Advertisement
০৬ মে ২০২৪

প্রার্থী নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ইস্তফা তৃণমূল নেত্রীর

শিলিগুড়ি পুরভোটে প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলের কোন্দল তুঙ্গে। তা নিয়ে দ্বন্দ্বে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে আগেই। এ বার সোমবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তৃণমূলের শিলিগুড়ির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সভানেত্রী জনা বাগচী। ওই ওয়ার্ডে তাঁর বাড়িতেই তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় চলত। এ দিন এলাকার দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতা জয়দীপ নন্দীর কাছে ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে তিনি ওই কার্যালয়ও বন্ধ করে দিয়েছেন।

তৃণমূল থেকে ইস্তফা জনা বাগচীর।

তৃণমূল থেকে ইস্তফা জনা বাগচীর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৫ ০২:২২
Share: Save:

শিলিগুড়ি পুরভোটে প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলের কোন্দল তুঙ্গে। তা নিয়ে দ্বন্দ্বে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে আগেই। এ বার সোমবার রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে দল থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তৃণমূলের শিলিগুড়ির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সভানেত্রী জনা বাগচী।

ওই ওয়ার্ডে তাঁর বাড়িতেই তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় চলত। এ দিন এলাকার দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতা জয়দীপ নন্দীর কাছে ইস্তফা পত্র পাঠিয়ে তিনি ওই কার্যালয়ও বন্ধ করে দিয়েছেন। এলাকা থেকে তাঁর নাম প্রার্থী হিসাবে প্রস্তাব করাও হয়েছিল। তিনি ওই ওয়ার্ডে উপনির্বাচনে দলের প্রার্থীও ছিলেন। কিন্তু তাঁকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে না বুঝতে পেরে তিনি দল ছাড়ার কথা জানান বলে দলেরই একাংশ মনে করছে। যদিও তাঁর দাবি, প্রার্থী হতে না পেরে দল ছাড়ার ব্যাপার নেই। কেন না এখনও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়নি। তৃণমূলের অন্দরের খবর ওই এলাকা থেকে জনাদেবী ছাড়া আরও তিন জনের নাম প্রার্থী হিসাবে প্রস্তাব করা হয়েছে। তার মধ্যে স্বাগতা দাস নামে এক নেত্রীকে প্রার্থী করতে চাইছে তৃণমূল। সে কারণেই জনা বাগচী এবং তাঁর অনুগামীরা ক্ষুব্ধ।

জনা বাগচীর অভিযোগ, “দলের একাংশ জমির দালালির সঙ্গে যুক্ত হয়ে নীতি আদর্শ বিসর্জন দিয়েছেন। সমস্যা নিয়ে দলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তিনি কথা বলেননি। উল্টে ওই এলাকার দলের দায়িত্বে থাকা জয়দীপ নন্দীর সঙ্গে কথা বলতে বলেন।” গরিব বাসিন্দাদের জন্য কাজ করতে চাইলেও দলের একাংশ তাঁকে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন জনা দেবী। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের গরিব বাসিন্দাদের উন্নয়নের জন্য তিনি সে সব কাজের প্রস্তাব দেন তা জেলা নেতৃত্ব শোনেন না বলেও তাঁর অভিযোগ।

জয়দীপ নন্দী বলেন, “জনাদেবীর কোনও চিঠি পাইনি। এখন ভোটের মুখে কেন দল ছাড়তে চাইছেন তা সকলেই বুঝতে পারছেন।”

প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে অন্য অনেক ওয়ার্ডেই। ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে শ্যামল রায়কে প্রার্থী করতে দাবি জানিয়ে নাম পাঠিয়েছেন অনুগামীরা। অন্য দিকে ওই ওয়ার্ড থেকে জিতেন পাল নামে অপর এক জনকে প্রার্থী করার কথা এগিয়েছে। তা নিয়ে গত রবিবার লিম্বু বস্তিতে মন্ত্রী একটি অনুষ্ঠানে গেলে শ্যামলবাবুর অনুগামীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

আবার দলের একটি সূত্রই জানিয়েছে, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা দীপক শীল প্রার্থী হতে চেয়ে দাবি তোলেন। অথচ প্রাক্তন কাউন্সলর তথা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা ওই ওয়ার্ডেই প্রার্থী হতে নাছোড়। দল রঞ্জনবাবুকেই সম্ভাব্য প্রার্থী করতে চায়। তা নিয়ে দীপকবাবু হইচই করলে তাঁকে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে দাড়াঁনোর কথা প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়। দীপকবাবুর অনুগামীরা ৩৭ থেকেই তাঁকে দাঁড় করানোর দাবি তোলেন। তা নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁদের বাদানুবাদ হয়।৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে চেয়ে আরেক দাবিদার রয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন বরো কমিটির চেয়ারম্যান সমীরণ সূত্রধর। রঞ্জনবাবু গত পুরভোটে যে ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন সেখানে তিনি এ বছর এক শিক্ষক নেতা জিতেন সরকারকে প্রার্থী করার পক্ষে। এলাকার লোকজন অন্য কাউকে চাইছে না বলে দলের বৈঠকে তিনি জানিয়েও দিয়েছেন বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।

এ সব নিয়ে ডামাডোলে জেলা তৃণমূলের পক্ষে এখনও প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন ওয়ার্ডের একাধিক নাম সন্বলিত তালিকা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীই এ দিন ওই সম্ভাব্য তালিকা নিয়ে কলকাতায় রওনা হন।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বের কাছে সম্ভাব্য তালিকা পাঠানো হচ্ছে। দ্রুত সমস্ত চূড়ান্ত করা হবে। ক্ষোভ বিক্ষোভের কোনও ব্যাপার নেই। আলোচনা করেই সব ঠিক করার হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE