Advertisement
E-Paper

বাড়ির সামনেই ঘেরাও, ইস্তফার ভাবনা অধ্যক্ষের

নিজের বাড়ির সামনে টিএমসিপি-র বিক্ষোভের মুখে পড়ে ইস্তফা দেওয়ার কথা ভাবছেন জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ ধীরাজ বসাক। তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যেরা আতঙ্কে তো রয়েছেনই, তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত দূরে থাকা আত্মীয়-স্বজনেরাও। শনিবার ধীরাজবাবু বলেন, “ভর্তির দাবিতে কলেজে মাসখানেক ধরে আন্দোলন চলছে। এ বার বাড়ির সামনে হল। পরিবারের সকলে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। পরিস্থিতি না-পাল্টালে ইস্তফা দিতে হবে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:১১

নিজের বাড়ির সামনে টিএমসিপি-র বিক্ষোভের মুখে পড়ে ইস্তফা দেওয়ার কথা ভাবছেন জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ ধীরাজ বসাক। তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যেরা আতঙ্কে তো রয়েছেনই, তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত দূরে থাকা আত্মীয়-স্বজনেরাও।

শনিবার ধীরাজবাবু বলেন, “ভর্তির দাবিতে কলেজে মাসখানেক ধরে আন্দোলন চলছে। এ বার বাড়ির সামনে হল। পরিবারের সকলে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। পরিস্থিতি না-পাল্টালে ইস্তফা দিতে হবে।” এর পরেও অবশ্য কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন প্রধান আনন্দগোপাল ঘোষ কার্যত নীরব। এমনকী বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও তিনি ফোন ধরেননি। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘেরাও-আন্দোলন বন্ধ করার বার্তা দিলেও এই ঘটনায় রাজ্য প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তা-ও এ দিন পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি।

প্রথম বর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া মাসখানেক আগে শেষ হয়ে গেলেও আরও ৪২ জনকে ভর্তি নেওয়ার দাবিতে আনন্দচন্দ্র কলেজে বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে। বহু সময়েই ওই ছাত্রছাত্রীদের পাশে টিএমসিপি নেতাদের দেখা গিয়েছে। শুক্রবার বিক্ষোভ পৌঁছে যায় অধ্যক্ষের বাড়ির সামনে। তিনি বেরিয়ে এলে তাঁকে ঘেরাও করা হয়। সেখানেও টিএমসিপি নেতাকর্মীরা হাজির ছিলেন। যদিও তাঁদের দাবি, বিক্ষোভ দেখাতে নয়, তাঁরা আন্দোলনকারীদের নিরস্ত করতে গিয়েছিলেন। টিএমসিপি-র টাউন ব্লক নেতা সন্তোষ মিশ্র আবার দাবি করেন, “বাড়ি ঘেরাও বা অধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। অধ্যক্ষের একটা সই দরকার ছিল। ‘তিনি বাড়িতে’ নেই বলা হয়। পরে তিনি বেরলে জানতে চাওয়া, কেন এতক্ষণ আমাদের দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল?”

ঘটনাচক্রে, সন্তোষবাবুর বিরুদ্ধেই অধ্যক্ষের বাড়ির সামনে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে অধ্যক্ষের সামনে আঙুল উঁচিয়ে কথা বলতেও দেখা গিয়েছে। ঘটনার নিন্দা করে দলীয় পর্যায়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিবৃতি দিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। কিন্তু কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা তিনি জানাতে পারেননি। জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি অভিজিৎ সিংহের দাবি করেন, জেলা সভাপতির নির্দেশে সাংগঠনিক স্তরে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু, সেই তদন্ত কে বা কারা করছেন তা তিনিও জানাতে পারেননি।

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, সব আসন আগেই ভর্তি হয়ে গিয়েছে। এর পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি পেলে বড় জোর ১৫ জনকে নেওয়া যেতে পারে। তার বেশি নিলে সুষ্ঠু ভাবে পড়াশোনা করানো যাবে না। বাকিদের অন্য কলেজে ভর্তি করাতে হবে। বিষয়টি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফ্যাক্সবার্তা পাঠানোর কথা ছিল তাঁর। অধ্যক্ষের অভিযোগ, “ছাত্রদের বাধায় শুক্রবার সেই ফ্যাক্সবার্তা পাঠাতে পারিনি। এ দিন পাঠানো হয়েছে।” যদিও তাতে বরফ কতটা গলেছে, তা নিয়ে সব মহলেই সন্দেহ আছে।

এসএফআই-এর জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক অঞ্জন সেনের অভিযোগ, টিএমসিপি-র দাদাগিরিতে আনন্দচন্দ্র কলেজের পঠনপাঠন লাটে উঠেছে। ছাত্র পরিষদ নেতা অনীক মালো দাসের বক্তব্য, অধ্যক্ষের বাড়ির সামনে অবস্থান করা কোনও ভাবেই মানা যায় না। কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মার প্রতিক্রিয়া, “ভাবতে পারছি না, ছাত্রেরা আঙুল তুলে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলছে!” কলেজের শিক্ষক সংসদের সম্পাদক চিন্ময়কর দাস বলেন, “ছাত্রদের কাছে এটা প্রত্যাশিত নয়।” অধ্যক্ষ পরিষদের উত্তরবঙ্গ জোনের সম্পাদক দেবকুমার মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা।”

surrounded principal thought of resignation jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy