Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিধি ভেঙে প্রচার রুখতে অভিযান চালাবে প্রশাসন

নির্বাচন বিধি ভেঙে প্রচারের অভিযোগ উঠেছে কোচবিহারে। ডান-বাম দুই শিবিরের যুযুধান সব রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেই কোচবিহার পুরসভা ও লাগোয়া এলাকার ২৭০টি জায়গায় বিদ্যুত্‌ ও টেলিফোনের খুঁটি, সরকারি জমিতে বিভিন্ন দলের ব্যানার, হোর্ডিং, নেতা-নেত্রীদের ছবি ছাড়াও পতাকা, ফেস্টুন লাগানো থেকে রাস্তার ওপর তোরণ করা হয়েছে বলে নির্বাচন বিধি দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক দলের প্রতিনিধিরা চিহ্নিত করেছেন।

কোচবিহার শহরে এ ধরনের ফ্লেক্স নিয়েই বেধেছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।

কোচবিহার শহরে এ ধরনের ফ্লেক্স নিয়েই বেধেছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৪ ০২:৪৩
Share: Save:

নির্বাচন বিধি ভেঙে প্রচারের অভিযোগ উঠেছে কোচবিহারে। ডান-বাম দুই শিবিরের যুযুধান সব রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেই কোচবিহার পুরসভা ও লাগোয়া এলাকার ২৭০টি জায়গায় বিদ্যুত্‌ ও টেলিফোনের খুঁটি, সরকারি জমিতে বিভিন্ন দলের ব্যানার, হোর্ডিং, নেতা-নেত্রীদের ছবি ছাড়াও পতাকা, ফেস্টুন লাগানো থেকে রাস্তার ওপর তোরণ করা হয়েছে বলে নির্বাচন বিধি দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রশাসনিক দলের প্রতিনিধিরা চিহ্নিত করেছেন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, শাসক দল তৃণমূল ছাড়াও বিজেপি, কংগ্রেস, ফরওয়ার্ড ব্লক ও সিপিএমের বিরুদ্ধেও এ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক বিকাশ সাহা বলেন, “কোচবিহারের বেশ কিছু এলাকায় বিভিন্ন দলের তরফে সরকারি সম্পত্তি ও জায়গায় দলীয় প্রচার সামগ্রী লাগানোর তালিকা মিলেছে। যা নির্বাচনবিধি ভঙ্গের সামিল। পুরো বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের সম্পাদক ও সভাপতিদের জানিয়ে কয়েকদিন আগেই নোটিশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। এর মধ্যে কোনও দল তাদের প্রচার সামগ্রী সরকারি জায়গা থেকে সরিয়ে না নিলে তা সরাতে বুধবার থেকে অভিযানে নামা হবে।”

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার শহরের গুঞ্জবাড়ি চৌপথী, স্টেশন মোড়, সুভাষপল্লি, কাছারি মোড় ছাড়াও কেশব রোড, সুনীতি রোড, এনএন রোড, বিশ্বসিংহ রোড ছাড়াও শহর লাগোয়া ঘুঘুমারি, গুড়িয়াহাটি, চকচকার মত বিভিন্ন এলাকায় সরকারি সম্পত্তিতে দলীয় প্রচারের তথ্য মিলেছে। অথচ নির্বাচন বিধি অনুযায়ী কোনও সরকারি সামগ্রী বা জমি কোনও দলের প্রচারের জন্য ব্যবহার করা যায় না। সব দিক খতিয়ে দেখেই বিধিভঙ্গের অভিযোগে রাজনৈতিক দলগুলিকে শনিবার নোটিশ পাঠায় মহকুমা প্রশাসন। সে সব সরিয়ে নিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয়।

যদিও মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বেশিরভাগ এলাকা থেকেই রাজনৈতিক দলগুলি প্রচার সামগ্রী সরিয়ে নেয়নি বলে জানতে পারেন প্রশাসনের কর্তারা। তার পরেই আজ বুধবার ওই ব্যাপারে অভিযানে নামার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “প্রশাসনের অভিযানে যে সব হোর্ডিং, ব্যানার, পতাকা-সহ অন্য প্রচার সামগ্রী সরানো হবে। সরকারি নিয়ম অনুয়ায়ী এ সব লাগানোর মোট খরচ হিসেব করে সেগুলি রাজনৈতিক দলগুলির লোকসভা নির্বাচনের খরচ হিসেবে দেখানো হবে।”

ফলে অস্বস্তি বেড়েছে রাজনৈতিক দলগুলির। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “আমাদের কেউ নতুন করে কোনও প্রচার সামগ্রী সরকারি জায়গায় লাগাননি। পুরানো কিছু ব্যানার, পতাকা থাকলে তা সরিয়ে নেব।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায়ের দাবি, “আমাদের গুলি নিশ্চয়ই সরানো হবে। কিন্তু তৃণমূলের বড় হোর্ডিংগুলির ক্ষেত্রেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।”

জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শ্যামল চৌধুরী অবশ্য দাবি করেছেন, শহরে বেশ কিছু হোর্ডিং থাকলেও তা জেলা বা প্রদেশ থেকে লাগানো হয়নি। ফলে চিঠি পেলেও জেলা থেকে সে সব তাঁদের পক্ষে সরানো মুশকিল বলে প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছেন। বিজেপি’র কোচবিহার জেলা সম্পাদক নিখিল দে জানিয়েছেন, দলের দু’য়েকটা বিক্ষিপ্ত পতাকা থাকলে তা সরানো হবে। তৃণমূলও দাবি করেছে, শহর ও লাগোয়া সরকারি সম্পত্তিতে লাগানো পতাকা, ব্যানার নির্বাচন বিধি চালুর আগে থেকেই ছিল। দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বক্তব্য, “নিয়ম মেনে প্রচার হবে। ওই রকম কিছু থাকলে সময় মতো তা সরানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

coochbihar flex hoarding election commission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE