Advertisement
E-Paper

থানা থেকে টেনে এনে মার, যুব নেতা গ্রেফতার চাঁচলে

থানার ভিতর থেকে এক পুলিশ অফিসারকে জামার কলার ধরে বাইরে টেনে নিয়ে এসে মারধরের অভিযোগে তৃণমূলের যুব নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মালদহের চাঁচল থানায় শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। চাঁচল বাস স্ট্যান্ডে রাখা দাবিদারহীন একটি বাইক উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছিলেন ওই অফিসার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৪ ০১:২৮

থানার ভিতর থেকে এক পুলিশ অফিসারকে জামার কলার ধরে বাইরে টেনে নিয়ে এসে মারধরের অভিযোগে তৃণমূলের যুব নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। মালদহের চাঁচল থানায় শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। চাঁচল বাস স্ট্যান্ডে রাখা দাবিদারহীন একটি বাইক উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছিলেন ওই অফিসার। পরে তা এক দলীয় কর্মীর বলে দাবি করে থানায় যান রামকৃষ্ণ গোস্বামী নামে ওই যুব নেতা। তিনি চাঁচল অঞ্চল তৃণমূল যুবার সভাপতি। কিন্তু নথিপত্র ছাড়া ওই বাইক ছাড়তে রাজি হননি এএসআই নিশিকান্ত দাস। তারপরেই ওই নিগ্রহের ঘটনাটি ঘটে।

নির্বাচনের মুখে থানায় ঢুকে পুলিশ অফিসারকে নিগ্রহের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ধৃত যুব নেতাকে চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হলে তার জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আদালত সূত্রে খবর, যুব নেতার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ৩৫৩ ধারা খাটে না বলে বিচারককে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে বিচারক তনুময় কর্মকারকে আইনজীবীদের উদ্দেশে স্পষ্ট ভাষায় বলতে শোনা যায়, একশ্রেণির নেতাদের দৌরাত্ম্য এমন বেড়েছে যে তাঁরা থানায় গিয়ে পুলিশকে হুমকি দেন। এর পরেই যুব নেতার জামিন নাকচ করেন বিচারক।

মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ শুধু বলেন, “পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে অভিযুক্ত নেতা ছাত্র পরিষদ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তার পরে তিনি তৃণমূল যুবার দায়িত্ব পান। চাঁচল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভাঙচুর, মারপিটের দুটি মামলায় তাঁর জড়ায়। কলেজে এখনও ওই ভোট হয়নি। ঘটনার জেরে মালদহে জেলায় অস্বস্তিতে তৃণমূল। নিগৃহীত পুলিশ অফিসার নিশিকান্তবাবু করতে রাজি হননি। তবে থানার একাধিক পুলিশকর্মী জানান, তৃণমূল নেতার একাংশ বিষয় মেটাতে নিশিকান্তবাবুকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি এতটাই অপমানিত যে প্রয়োজনে চাকরি ছাড়বেন বলেও জানিয়ে দেন। ধৃত নেতা অবশ্য দাবি করেছেন, “ওই পুলিশ অফিসারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। কিন্তু তাকে আমি মারধর করিনি।” জেলা তৃণমূল সভানেত্রী সমাজ কল্যাণমন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “এই ঘটনার কথা কেউ আমাকে জানায়নি। তবে এমন হয়ে থাকলে কাম্য নয়। খোঁজ নিচ্ছি।”

দাবিদার না মেলায় শনিবার রাতে বাস স্ট্যান্ড থেকে একটি মোটবাইক নিয়ে থানায় আসেন এএসআই নিশিকান্তবাবু। কিছুক্ষণ বাদেই থানায় যান যুব নেতা রামকৃষ্ণবাবু। বাইকটি তৃণমূলের এক কর্মীর বলে তা ছেড়ে দিতে বলেন তিনি। কিন্তু নথিপত্র না দেখালে মোটর বাইক ছাড়া হবে না বলে ওই অফিসার জানিয়ে দেওয়ায় দুজনের তর্ক বেঁধে যায়। এর পরেই খেপে গিয়ে নিশিকান্তবাবুর জামার কলার ধরে টানতে টানতে যেখানে মোটর বাইকটি রাখা ছিল সেখানে নিয়ে আসেন ওই যুব নেতা বলে অভিযোগ। সেখানে তাকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। যুব নেতার হুমকি-চিৎকারে ছুটে আসেন আইসি তুলসীদাস ভট্টাচার্য় সহ থানার পুলিশ কর্মীরা। নিশিকান্তবাবুকে উদ্ধার করে ওই যুব নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। সরকারি কর্মীকে নিগ্রহ ও কাজে বাধা দেওয়ায় ৩৫৩ ধারা সহ মোট ৫টি ধারায় যুব নেতার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তৃণমূল যুবার চাঁচল-১ ব্লকের সাধারণ সম্পাদক সুমিত সরকার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তৃণমূলের চাঁচল-১ ব্লক সভাপতি মজিবর রহমান বলেন, “এ ধরনের আচরণ দল কখনও সমর্থন করে না। এমন ঘটনা ভবিষ্যতে যেন কখনও না ঘটে সে জন্য দলের নেতা কর্মীদের সতর্ক করা হবে।”

বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে সরব। চাঁচল-১ ব্লক কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনারায়ণ মজুমদার বলেন, “ভোটের মুখে পুলিশকেই যদি শাসকদলের নেতা-কর্মীর হাতে হেনস্থা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা তা বোঝা যাচ্ছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে শুধু কড়া ব্যবস্থা নেওয়াই নয়, বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে।” সিপিএমের চাঁচল জোনাল কমিটির সম্পাদক হামেদুর রহমান বলেন, “শাসক দলের নেতা কর্মীরা যা খুশি তাই করছে। এভাবে পুলিশকে মার খেতে হলে তো অবাধ-শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে কী না তা নিয়েই আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।”

বুথ অফিস ছাই। তৃণমূলের বুথ অফিস আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার দুপুরে মাথাভাঙা থানার নয়ারহাটে ওই ঘটনা ঘটে। মাথাভাঙা থেকে দমকলের দুটি ইঞ্জিন আগুন নেভায়। কী ভাবে আগুন লাগল পুলিশ ও দমকল দেখছে।

chachol
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy