Advertisement
E-Paper

পুলিশ ‘নিষ্ক্রিয়’ থাকায় ফের হামলা, অভিযোগ

পারিবারিক বিবাদের জেরে গোলমাল অব্যাহত দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের কাদিঘাট এলাকায়। তাতে আঁচ পড়েছে শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলেরও। জমি নিয়ে বিবাদের জেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে এলাকার তৃণমূল সমর্থক সুশীল মজুমদারের বাড়িতে একই দলের সমর্থক মনোতোষ সরকারের দলবল সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বাড়ি ভাঙচুর ও মারধর করে বলে অভিযোগ উঠেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৫৭

পারিবারিক বিবাদের জেরে গোলমাল অব্যাহত দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের কাদিঘাট এলাকায়। তাতে আঁচ পড়েছে শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দলেরও।

জমি নিয়ে বিবাদের জেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে এলাকার তৃণমূল সমর্থক সুশীল মজুমদারের বাড়িতে একই দলের সমর্থক মনোতোষ সরকারের দলবল সশস্ত্র হামলা চালিয়ে বাড়ি ভাঙচুর ও মারধর করে বলে অভিযোগ উঠেছিল। অস্ত্রের আঘাতে সুশীলবাবু, তাঁর ছেলে, তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী কল্পনাদেবী ও তাঁর ভাইপো মোট চার জন জখম হয়ে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। শনিবার রাতেও জখম কল্পনাদেবীদের ফাঁকা বাড়িতে চড়াও হয়ে ফের ভাঙচুর ও লুঠপাটের অভিযোগ উঠল। রবিবার তাঁর গঙ্গারামপুর থানাতে এ নিয়ে ফের অভিযোগ জানান।

বৃহস্পতিবারের গণ্ডগোলে মনোতোষবাবুদের লোকজনের পক্ষেও তাদের দু’জন জখম হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছিল। দু’পক্ষই গত শুক্রবার গঙ্গারামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ হাত গুটিয়ে থাকাতেই শনিবার রাতে ফের কল্পনাদেবীর ফাঁকা বাড়িতে দুষ্কৃতীরা হামলা চালানোর সাহস পেল। ঘটনার জেরে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। এমনকী, পুলিশ তদন্ত করতে গ্রামেও যায়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুশীলবাবু অভিযোগ করেন, “দু’টি হামলার ঘটনায় গঙ্গারামপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনও পর্যন্ত থানা থেকে কোনও পুলিশ তদন্তে আসেনি। হাসপাতালে ভর্তি আহতদের সঙ্গেও পুলিশ কথা বলেনি।” তাঁদের ক্ষোভ, “অভিযুক্তরা এলাকায় প্রকাশ্য ঘুরে হুমকি দিচ্ছে। হাসপাতাল থেকে ফিরে এলাকায় কতটা নিরাপদে থাকতে পারব, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।” মনোতোষবাবু অবশ্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “সুশীলবাবুরাই আমাদের উপর হামলা করে এখন মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।”

বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরই স্থানীয় তৃণমূল নেতা রতন ঘোষ বলেছিলেন, পারিবারিক গণ্ডগোলের জেরে ঘটনা ঘটেছিল। দু’পক্ষকে নিয়ে বসে মিটমাট করা হবে। কিন্তু ওই ঘটনার চারদিন পরেও কেন বিবাদ অব্যাহত? এই প্রশ্নে এ দিন রতনবাবু বলেন, “কোনও বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুঠপাট হয়নি। মিথ্যা অভিযোগ। বরং ওরাই ঘর থেকে জিসিপত্র বের করে নিয়ে যাচ্ছে। এলাকায় লোক পাঠিয়ে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।” দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “বাসিন্দাদের ভয়ের কিছু নেই। এলাকায় ডিএসপিকে পাঠিয়ে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার বাসিন্দা দুই তৃণমূল সমর্থক বন্ধু সুশীলবাবু ও মনোতোষবাবু মিলে কাদিঘাটে ১০ কাঠা জমি কেনেন। পরে ওই জমি মনোতোষবাবু গোপনে নিজের নামে করে নেন বলে সুশীলবাবুর অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদের শুরু। এর জেরেই সুশীলবাবুর ভাইয়ের স্ত্রী কল্পনাদেবীকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ কল্পনাদেবী ওই ঘটনায় মনোতোষবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও গঙ্গারামপুর থানা নিষ্ক্রিয় থাকে বলে অভিযোগ। গত বৃহস্পতিবার কল্পনাদেবী বুনিয়াদপুরে গিয়ে মহকুমা আদালতের দ্বারস্থ হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। বিচার তেয়ে আদালতে যাওয়াতেই হামলা হয় বলে কল্পনাদেবীদের অভিযোগ।

এলাকার একাংশ বাসিন্দার ক্ষোভ, “পাড়ার গণ্ডগোলে কেউ থানা-পুলিশ করলে তার বাড়ি ভেঙে দেওয়া হবে বলে শাসক দলের স্থানীয় কিছু নেতা-কর্মী হুমকি দিচ্ছেন।” দলের দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “অন্যায় কাজের সঙ্গে যুক্তরা যে দলেরই হোন, পুলিশকে আইনগত ব্যবস্থা। ব্যক্তিগত গণ্ডগোলে দলকে জড়িয়ে কেউ ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইলেও তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

north dinajpur gangarampur kadighat sushil majumder tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy