Advertisement
E-Paper

বিনা কর্ষণের চাষে ভাল ফলন পেলেন চাষিরা

বিনা কর্ষণে ধান উত্‌পাদন করে সাফল্যের মুখ দেখছেন কোচবিহারের কৃষকরা। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকে পরীক্ষামূলক ভাবে ১০০ বিঘা জমিতে বিনা কর্ষণে ধান চাষ করা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকরা ১৬ থেকে ১৭ মণ ধান পেয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২৩

বিনা কর্ষণে ধান উত্‌পাদন করে সাফল্যের মুখ দেখছেন কোচবিহারের কৃষকরা।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকে পরীক্ষামূলক ভাবে ১০০ বিঘা জমিতে বিনা কর্ষণে ধান চাষ করা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকরা ১৬ থেকে ১৭ মণ ধান পেয়েছেন। আধিকারিকেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় গড়ে বিঘা প্রতি তিন মন ফলন বেশি হয়েছে। কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের কৃষি আধিকারিক রজত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিনা কর্ষণে ধান উত্‌পাদনে আমরা সফল হয়েছি। ওই পদ্ধতিতে যে কৃষকরা চাষ করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই ভাল ফসল পেয়েছেন। এক দিকে তাঁদের চাষের খরচ বেঁচে গিয়েছে। আরেক দিকে ফলন বেশি হওয়ায় আয় বেশি হবে। আমরা আশা করছি,এ বার হাজার বিঘার উপরে জমিতে বিনা কর্ষণে ধান চাষ হবে।”

কোচবিহার জেলায় সাধারণত প্রায় ২ লক্ষ ৯ হাজার হেক্টরের মতো জমিতে ধান চাষ হয়। সাধারণ ভাবে এক বিঘা জমি থেকে ১০ থেকে ১১ মণ ধান উত্‌পন্ন হয়। কয়েকজন কৃষক আবার খুঁট দিয়ে ধান বীজ রোপণ করে বিঘা প্রতি ২৪ মণ পর্যন্ত ধান পেয়েছেন বলে জানাচ্ছেন কৃষি আধিকারিকেরা। কৃষি দফতরের পরামর্শ মেনে অনেক কৃষক সময়মতো চাষে নামেন। অনেকে আবার বিনা কর্ষণেও ধান চাষ করেন। তাতেই সাফল্য পান। ঘুঘুমারির কৃষক ফজলে রহমান জানান, তিনি এ বারে চার বিঘা জমিতে বিনা কর্ষণে ধান চাষ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ২৪ মণ করে ধান পেয়েছেন। গত বছর সাধারণ পদ্ধতিতে চাষ করে বিঘা প্রতি ১৪ মন ধান পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আমার জমি উর্বর। ফসল ভাল হয়। এ বারে কৃষি দফতরের পরামর্শ মেনে কোনওরকম চাষ না করে খুঁটের সাহায্যে বীজতলা রোপণ করি। এত ধান হয়েছে দেখে আমি নিজেই হতবাক হয়ে পড়েছি।” জিরানপুরের আরেক কৃষক বিমান দেব জানান, তিনি এ বারে সাধারণ ভাবে চাষ করে বিঘা প্রতি ১৪ মণ ধান পেয়েছেন। গতবার ১২ মণ করে ধান পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, “সেচের অভাবে আমারা ফসল কম পাই। এ বারে দফতর থেকে পাম্পসেট পাই। সে জন্য আষাঢ় মাসের প্রথম সপ্তাহে চাষ শুরু করি। অন্যবার বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকার জন্য ধান চাষে নামতে দেরি হয়।” নাজিরহাট সংলগ্ন ছিটমহলের কৃষক রশিদ আলি জানান, তিনি বিঘাতে ১৪ মণ ধান পেয়েছেন। বলেন, “অন্য বার শেষ সময়ে বৃষ্টি হয়। ফলে ফসল থেকে দানা পড়ে যায়। এ বারে ওই সময়ে বৃষ্টি হয়নি। একটি দানাও নষ্ট না হওয়ায় ফলন বেশি হয়েছে।”

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকে এ বারে ৮৬ হাজার চারশ মেট্রিক টন ধান উত্‌পাদন হয়েছে। গত বছর ওই পরিমাণ ছিল ৬৪ হাজার পাঁচশ মেট্রিক টন। ২০১২ সালে তা আরও কম ছিল। কোচবিহার সদর মহকুমায় ৭১ হাজার ৩১৬ হেক্টর জমিতে এ বারে ধান চাষ হয়। প্রতি বিঘাতে ১২ থেকে ১৪ মন ধান হয়েছে বলে আধিকারিকরা জানান। গত বছর গড়ে ৯ থেকে ১০ মণের উপরে ধান হয়নি। জেলাতেও ধান উত্‌পাদন এ বার বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কোচবিহার জেলা কৃষি আধিকারিক আশিস পাত্র। তিনি বলেন, “ধানের ফলন এ বারে ভাল হয়েছে। উত্‌পাদন অনেকটা বাড়বে বলে আশা করছি।” কোচবিহার সদর মহকুমা কৃষি আধিকারিক বলরাম দাস বলেন, “এ বারে সময় মতো বৃষ্টি হয়েছে। সেটা কৃষকদের অনুকূলে গিয়েছে।”

coochbehar farmers profit
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy