লোকসভা ভোটের মুখে বাইক বাহিনীর দৌরাত্ম্যের অভিযোগ উঠেছে কোচবিহারের পেটলায়। বুধবার রাতের ওই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের চারজন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাঁচটি বাইকও আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি, পুলিশের অনুমতি ছাড়া এলাকায় বৈঠক করার অভিযোগে ফরওয়ার্ড ব্লকের বিরুদ্ধেও নির্বাচন বিধিভঙের অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার জেরে পেটলার বোরোডাঙায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। তৃণমূলের পক্ষে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ভোট প্রচার সেরে বাড়ি ফেরার পথে ওই কর্মীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফরওয়ার্ড ব্লকেরও দাবি, ওটা ঘরোয়া আলোচনা সভা ছিল। সেখানে হাতেগোনা কিছু কর্মী উপস্থিত ছিলেন। আইন ভাঙার মতো কোনও কাজ করা হয়নি।
কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ জনকে গ্রেফতার করে বাইক আটক করা হয়েছে। আর অনুমতি ছাড়া বৈঠক করা নিয়েও নির্বাচন বিধি মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুরের অভিযোগ, “ওই দিন রাতে বোরোডাঙ্গায় এক কর্মীর বাড়িতে ঘরোয়া মিটিং হয়। মিটিং শেষে সবাই বাড়ি ফিরে যান। তৃণমূলের কয়েকজন কর্মী-সমর্থক বাইক নিয়ে সেখানে চড়াও হয় বাড়ির মালিককে ভয় দেখায়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।” বাম বিধায়কের অভিযোগ, “গোটা এলাকায় সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। নিরীহ বাসিন্দা এবং দলীয় কর্মীর বাড়িতে বাইক নিয়ে গিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। মারধরের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের দিনহাটা মহকুমার নেতা অসীম নন্দী’র দাবি, “বাম আমলে কোচবিহারের সর্বত্র বাইক বাহিনী সন্ত্রাস করত সিপিএম ও ফরওয়ার্ড ব্লক। রাতে আমাদের কর্মীরা বৈঠক সেরে একসঙ্গে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন, সেই সময় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন।” তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, অনুমতি ছাড়া বৈঠক করে ফরওয়ার্ড ব্লকই এলাকায় উত্তেজনা তৈরি করেছে।
এরই পাশাপাশি, এই দিন ভোটের প্রচারে কর্মীদের মোটর বাইক ছেড়ে সাইকেল ব্যবহার করার পরামর্শ দিলেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের কদমতলা এলাকায় এক কর্মিসভায় ওই পরামর্শ দেন। তিনি ভোট প্রচারে একাধিক বাইক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। সে কথা জানিয়ে কর্মীদের সতর্ক করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। এর পরেই তাঁর পরামর্শ, আপনারা সাইকেলে ঘুরে জনসংযোগ করুন। আজ, শুক্রবার মনোনয়ন পত্র জমা দেবেন তৃণমূলের কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী রেণুকা সিংহ। সে জন্য বৃহস্পতিবার ওই সংক্রান্ত কাজেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। দলীয় মিটিঙে পৌঁছন দেরি করে। তিনি বলেন, “মনোনয়ন জমা দিতে সম্পত্তির হিসেব সহ নানা কাগজপত্র দিতে হয়। সেই কাজেই সারাদিন ব্যস্ততায় কেটেছে।”