নাগরিক সভায় বলছেন গৌতম দেব। ছবি: দিব্যেন্দু দাস।
শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ) আয়োজিত নাগরিক সভাকে ভোটের প্রচারে ব্যবহারের অভিযোগ উঠল সংস্থার চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। শনিবার শিলিগুড়ির সেবক রোডে নাগরিক সভায় বাসিন্দাদের নানা অভিযোগের কথা শুনতে শুনতে এক সময়ে মন্ত্রী বলে ওঠেন, “এই সমস্ত কাজ শিলিগুড়ি পুরসভার করার কথা। আমি এখানে পুরসভার প্রতিনিধি হয়ে আসিনি। এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে হলে আমাকে পুরসভা দিন। আমি ছ’মাসের মধ্যে সব সমস্যা সমাধান করে দেব।”
মন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পরেই নাগরিক মহলে আলোড়ন পড়ে যায়। কারণ, এখনও শিলিগুড়ি পুরভোটের দিন ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু, মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবে গৌতমবাবুকে তুলে ধরে দলের তরফে একাংশ প্রচারে নেমে পড়েছেন। খোদ গৌতমবাবুকেও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে। সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে এভাবে পুরভোটে জেতানোর আর্জি রাখাটা একেবারেই বিধি বহির্ভূত বলে অভিযোগ করেছেন উপস্থিত নাগরিকদের অনেকেই।
এই ঘটনায় সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার অভিযোগ করেছেন, মন্ত্রী সরকারি নিয়ম মানার অপেক্ষা করছেন না। জীবেশবাবুর কথায়, “এসজেডিএ-এর অনুষ্ঠান মানে সরকারি টাকা খরচ। আমজনতার টাকা। সেই টাকায় অনুষ্ঠান করে পুরভোটে জেতানোর আর্জি রাখাটা নীতির পরিচয় দেয় না।” সিপিএমের একাংশের তরফে গোটা বিষয়টি রাজ্য নির্বাচন দফতরে জানানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন বসুর কটাক্ষ, গৌতমবাবুর কাছ থেকে এমন বক্তব্য অপ্রত্যাশিত নয়। তাঁর দাবি, “বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারি খরচে নাগরিক সভার মোড়কে শহরে ভোটের প্রচার করা হচ্ছে। এটা শহরবাসী বুঝতে পারছেন। যদি দলের তরফে খরচ করে নাগরিক সভা ডাকা হতো তা হলে কারও কিছু বলার থাকত না।”
কংগ্রেসের তরফে দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার এই ভোট প্রচারের বিরোধিতায় পথে নামার কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “গৌতম দেব কোনও আইন মানছেন না। একের পর এক সরকারি অনুষ্ঠানকে দলীয় প্রচারসভা করে তুলেছেন। এর প্রতিবাদে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পাল্টা নাগরিক সভা করে এর বিরুদ্ধে প্রচারে নামব।”
এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় নাগরিক সভার নির্ধারিত থাকলেও মন্ত্রী পৌঁছন রাত আটটায়। দেরিতে অনুষ্ঠান শুরু হলেও বিভিন্ন সমস্যায় জেরবার এলাকার মানুষ জন অপেক্ষায় ছিলেন। মন্ত্রীর সামনে তাঁদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরতে। এদিন মন্ত্রীকে সামনে পেয়ে ৪১-৪২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সমস্যার ঝাঁপি তুলে ধরেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাস্তার কাজ জোরকদমে শুরু হলেও বেছে বেছে কয়েকটি রাস্তা সারানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন এক বাসিন্দা রামেশ্বর শাহ। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে পানীয় জলের সমস্যা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্যা রয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন অনেকে। পুর সমস্যা নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকে। বস্তুত তার জবাব দিতেই মন্ত্রী মঞ্চে ওঠেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy