ে জেলার সঙ্গে আলোচনা করেই পদক্ষেপ করুক, এই দাবি উঠেছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। এর আগে অবশ্য মোহিতবাবু অনাস্থার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। বামেদের হঠানোই মূল উদ্দেশ্য বলে তাঁর দাবি ছিল। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “রাজ্যের কোনও সিদ্ধান্তের পেছনে জেলারও ভূমিকা থাকে। এ বিষয়ে জেলা সভাপতির নেতৃত্বে আলোচনা করে সেই ভূমিকা স্পষ্ট করা হবে।” গত পঞ্চায়েত ভোটে ২৬টি আসনের মধ্যে ১৩টি আসনে জিতে জেলা পরিষদের ক্ষমতায় আসে বামফ্রন্ট। সিপিএম ১০টি, আরএসপি ২টি ও ফরওয়ার্ড ব্লক একটি আসন পায়। কংগ্রেস ও তৃণমূলের দখলে ৮টি ও ৫টি আসন যায়। সম্প্রতি বামেদের ৬ সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। শুক্রবার জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে ও জলপাইগুড়ির ডিভিশনাল কমিশনারের কাছে জেলা পরিষদের ১৭ জন সদস্যের পেশ করা ওই অনাস্থায় বামফ্রন্টের দলত্যাগী ৬ সদস্য-সহ কংগ্রেসের ৬ ও তৃণমূলের ৫ সদস্য সই করেছিলেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “উন্নয়নের স্বার্থে সৎ মানসিকতা সম্পন্ন যে কেউ আমাদের দলে যোগ দিতে পারেন।” জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বীরেশ্বর লাহিড়ী এ দিন বলেন, “জেলায় কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে কোনও ফারাক নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy