জমির মালিকানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও বিচারাধীন। এক পক্ষের দাবি, মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জব বন্দ্যোপাধ্যায় স্থগিতাদেশও দিয়েছেন। সেই আদেশ অনুযায়ী, যতদিন না মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, ততদিন ওই জমিতে স্থায়ী কোনও নির্মা করা যাবে না। অন্য পক্ষের দাবি, কোনও মামলা নেই। স্থগিতাদেশও নেই। এই অবস্থায়, বৃহস্পতিবার সেই জমিতেই ভক্তিনগর থানার অন্তর্গত আশিঘর ফাঁড়ির উদ্বোধন করলেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন। তবে ওই এলাকার বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব শিলিগুড়িতে থাকলেও ওই উদ্বোধনে ছিলেন না।
পুলিশের একাংশ মানছেন, যে জমিটিতে এই ফাঁড়িটির নির্মাণ হয়েছে, সেটি নিয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা বিচারাধীন। এমনকী, জমিটি কেনা-বেচা বা নির্মাণের উপরে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে। এ কথা জানেন পুলিশ কমিশনার নিজেও। তবে মামলা সমস্ত মিটে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেত্রী শিখা চট্টোপাধ্যায়। তবে কারা নির্মাণ করেছেন ফাঁড়িটি, তা নিয়ে পুলিশ ও পঞ্চায়েত একে অপরের উপরে দায় চাপিয়েছেন।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “আশিঘরে যে জায়গায় শিলিগুড়ি পুলিশের ভক্তিনগর থানার ঘর উদ্বোধন করা হয়েছে, সেখানে স্থায়ী কোনও নির্মাণ করা যাবে না বলে আমি শুনেছি। সেই মত পঞ্চায়েতের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁরা জানিয়েছে, স্থায়ী কোনও নির্মাণ করা হচ্ছে না। অস্থায়ী বন্দোবস্ত বলে আমরা রাজি হয়েছি। পঞ্চায়েতই সমস্ত ব্যবস্থা করেছে। তাতে আপত্তির কিছু দেখছি না।” যদিও ঘরটি সম্পূর্ণ স্থায়ী ও পাকা করে নির্মাণ করা হয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। তাতে সাদা রঙও করা হয়েছে।
এই ঘরটি পুলিশই নিজেদের তহবিল থেকে নির্মাণ করেছে বলে জানিয়েছেন শিখাদেবী। তাঁর দাবি, “জমিটি খাস জমি। তা দখল করে বিক্রির চেষ্টা করছিল একদল জমি মাফিয়া। ১৭ বছর ধরে জমিটি আমরা বিক্রি করতে না দিয়ে লড়াই করেছি। এখানে পুলিশ ফাঁড়ি করার ব্যপারে আমরাই আন্দোলন করেছি। তবে জমিটিতে কোনও স্থগিতাদেশ নেই বলে তিনি দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “কয়েকজন মাফিয়া মামলা করেছিল। তবে তা মিটে গিয়েছে। কোনও স্থগিতাদেশ নেই।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কমিশনারেটের অধীনে ভক্তিনগর থানা আসার আগে এটি জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের অধীনে ছিল। সেই সময়ে এই জমিটির মালিকানা নিয়ে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার ও ভক্তিনগর থানার ওসির বিরুদ্ধেও মামলা করে একতিয়াশাল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি। ওই সমিতির দাবি, তাঁরা জমিটি কেনার পরে নথিপত্র জমা দিলে সমবায় দফতর থেকে সেখানে গুদাম তৈরির জন্য কয়েক লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। সেই কাজে সহায়তা করার জন্য রাজগঞ্জের বিডিওকে নির্দেশও দেয় সমবায় দফতর। কিন্তু, ওই জমিটি সরকারি বলে দাবি করেন শিখা দেবীরা। একতিয়াশাল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির সদস্যদের একাংশ জানান, তাঁরা গোটা বিষয়টি উচ্চ আদালতে জানাবেন। সমিতির আইনজীবী জানান, ওই জমিতে কী ধরনের নির্মাণ হয়েছে সেই ব্যাপারে উচ্চ আদালতে অবহিত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy